নির্দল প্রার্থীর ফ্লেক্সে বিজেপি, তৃণমূল ও সিপিএম নেতাদের নাম। নারায়ণগড়ে। —নিজস্ব চিত্র।
পশ্চিম মেদিনীপুরের একটি গ্রাম সংসদ। বাম পেরিয়ে তৃণমূল- সেখানে দেড় দশক ধরে জিতছে এসইউসি। এবার ভোটে এসইউসিকে হারাতে তাই জোট বেঁধেছে রাম-বাম। প্রার্থী দিলেও তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা তাতে জুটেছেন। তৃণমূল, বিজেপি আর সিপিএমের এমন অভিনব সমীকরণ দেখা যাচ্ছে নারায়ণগড়ের কুশবসান পঞ্চায়েতের ডাঙ্গরপাড়া সংসদে। স্থানীয় দাউদপুরের বাসিন্দা নিরুপমা গায়েন এই আসনে 'জনগণ' মনোনীত নির্দল প্রার্থী। প্রতীক মই। সেই মইয়ে চেপেই এসইউসিকে হারাতে মরিয়া বাম-বিজেপি। কেউই এখানে প্রতীকে প্রার্থী দেয়নি। সমর্থন করছে নির্দলকে।
মহিলা সংরক্ষিত এই আসনে ঘাসফুলের প্রতীকে প্রার্থী আছেন বটে। কিন্তু সেই শ্রীমতী দাস সিপিএম পরিবারের সদস্য হওয়ায় প্রশ্নও রয়েছে। তাঁর হয়ে প্রচারও হচ্ছে না। শ্রীমতী মানছেন, "দলের কেউ এখনও আসেননি। এখানে জেতাটা খুব শক্ত।" নির্দল নিরুপমা অবশ্য প্রত্যয়ী। বলছেন, "বাড়ি বাড়ি প্রচারে সাড়া পাচ্ছি। আশা করছি জিতব।" আত্মবিশ্বাসী এসইউসি-ও। সদ্য বিদায়ী পঞ্চায়েত সদস্য অহীন্দ্রনাথ পাত্রের দাবি, "আমাদের লড়াই দুর্নীতির বিরুদ্ধে। তাই এই অশুভ জোট।" এসইউসি-র প্রার্থী জ্যোৎস্না মণ্ডল জুড়ছেন, "জনগণ আমাদেরই জেতাবে।"
ডাঙ্গরপাড়া সংসদে ১৯৭৮, ১৯৯৩ ও পরে ২০০৮ সালে থেকে টানা এসইউসি জিতছে। এসইউসি নেতৃত্বের যুক্তি, তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের থেকে তাঁদের সদস্য অনেক বেশি কাজ করেছেন। দুর্নীতিহীন কাজ হয়েছে। প্রশাসন অসহযোগিতা করেও কাজ বন্ধ করতে পারেনি। এ বার অবশ্য এসইউসি-কে হারাতে স্থানীয় ভাবে এককাট্টা বাকি সব পক্ষ। নির্দল প্রার্থীর সমর্থনে এলাকায় ফ্লেক্স বাঁধা হয়েছে। সেখানে প্রচারে তিনটি নাম- বিজেপি নেতা দীপককুমার মণ্ডল, তৃণমূল নেতা সূর্যকান্ত দিন্দা ও সিপিএমের অনীল মণ্ডল।
একক শক্তিতে এসইউসিকে হারাতে পারবেন না বলেই কি নির্দলে আস্থা?সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য ও নারায়ণগড় ব্লক নির্বাচনী কমিটির কনভেনার মদন বসু মানছেন, "কিছু কিছু বুথে একা পারব না। তাই নির্দলকে সমর্থন।" বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক গৌরীশঙ্কর অধিকারীর আবার দাবি, "তৃণমূলের ধমকে মনোনয়ন দিতে পারেনি আমাদের প্রার্থী। না হলে আমরা একক ভাবেই হারাতে পারতাম।" জোট তত্ত্ব উড়িয়ে তৃণমূলের সভাপতি তরুণ পণ্ডিত বলেন, "কোনও জোট হয়নি। আমাদের নিজস্ব প্রার্থী আছে ওখানে।" যদিও এসইউসির জেলা কমিটির সদস্য শ্যামপদ জানা বলছেন, "মানুষ এই জোটকে ধিক্কার জানাচ্ছেন। তাই তৃণমূল আলাদা করে প্রার্থী দিয়েছে।"