১৮ জন অভিযুক্ত জেলবন্দির মধ্যে অনুজ ও রথীন অন্তবর্তী জামিনে মুক্ত আছেন
নিজের ভাঙা বাড়িটার সামনে থমকে দাঁড়ালেন অনুজ পাণ্ডে। মাঝে কেটে গিয়েছে দশ বছর। নেতাই কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সিপিএম নেতাকে দেখে ধরমপুর গ্রামের লোকজন ততক্ষণে ভিড় জমিয়েছেন।
গাড়ি থেকে থেকে নেমে নিজের পৈতৃক মাটির বাড়ির দিকে গেলেন অনুজ। পথে সেই সাদা দোতলা ভাঙা বাড়ির দিকে তাকিয়ে কিছুক্ষণের জন্য দাঁড়িয়ে পড়লেন। সিপিএমের এক সময়ের দাপুটে নেতা। কিন্তু জেলবন্দি অনুজের সঙ্গে পুলিশ নেই কেন! একাই তো এসেছেন! তাহলে কি অনুজ ছাড়া পেয়ে গেলেন! এলাকায় শুরু হল গুঞ্জন।
বৃহস্পতিবার লালগড়ের ধরমপুর গ্রামে পুরনো বাড়িতে গিয়েছিলেন অনুজ পাণ্ডে। পরিজনদের সঙ্গে দেখা করেন। দুপুরে সেখানেই খাওয়াদাওয়া সারেন। শুক্রবার সন্ধ্যাতেও ফের ধরমপুরে গিয়েছিলেন অনুজ। তবে দু’দিনই সেখানে রাতে থাকেননি। মেদিনীপুরের ভাড়া বাড়িতে স্ত্রী-মেয়েদের কাছেই রয়েছেন নেতাই কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত। শুক্রবার হরিনা গ্রামে মামাবাড়িতেও দেখা করতে গিয়েছিলেন। অনুজের মামা বিনয় পাণ্ডে বলেন, ‘‘অনুজ এসে দুপুরে ভাত খেয়ে গিয়েছে। শুক্রবারও এসেছিল। ওকে দেখতে লোকজন এসেছিল। এখনও মানুষ ওকে ভালবাসে।’’
অনুজের আইনজীবী রঘুনাথ ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, অসুস্থ মা কনকলতাদেবীর চিকিৎসার জন্য আদালতে অর্ন্তবর্তী জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন অনুজ। মেদিনীপুরের বিশেষ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালত স্বল্পদিনের জন্য অনুজের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছে। শুধু অনুজ নন, নেতাই কাণ্ডের আর এক অভিযুক্ত রথীন দণ্ডপাটকেও স্বল্পদিনের জন্য জামিনে বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত। রথীন জামিন পেয়েছেন নেতাই গ্রামের বাড়িটি মেরামত করাবেন বলে। ৪ থেকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত দু’জনের জামিন মঞ্জুর হয়েছে।
অনুজের আইনজীবী বলেন, ‘‘আমার মক্কেল মায়ের চিকিৎসার প্রয়োজনে গ্রামের বাড়িতে ঘুরে এসেছেন। পরিজনদের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়েছে।’’ সিপিএমের ঝাড়গ্রাম জেলা সম্পাদক পুলিনবিহারী বাস্কের বক্তব্য, ‘‘অনুজ মায়ের চিকিৎসার জন্য একান্তই পারিবারিক কারণে কয়েকদিনের জন্য অন্তর্বর্তী জামিন পেয়েছেন। উনি যেহেতু বিচারাধীন বন্দি তাই দলের কেউ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।’’