Mohun Bagan vs East Bengal

জিতেও অখুশি মোলিনা, হেরে খুশি অস্কার, ডার্বির পর দুই মেরুতে দুই কোচ, কী বললেন ফুটবলারেরা?

কলকাতা ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়েও পুরোপুরি খুশি হতে পারেননি মোহনবাগানের কোচ হোসে মোলিনা। উল্টো কথা ইস্টবেঙ্গল কোচের মুখে। তিনি হেরেও দলের ছেলেদের লড়াইয়ে খুশি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৫ ১৯:২৮
Share:

(বাঁ দিকে) মোহনবাগানের কোচ হোসে মোলিনা। ইস্টবেঙ্গলের কোচ অস্কার ব্রুজ়‌ো (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

কলকাতা ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গলকে ১-০ গোলে হারিয়েছেন। তার পরেও পুরোপুরি খুশি হতে পারেননি মোহনবাগানের কোচ হোসে মোলিনা। উল্টো কথা ইস্টবেঙ্গল কোচের মুখে। তিনি হেরেও দলের ছেলেদের লড়াইয়ে খুশি। মোহনবাগানের ফুটবলারেরাও কোচের মতোই ১-০ ফলে খুশি হতে পারেননি।

Advertisement

ম্যাচের পর মোলিনা বলেছেন, “আমার মনে হয় ঠিক ফলই হয়েছে। তবে আমরা সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারিনি। ভাল ফল পেতে হলে গোল করতে হয়। আমরা আরও গোল করার মতো জায়গায় ছিলাম না। আমরা তিন পয়েন্ট পেয়েছি। যদি আরও গোল করতে পারতাম, তবে হয়তো আরও বেশি খুশি হতাম। আমাদের মূল লক্ষ্য তো লিগ-শিল্ড জেতা। তার আরও কাছে পৌঁছলাম।”

মোহনবাগান ফুটবলারদের সিদ্ধান্তহীনতার কারণেই তাঁরা আরও গোল করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন মোলিনা। তাঁর কথায়, “ইস্টবেঙ্গল লাল কার্ড দেখার পর থেকেই আমরা খারাপ খেলতে শুরু করি। একজন বাড়তি খেলোয়াড় থাকা সত্ত্বেও আমাদের পারফরম্যান্স খারাপ হয়েছে। কিছু কাউন্টার-অ্যাটাক এবং ভাল কিছু সুযোগ ছিল, যেখানে আমরা আরও গোল করতে পারতাম। তবে ফাইনাল থার্ডে ভাল সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। শেষ দিকে আমরা কিছুটা চাপে পড়ে যাই। কারণ ওরা বক্সে ক্রস করছিল। তবে আমাদের দুই সেন্টার-ব্যাক, ফুল-ব্যাক এবং গোলকিপার ভাল খেলেছে। ইস্টবেঙ্গল গোল করার বা ম্যাচ ড্র করার তেমন বড় সুযোগ পায়নি।”

Advertisement

আইএসএলে দশ নম্বর ডার্বি হয়ে যাওয়ার পরও প্রথম জয়ের সন্ধান পেল না ইস্টবেঙ্গল। তা সত্ত্বেও শনিবারের ম্যাচে দলের লড়াই নিয়ে খুশি ও গর্বিত তাদের কোচ অস্কার ব্রুজোঁ। তিনি বলেছেন, “আমাদের পরিকল্পনা প্রায় নিখুঁতভাবে কাজ করেছে। আমরা ওদের প্রত্যেক জায়গায় আটকেছি। সমস্ত ফাঁকা জায়গাগুলো বন্ধ করতে পেরেছি। তিন সেন্টার-ব্যাক ও তিন মিডফিল্ডার নিয়েও মাঝমাঠে খেলার নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি মোহনবাগান। বড় কোনও সুযোগও ওরা তৈরি করতে পারেনি। আবারও বলছি, আমরা সঠিক পথ ধরেই সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।”

দলের খেলোয়াড়দের প্রচেষ্টার প্রশংসা করে অস্কার বলেছেন, “যে ফল হয়েছে তা প্রত্যাশিত ছিল না। কিন্তু ছেলেদের প্রচেষ্টার প্রশংসা করতেই হবে। ওরা যথেষ্ট পরিশ্রম করেছে এবং ১০ জন হয়ে যাওয়ার পরেও আমরা সুযোগ তৈরি করেছি। আগেও বলেছি, জিতলে একসঙ্গে জিতি। হারলে একসঙ্গে হারি। কিছু ব্যক্তিগত ভুল নিয়ন্ত্রণের বাইরে। কিছুতেই এর সমাধান খুঁজে পাচ্ছি না। একই ভুল বারবার করছি।”

কোচ মোলিনার মতোই খুব একটা খুশি নন মোহনবাগানের ফুটবলাররা। সকলেই মনে করেন, আরও বড় ব্যবধানে যে জিততে পারতেন তাঁরা। তবে তিন পয়েন্টের লক্ষ্যে নেমে সফল হওয়ায় খুশি তারা।

ম্যাচের পর অস্ট্রেলীয় ফরোয়ার্ড জেমি ম্যাকলারেন বলেছেন, “ম্যাচের দু’মিনিটের মধ্যে গোল করে দলকে জেতাতে পেরে আমি খুশি। তবে আরও বেশি গোলে জিততে পারতাম আমরা। সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলে ৪-১ বা ৩-১ ফলে ম্যাচটা জিততাম। যা-ই হোক, তিন পয়েন্টই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ”।

কলকাতায় নিজেদের ঘরের মাঠ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে এই জয়টা পেলে আরও ভাল লাগত বলে জানিয়েছেন ম্যাকলারেন। বলেছেন, “কলকাতায় জিততে পারলে আরও ভাল লাগত। আগের ডার্বিতে ৭০ হাজার মানুষের সামনে গোল করেছিলাম। অথচ সেই একই ডার্বিতে এ বার দু’হাজারের বেশি লোক গ্যালারিতে ছিল না। তবে জানি, কলকাতায় থাকা সমর্থকেরা উৎসবে মেতেছেন।”

মাত্র দু’মিনিটের মাথায় গোল করেন ম্যাকলারেন, যা আইএসএল ডার্বির ইতিহাসে দ্রুততম গোল। এই গোল নিয়ে তিনি বলেছেন, “এত তাড়াতাড়ি গোল করব ভাবিনি। তবে এই গোলের জন্য শুরুটা আমরা ভাল করতে পেরেছি, যার প্রভাব পুরো ম্যাচেই পড়েছে। একসঙ্গে ক্লিন শিট ও তিন পয়েন্ট পাওয়াটা বড় ব্যাপার। আমাদের রক্ষণও খুব ভাল হয়েছে।”

দলের অধিনায়ক শুভাশিস বসু বলেছেন, “পয়েন্ট টেবলে আমরা আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলাম। ম্যাকলারেন খুব ভাল গোল করেছে। তবে আমরা আরও বেশি গোলে জিততে পারতাম। হয়তো ডার্বির একটা নতুন ইতিহাস গড়া হয়ে যেত। গোলের অনেক সুযোগ আমরা পেয়েছিলাম।”

ম্যাচের ৭৫ মিনিটের মাথায় কামিংসকে তুলে গ্রেগ স্টুয়ার্টকে নামায় মোহনবাগান। তিনি নামার পরে ফের চাঙ্গা হয়ে ওঠে দল। তবে বাগান-আক্রমণে সেই মরিয়া ভাব দেখা যায়নি। মিনিট কুড়ি মাঠে থেকে দু’বার গোলে শট নিয়েও ব্যর্থ হন স্টুয়ার্ট। ম্যাচের পর তিনি বলেন, “দল খুব ভাল খেলেছে। আমাকে বেঞ্চে বসে অনেক ক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় ঠিকই। তবে আগে জেমি, জেসনদেরও করতে হয়েছে। তিন পয়েন্ট পাওয়াটাই আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement