গ্রামের আধ কিলোমিটার মোরাম রাস্তার নখদন্ত বেরিয়ে গিয়েছে। সারাই হয়নি বহুকাল। নিকাশি বালাই নেই। তাই বর্ষা এলেই রাস্তা জলে ডুবে যাওয়াই ভবিতব্য। অভিযোগের এখানেই শেষ নয়। পাড়ার একমাত্র নলকূপও অকেজো। জল ওঠে না।
পঞ্চায়েতের কাছে এই অভিযোগের এই তালিকা নিয়ে গ্রামবাসীরা একাধিকবার দরবার করেছেন বলে দাবি। কাজ হয়নি। সমস্যা সমাধান না হলে ভোট বয়কটের হুঁশিয়ারি দিলেন শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের খারুই-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বাঁপুর গ্রামের খটিলাপাড়ার বাসিন্দারা। এলাকায় ৩০টি বেশি পরিবারের বাস। ভোটার রয়েছেন প্রায় ৭০ জন। তমলুক বিধানসভার ওই এলাকায় ভোট বয়কটের ডাক দিয়ে পড়েছে পোস্টারও।
খটিলাপাড়ার মোরাম রাস্তার জীর্ণ দশা। পাড়ায় থাকা একমাত্র নলকূপ দিয়ে জল প্রায় ওঠেই না। স্থানীয় বাসিন্দা পুতুল সামন্ত, যুবক সুমিত সামন্ত জানান, বাঁশদা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র থেকে আমাদের পাড়া হয়ে বাঁপুর তন্তুবায় পাড়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র পর্যন্ত আধ কিলোমিটার দীর্ঘ এই মোরাম রাস্তা প্রায় ১৫ বছর আগে তৈরি হয়েছিল। রামচন্দ্রপুর বাজার ও মেচেদা বাজারগামী রাস্তার সঙ্গে যুক্ত এই পথ দিয়ে এলাকার প্রায় ৫- ৬ টি গ্রামের বাসিন্দারা প্রতিদিন যাতায়াত করে। বছর তিনেক আগে একবার রাস্তা সংস্কার হয়। তারপর থেকেই আর রাস্তা মেরামতি হয়নি। পাড়ার ভিতরের ইটের রাস্তাও বেহাল।
পুতুলদেবী, সুমিতদের অভিযোগ, ‘‘নিকাশি ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তা জলে ডুবে যায়। ফলে বর্ষাকালে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। আর পাঁচ বছর আগে বসানো একমাত্র নলকূপটি দিয়ে জল ওঠে না বললেই চলে। ফলে পানীয় জলের সমস্যাও রয়েছে।’’ ওই পাড়ারই বাসিন্দা প্রহ্লাদ সামন্ত, কৌশিক সামন্ত, বলরাম সামন্তরা বলেন, ‘‘বেহাল মোরাম রাস্তা পাকা করা, নিকাশি নালা তৈরি ও নতুন নলকূপ বসানোর দাবি জানিয়ে আমরা পঞ্চায়েতে আগেই কয়েকবার মৌখিক ভাবে দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি।’’ গত ১১ এপ্রিল গ্রাম পঞ্চায়েত ও ব্লক প্রশাসনের কাছে স্থানীয় বাসিন্দাদের সাক্ষর-সহ দাবি সংবলিত স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।’’
এলাকার সিপিএম পঞ্চায়েত সদস্য উত্তম বাড়ী বলেন, ‘‘গ্রামের ওই এলাকার রাস্তাঘাট বেহাল। নিকাশি ও পানীয় জলেরও সমস্যা রয়েছে। তাই এলাকার বাসিন্দাদের দাবিগুলি সঙ্গত।’’ উত্তমবাবু বলেন, ‘‘খারুই-১ গ্রাম পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল। উন্নয়নের ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্ব চলছে। ভোট বয়কট তো কখনওই কাম্য নয়। আমি স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছি।’’ যদিও খারুই-১ পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান শেখ সেরাজুল বলেন, ‘‘এখানে ৩৫ বছর ধরে পঞ্চায়েতে ক্ষমতায় ছিল বামফ্রন্ট। আমরা মাত্র আড়াই বছর ক্ষমতায় এসেছি। দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতায় থাকা সত্বেও কেন ওই এলাকায় এ সব কাজ হল না তা বামেদের জানাতে হবে।’’ পঞ্চায়েত প্রধানের অভিযোগ, ‘‘স্থানীয় সিপিএম পঞ্চায়েত সদস্য গ্রাম সংসদ সভার মাধ্যমে স্কিম জমা না দেওয়ার ওই সব কাজ করা যায়নি।’’
শেখ সেরাজুল বলেন, ‘‘কয়েকদিন আগে স্থানীয় বাসিন্দারা আমার কাছে এসে তাঁদের বিভিন্ন কাজের দাবি জানাতে এসেছিল। সেই সময় তাঁরা ভোট বয়কট করার জানিয়েছিল। উন্নয়নের জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছি। ওরা যাতে ভোট বয়কট না করে তাও বোঝানো হবে।’’