WB Municipal Election

WB municipal election 2022: ঘর হারিয়েও ভোটযুদ্ধে রিকশাচালকের স্ত্রী

কপালকুণ্ডলা এলাকায় এক চিলতে মাটির বাড়ি। উপরে ত্রিপলের ছাউনি। মাথা গোঁজার শেষ সম্বলটুকু ভেঙে পড়েছে বছর দুয়েক আগে ২০২০ সালের আমপানে।

Advertisement

কেশব মান্না

কাঁথি শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৮:২৩
Share:

স্বামীর সঙ্গে মিন্নাহার বিবি। নিজস্ব চিত্র।

আমপান কেড়ে নিয়েছে মাথা গোঁজার ঠাঁই। স্বামী দিনরাত ভ্যানরিকশা নিয়ে ঘুরে বেড়ান শহরের যত্রতত্র। কখনও মেলা-পার্বণে রঙিন বেলুন কাঁধে বেরিয়ে পড়েন বিক্রি করতে। জীবন সংগ্রামের এমনই এক যোদ্ধা এবার পুরভোটের ময়দানে লড়াইয়ে নেমেছেন। কাঁথি শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মিন্নাহার বিবিকে এবার পুরভোটে তাদের প্রার্থী করেছে সিপিএম।

Advertisement

কপালকুণ্ডলা এলাকায় এক চিলতে মাটির বাড়ি। উপরে ত্রিপলের ছাউনি। মাথা গোঁজার শেষ সম্বলটুকু ভেঙে পড়েছে বছর দুয়েক আগে ২০২০ সালের আমপানে। ভাঙাচোরা ছাউনিতেই কোনওরকমে দিন গুজরান করে চলেছেন দম্পতি। শহরের অলিগলি ঘুরে ভ্যানরিকশা চালান মিন্নাহারের স্বামী শেখ শামসুন্নাহার। সারাদিন প্যাডেলে পা চালিয়ে দিনের শেষে বড়জোর ১০০ থেকে ১৫০ টাকা আয়। তা দিয়ে সংসারের চাকা চলে না। তাই সন্ধে নামলে রং-বেরঙের বেলুনের বাঁশের খাঁচা কাঁধে বাজারে-মেলায় ঘুরে বেড়ান শামসুন্নাহার। আমপানে অনেকেরই বাড়ি ভেঙেছিল। পাড়ার শ’চারেক দুঃস্থ পরিবারের লোকেদের নিয়ে ত্রাণ পাওয়ার জন্য মহকুমা শাসকের অফিসে গিয়েছিলেন। সেবার অনেকেরই ত্রাণ জুটেছিল। তবে মিন্নেহার ও শামসুন্নাহার ত্রা‌ণ পাননি। কেন পাননি তার উত্তর আজও জানা নেই তাঁদের। গলায় আক্ষেপের সুর নিয়েই পুরভোটের মনোনয়ন তুলতে যাওয়ার আগে শামসুন্নাহার বলেন, ‘‘আমরা পাইনি তো কী হয়েছে! যারা পেয়েছে তারাও তো আমারই মতো। কী আর করা যাবে।’’

দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারীদের তালিকায় নাম থেকেও আজ পর্যন্ত জোটেনি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার বাড়ি। অভাবকে সঙ্গী করেই চলছে স্বামী-স্ত্রীর প্রতিদিনের লড়াই। তারপরেও ভোটের ময়দানে কেন?

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দা তথা সিপিএম নেতা শেখ তেহরান বলেন, ‘‘ওঁদের দুজনকে অনেকেই বলেছিল তৃণমূল করলে পাকা বাড়ি জুটবে। তারপরেও শাসকদলের কাছে মাথা নত করেনি। যে ভাবে রথী-মহারথীরা নিজের স্বার্থের জন্য শাসকের কাছে বিক্রি হয়ে যায় এরা সেখানে ব্যতিক্রম। তাই দল ওই মহিলাকে পুরভোটে প্রার্থী করায় আমরা গর্বিত।’’

মিন্নেহার যে ওয়ার্ডের বাসিন্দা সেই এলাকায় মূলত সংখ্যালঘু অধ্যুষিত পরিবারের বাস। আগে ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন জাভেদ আখতার। বছরখানেক আগে তৃণমূল ছেড়ে তিনি যোগ দেন বিজেপিতে। এবার মিন্নাহারের মূল লড়াই তৃণমূলের সঞ্চিতা জানা’র সঙ্গে। জীবনযুদ্ধে লড়াই চালিয়ে গেলেও পুরভোটের ময়দানে কতটা সফল হবেন মিন্নাহার তারই অপেক্ষায় রয়েছেন শামসুন্নাহার। অপেক্ষায় কাঁথি শহরের মানুষও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement