প্রতীকী ছবি।
কাল, বৃহস্পতিবার থেকে খুলছে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়। পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম— দুই জেলাতেই শুরু হয়েছে প্রস্তুতি।
আপাতত, অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত অফলাইন পঠনপাঠন চলবে। পঞ্চম থেকে সপ্তম শ্রেণির জন্য ‘পাড়ায় পাড়ায় শিক্ষালয়’ হবে। সরস্বতী পুজোর আগে ফের স্কুল খোলায় খুশি পড়ুয়ারা। খুশি শিক্ষকেরাও। স্কুল খোলার ঘোষণার সময় সোমবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘৪ এবং ৫ তারিখে সরস্বতী পুজোর ছুটি দেওয়া রয়েছে। ৩ তারিখ স্কুলটা খুললে ছেলেমেয়েরা সরস্বতী পুজোটা করতে পারবে।’’
মেদিনীপুর টাউন স্কুলের (বালক) প্রধান শিক্ষক বিবেকানন্দ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘স্কুলে পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ছাত্ররাও পুজোয় অংশগ্রহণ করতে পারবে। এটা আনন্দেরই।’’ কেশপুরের তোড়িয়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক উৎপল গুড়ের কথায়, ‘‘স্কুলের সরস্বতী পুজোয় ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণ না- থাকলে সেটা বেমানান হয়।’’ দুই জেলাতেই একাংশ স্কুল বিভিন্ন ফি-র সঙ্গে সরস্বতী পুজোর চাঁদা নেয় ভর্তির সময়েই। অনেক স্কুল আবার চাঁদা নেয় না। চন্দ্রকোনা জিরাট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শুভ্রকান্তি ঘোষ যেমন বলেন, ‘‘স্কুলে পুজো হবে। তবে ছাত্রছাত্রীদের থেকে চাঁদা নেওয়া হয়নি।’’ গড়বেতা কলেজের অধ্যক্ষ হরিপ্রসাদ সরকারও জানাচ্ছেন, ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতিতে সরস্বতী পুজো হবে।
‘পাড়ায় সমাধান’ এবং ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে সমস্যার আশঙ্কাও থাকছে। কারণ, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই কর্মসূচি চলে স্কুল চত্বরে। অবশ্য সর্বত্রই যে স্কুল চত্বরেই ওই কর্মসূচি চলে, এমনও নয়। মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে ‘পাড়ায় সমাধান’। এই শিবির চলবে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। আর ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির চলবে ১৫ থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি। এ দিন মেদিনীপুর শহরে দু’টি ‘পাড়ায় সমাধান’ শিবির হয়েছে। দু’টিই হয়েছে স্কুল চত্বরে। স্কুল খুলে গেলে শিবির কোথায় হবে? মেদিনীপুরের পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান সৌমেন খান বলেন, ‘‘স্কুল চত্বরের একপাশেই শিবির হতে পারে। সবদিক দেখে পদক্ষেপ করা হবে।’’ পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) চাপেশ্বর সর্দার বলেন, ‘‘অনেক স্কুলেই বড় ক্যাম্পাস রয়েছে। আশা করি, সরকারি শিবিরের ক্ষেত্রে সমস্যা হবে না।’’ ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক জয়সি দাশগুপ্তের কথায়, ‘‘দুয়ারে সরকার শিবিরের জন্য সব স্কুল নেওয়া হবে না। পঞ্চায়েত এলাকার একটি স্কুলে একদিন করে শিবির হবে। শহরেও সেই ভাবেই শিবির হবে।’’ ঝাড়গ্রাম শহরের কুমুদকুমারী ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘প্রশাসন দুয়ারে সরকার করতে চাইলে স্কুলের ভবনের একাংশ দেওয়া হবে। সমস্যা হবে না।’’
তবে সে সবের আগে এখন বাণীবন্দনার প্রস্তুতি। বিশ্বজিৎ বলছেন, ‘‘গত বছর সরস্বতী পুজোয় পড়ুয়ারা যোগ দিতে পারেনি। এ বার বিধি মেনে পড়ুয়ারা যাতে যোগ দেয়, সে ব্যাপারে স্কুলের তরফে ছাত্র ও অভিভাবকদের জানিয়ে দেওয়া হবে।’’ বেলপাহাড়ি এসসি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোমনাথ দ্বিবেদীও বলেন, ‘‘ছাত্রছাত্রীরা বিধি মেনেই পুজোয় যোগ দেবে। এটা অবশ্যই প্রাপ্তি।’’
অনেক স্কুল কর্তৃপক্ষের মতে, স্কুল খোলার সিদ্ধান্তটা আরও কিছু দিন আগে নেওয়া হলে পড়ুয়ারাও পুজোর আয়োজনে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হতে পারত। শুধু যাদের স্কুল খুলছে তারাই পুজোয় যোগ দেবে, না নিচু ক্লাসের পড়ুয়ারাও আসবে, প্রশ্ন রয়েছে তা নিয়েও। এসএফআইয়ের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক প্রসেনজিৎ মুদি বলেন, ‘‘আমাদের দাবি, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সব শ্রেণিতেই অফলাইনে পঠনপাঠন শুরু করতে হবে।’’