midnapore

Marine Drive: সূচনার আগে ফাটল মেরিন ড্রাইভে

সামনেই মুখ্যমন্ত্রীর পূর্ব মেদিনীপুরে প্রশাসনিক সফর। তার আগে দিঘা থেকে কাঁথি পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রামনগর শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০২২ ০৬:৪৫
Share:

ফাটল মেরিন ড্রাইভে। নিজস্ব চিত্র।

আমপান কিংবা ইয়াসে ক্ষতিগ্রস্ত সমুদ্র বাঁধ নির্মাণের কাজ শেষ হয়নি। স্থানীয়দের সেই স্থায়ী বাঁধের দাবি পূরণ হওয়ার আগেই তৈরি হচ্ছিল সৈকত সরণি ধরে দিঘা থেকে কাঁথি যাওয়ার মেরিন ড্রাইভ। কিন্তু গুরুপূর্ণিমার কটালের জলোচ্ছ্বাসে দফারফা মেরিন ড্রাইভের। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা তাজপুর থেকে শঙ্করপুর। সামনেই মুখ্যমন্ত্রীর পূর্ব মেদিনীপুরে প্রশাসনিক সফর। তার আগে দিঘা থেকে কাঁথি পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু জলোচ্ছ্বাসের দাপটে নির্মীয়মাণ সেই মেরিন ড্রাইভের যা অবস্থা তাতে মুখ্যমন্ত্রী আসার আগে কতটা মেরামত করা যাবে তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

Advertisement

পাকাপাকিভাবে সমুদ্র বাঁধ নির্মাণের আগে কেন তড়িঘড়ি মেরিন ড্রাইভের কাজ শেষ করা হচ্ছে তা নিয়ে সরব হয়েছেন উপকূল এলাকার বাসিন্দারা। মেরিন ড্রাইভ নির্মাণ পদ্ধতি এবং কাজের গুণগত মান নিয়ে ক্ষুব্ধ বিরোধীরাও। কাঁথির শৌলা থেকে দিঘা পর্যন্ত যাতে সৈকত সরণি ধরে পৌঁছে যেতে পারেন পর্যটকেরা সে ২৯ কিলোমিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভে পাকা সড়ক তৈরির কাজ চলছে। একই সঙ্গে মেরিন ড্রাইভের সংযোগকারী তিনটি সেতু নির্মাণের কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছে। তবে শঙ্করপুর থেকে তাজপুর পর্যন্ত যে অংশ দিয়ে মেরিন ড্রাইভ হওয়ার কথা তা আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। গত বছর ইয়াসে তার সবটাই ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। কার্যত সমুদ্র বাঁধ না থাকায় ওই ক্ষতি হয়। এর পর দীর্ঘ তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বাঁধ তৈরির দাবি জানিয়েছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। সেইমত কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য। কিন্তু সেই কাজ এখনও শেষ হয়নি। তার আগেই সমুদ্র ও লোকালয়—দু’দিক দিয়ে সামান্য উঁচু কংক্রিটের দেওয়াল তুলে মাঝখানে পাথর দিয়ে মেরিন ড্রাইভ নির্মাণের কাজ চলছে। বুধবার পূর্ণিমার কটালে জল উঠে এসেছিল মেরিন ড্রাইভে। যার ফলে কয়েকটা জায়গায় রাস্তা বসে যায়। চাঁদপুরের কাছে মেরিন ড্রাইভের একেবারে পাশেই থাকা বাসিন্দারা জানান, সামান্য কটালে এই অবস্থা। এখনও বড় কোনও নিম্নচাপ কিংবা ষাড়াষাড়ির কটাল আসেনি। তখন রাস্তার কী গতি হবে বুঝতেই পারছেন!

সমুদ্রের দিকে যে কংক্রিটের দেওয়াল তৈরি করা হয়েছিল তার একাধিক জায়গায় ফাটল দেখা গিয়েছে। কোথাও কোথাও আবার লোহার খাঁচা বেরিয়ে এসেছে সামনে। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী জেলা সফরে আসার কথা। যদিও সেই সফরসূচি চূড়ান্ত হয়নি বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর। তার আগে গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা। এলাকার বাসিন্দা তথা বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য স্বদেশ নায়ক বলেন, ‘‘যে অংশে মেরিন ড্রাইভ হচ্ছে সেখানে আরও কিছুটা এগিয়ে ঢাল রেখে বাঁধ তৈরি করা দরকার। তাতে মেরিন ড্রাইভ ঠিক থাকত। এক্ষেত্রে শুধু নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে মেরিন ড্রাইভ তৈরি করা হচ্ছে।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য আশিস প্রামাণিক বলেন, ‘‘ঠিকাদারদের পাওনা দেওয়া হচ্ছে না। তারা কী ভাবে কাজ করবে! ফলে নমো নমো করে মেরিন ড্রাইভ তৈরি হচ্ছে। আখেরে জনগণের টাকা জলে যাচ্ছে।’’

Advertisement

দিঘা থেকে কাঁথির শৌলা পর্যন্ত দীর্ঘ ২৯ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভের তাজপুর থেকে শঙ্করপুর পর্যন্ত কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণ এবং মেরিন ড্রাইভ তৈরি দুটো কাজই করছে সেচ দফতর। বৃহস্পতিবার মেরিন ড্রাইভের ক্ষয়ক্ষতি দেখতে সেচ দফতরের এক বিশেষ প্রতিনিধি দল গিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরের আগে যাতে মেরিন ড্রাইভের উদ্বোধন হয় এবং তিনি এই রাস্তা ধরে দিঘা পর্যন্ত যেতে পারেন তার জন্য বড় পাথর ফেলে মেরিন ড্রাইভ তৈরি করা হচ্ছে। পূর্ণিমার কটালের জলোচ্ছ্বাসে মেরিন ড্রাইভের পাশের বড় বড় বোল্ডারগুলি কিছুটা বসে গিয়েছে বলে সেচ দফতর সূত্রে খবর। সেচ দফতরের একজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার (কাঁথি মহকুমা) শুভাশিস বেরার দাবি, ‘‘মেরিন ড্রাইভের রাস্তার দু’দিকের কাঠামো ঠিক রয়েছে। জলোচ্ছ্বাসের ফলে কিছুটা জল উপচে মেরিন ড্রাইভের উপরে গড়িয়ে পড়েছে। তবে কোনও ক্ষতি হয়নি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement