কার কুপন নেওয়ার লাইন। মেদিনীপুর পুরসভায়। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
মঙ্গলবার দিনভর প্রবল দুর্যোগেও ঝাড়গ্রাম জেলায় সাড়ে ২৪ হাজার মানুষকে করোনার টিকা দিল ঝাড়গ্রাম জেলা স্বাস্থ্য দফতর। এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ‘মেগা ভ্যাকসিনেশন ডে’ উপলক্ষে একদিনে ঝাড়গ্রাম জেলায় ৩১,৫১২ জনকে করোনার টিকা দেওয়া হয়েছিল।
সোমবার থেকে শুরু হয়েছিল নিম্নচাপের বৃষ্টি। মঙ্গলবারও দিনভর বৃষ্টি হয়। বিপর্যস্ত হয়ে যায় ঝাড়গ্রাম জেলার জনজীবন। তবে টিকা দান কর্মসূচি বন্ধ রাখা হয়নি। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, দুর্যোগের জন্য অনেকেই ভেবেছিলেন এদিন হয়ত প্রতিষেধক দান কর্মসূচি স্থগিত রাখা হবে। কিন্তু আশা কর্মী, স্বাস্থ্য কর্মী-সহ সংশ্লিষ্ট মহলের মাধ্যমে প্রতিটি এলাকায় জানিয়ে দেওয়া হয় টিকা দান স্বাভাবিক ভাবেই চলবে। সকালের দিকে দুর্যোগের কারণে লোকজন কম এলেও বেলায় ছাতা মাথায়, বর্ষাতি পরে অনেকেই টিকা নিতে আসেন।
দিনের শেষে জেলার ৪৯টি কেন্দ্রে প্রতিষেধক প্রাপ্তদের তালিকা যোগ করে দেখা যায়, প্রবল দুর্যোগের মধ্যেও প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ় মিলিয়ে মঙ্গলবার ২৪,৫২৭ জনকে প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কোভিশিল্ডের প্রথম ডোজ় দেওয়া হয়েছে ১৮,৯৯৪ জনকে এবং দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়া হয়েছে ১,৯৭৯ জনকে। আর ৩,৫১৩ জনকে কো-ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ় ও ৪১ জনকে দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়া হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, মঙ্গলবার জেলার ৮টি ব্লকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে সাঁকরাইল ব্লকে ৫,৩০৪ জনকে। এছাড়া বেলপাহাড়ি ব্লকে ৩,২০৬, লালগড় ব্লকে, ২,৩১৮, গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকে ২,৪৪৯, জামবনি ব্লকে ৩,৫৯৫, ঝাড়গ্রাম ব্লকে ২,৬৫২ ও নয়াগ্রাম ব্লকে ৩,০৫৯ জনকে প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে। গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকে প্রতিষেধক নিয়েছেন ৭৭৪ জন। ঝাড়গ্রাম শহরে ১,১৭০ জনকে প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, এই তথ্য পেয়ে খুবই খুশি হয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য ভবন।
ঝাড়গ্রাম জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা বলেন, ‘‘এক সময়ে প্রতিষেধক নিতে অনেকেরই অনীহা ছিল। কিন্তু মানুষের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে। তাই দুর্যোগের দিনেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় লোকজন প্রতিষেধক নিতে এসেছিলেন। প্রবল দুর্যোগের মধ্যে এত লোকজন প্রতিষেধক নিতে আসবেন সেটা আমরা ভাবতে পারিনি।’’
ঝাড়গ্রাম জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় ৯,১১,৬৫৪ জনকে প্রতিষেধক দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। ১৬ জানুয়ারি থেকে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪,৬৩, ৯০৭ জনকে প্রথম ডোজ় ও ১,৩৪,৪৮৪ জনকে দ্বিতীয় ডোজ় দেওয়া হয়েছে।