নন্দীগ্রামে দুই বিজেপি নেতার মাঝে দিব্যেন্দু। নিজস্ব চিত্র
কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পের উদ্বোধনে চলতি মাসে পূর্বে মেদিনীপুরে র হলদিয়ায়এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সাংসদ হিসাবে আমন্ত্রিত তৃণমূল নেতা দিব্যেন্দু অধিকারী সেই অনুষ্ঠান মঞ্চে হাজির ছিলেন।
সোমবার ফের বঙ্গ সফরে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ঘটনাচক্রে তাঁর সেই সফরের আগের রাতেই তৃণমূলের সাংসদ দিব্যেন্দুকে দেখা গেল নন্দীগ্রামের একটি অনুষ্ঠানে, বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে। কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি না হলেও দিব্যেন্দুর দলবদলের জল্পনা চলাকালীন তাঁকে বিজেপি নেতার সঙ্গে হাজির হতে দেখে প্রশ্ন উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, নন্দীগ্রামে সোনাচুড়া পঞ্চায়েতের সাউদখালি ২৬২ নম্বর বুথে ‘বিশাল ধর্মীয় বৈষ্ণব সমাবেশে’ নামে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল রবিবার। সেখানে শোভাযাত্রা, গীতা বিতরণ, কীর্তন গান-সহ নানা ধর্মীয় কর্মসূচি পালন হয়েছে। ওই অনুষ্ঠানেই রবিবার রাত ৮টার দিকে উপস্থিত হন তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু। মঞ্চে তিনি কীর্তনেও অংশগ্রহণ করেন। অনু্ষ্ঠানে প্রায় আধঘণ্টা ছিলেন দিব্যেন্দু। আর সেই সময় তাঁর পাশে ছিলেন বিজেপি’র নন্দীগ্রাম দক্ষিণ মণ্ডলের সভাপতি জয়দেব দাস, নন্দীগ্রাম বিধানসভার আহ্বায়ক বটকৃষ্ণ দাস।
দিব্যেন্দুর দাদা তথা সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী একাধিকবার নন্দীগ্রামে এসে নামসংকীর্তনে অংশ নিয়েছেন। এই ছবি চেনা। সরস্বতী পুজোর দিন তিনি নন্দীগ্রামের বৈষ্ণবদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান দিয়েছিলেন। তার এক সপ্তাহের মধ্যেই এই ধর্মীয় সমাবেশ এবং সেখানে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বর সঙ্গে দিব্যেন্দুর উপস্থিতি, অন্য জল্পনাকেও উস্কে দিচ্ছে।
দিব্যেন্দু নিজে দলবদলের কথা বারবার উড়িয়ে দিলেও, রাজনীতিতে তাঁর তৃণমূল ছাড়ার গুজব একবারে মুছে যায়নি। রবিবার বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করে নেওয়া প্রসঙ্গে দিব্যেন্দু বলেন, ‘‘স্থানীয়েরা আমায় আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। তাই আমি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। আমি কোনও বিজেপি নেতাকে দেখিনি। কোনও রাজনৈতিক মঞ্চও কারও সঙ্গে ভাগ করিনি। আর কোনও রাজনৈতিক বক্তৃতাও করিনি।’’
বিজেপি আবার দাবি করেছে, এর পিছনে কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই। নিছক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে স্থানীয় সাংসদ হিসাবে দিব্যেন্দু অধিকারীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। বিজেপি’র নন্দীগ্রাম দক্ষিণ মণ্ডলের সভাপতি জয়দেব দাস বলেন, ‘স্থানীয় সাংসদ হিসাবে দিব্যেন্দু অধিকারীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তাতে সাড়া দিয়ে তিনি অনুষ্ঠানে এসেছেন।’’
উল্লেখ্য, এর আগে এগরা মহকুমায় একটি অনুষ্ঠানে তৃণমূল বিধায়ক সমরেশ দাস এবং বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে একই মঞ্চে দেখা গিয়েছিল। সেই সময় তৃণমূলের জেলা সভাপতি ছিলেন শুভেন্দু এবং দিব্যেন্দুর বাবা শিশির অধিকারী। জেলা নেতৃত্ব সে সময় সমরেশকে কারণ দর্শানোর চিঠি দিয়েছিলেন।
এবারও কি তেমন কোনও পদক্ষেপ করা হবে?
তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ‘‘সাংসদের বিষয়টি রাজ্য নেতৃত্ব থেকে জানানো হয়েছে। রাজ্য নেতৃত্ব থেকে যা নির্দেশ আসবে, তা কার্যকর করা হবে।’’