চিনে ফের হু হু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। সতর্ক দেশ ও রাজ্য। কতটা প্রস্তুত জেলা। সুলুকসন্ধানে আনন্দবাজার
COVID19

বুস্টারে অনীহা, পরীক্ষাকেন্দ্রও কম

প্রতিষেধকে অনীহার পাশাপাশি রয়েছে পরীক্ষাকেন্দ্রের অপ্রতুলতা। একে একে করোনা পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিও বন্ধ হয়ে গিয়েছে দুই জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে।

Advertisement

রঞ্জন পাল, বরুণ দে

ঝাড়গ্রাম ও মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ ০৯:১৮
Share:

মেদিনীপুর মেডিক্যালে করোনা মোকাবিলার পরিকাঠামো খতিয়ে দেখা হল মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

বুস্টার ডোজ়ে আগ্রহ নেই। করোনা পরীক্ষাকেন্দ্রও কম। পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম— দুই জেলারই সামগ্রিক ছবিটা এমনই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনায় এখনই চিনের মতো পরিস্থিতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই ভারতে। তবু প্রতিষেধকে অনীহা ও পরীক্ষাকেন্দ্রের অপ্রতুলতায় কাটছে না আশঙ্কা।

Advertisement

ঝাড়গ্রাম জেলায় ২১ শতাংশ মানুষ বুস্টার ডোজ় নিয়েছেন। আর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় বুস্টার ডোজ় নিয়েছেন ২২ শতাংশ মানুষ। পশ্চিম জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গি বলেন, ‘‘প্রিকশনারি ডোজ় নিতে নানাভাবেই সচেতন করা হচ্ছে। কাদের এই ডোজ় বাকি রয়েছে, তা খুঁজে বার করার কাজও চলছে।’’ এত অনীহা কেন? মেদিনীপুরের এক জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের মতে, ‘‘বেশিরভাগেরই ভয় কেটে গিয়েছে। তাঁরা আত্মবিশ্বাসী হয়ে ভাবছেন, কিছু হবে না। কিন্তু এটা বুঝছেন না যে, প্রিকশনারি ডোজ় নিলে সঙ্কটজনক হওয়া থেকে অনেকটাই সুরক্ষিত থাকা যাবে। এই ডোজ় নিলে ক্ষতি তো নেই, বরং সুফল পাওয়া যাবে একাধিকভাবে।’’

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ১৮ বছর ঊর্ধ্ব জনসংখ্যা ৩৮,২৪,৮৬১। এর মধ্যে এখনও পর্যন্ত করোনা প্রতিষেধকের প্রথম ডোজ় নিয়েছেন ৯১ শতাংশ। দ্বিতীয় ডোজ় নিয়েছেন ৮৮ শতাংশ। ঝাড়গ্রাম জেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯,৯২,৩৯৮।

Advertisement

তারমধ্যে প্রথম ডোজ় নিয়েছেন ৯৩ শতাংশ, দ্বিতীয় ডোজ় নিয়েছেন ৮৩ শতাংশ। পর্যালোচনায় দেখা গিয়েছে, প্রথম ডোজ় যাঁরা নিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে এখনও দুই জেলার প্রায় ৪ শতাংশ মানুষ দ্বিতীয় ডোজ় নেননি। যদিও প্রথম সারির করোনা- যোদ্ধা ও ষাটোর্ধ্বদের বিনামূল্যে বুস্টার ডোজ় দিচ্ছে সরকার। এর কম বয়সিদের ক্ষেত্রে বেসরকারি কেন্দ্র থেকে বুস্টার ডোজ় টাকা দিয়ে নিতে হচ্ছে। কিন্তু ঝাড়গ্রাম জেলায় বেসরকারি ভাবে কোথাও প্রতিষেধক পাওয়া যায় না। সে ক্ষেত্রে বেসরকারি ভাবে নেওয়ার ক্ষেত্রে ভিন্ রাজ্যে ছুটতে হয়। দেখা যাচ্ছে, দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পরে ন’মাস কেটে গেলেও অনেকেই বুস্টার ডোজ নেওয়ার ক্ষেত্রে অনীহা দেখাচ্ছেন।

ঝাড়গ্রাম জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভুবনচন্দ্র হাঁসদা বলেন, ‘‘এবার হয়তো বুস্টার ডোজ় নেওয়ার হিড়িক পড়তে পারে।’’ এখন আবার পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় আবার এখন পর্যাপ্ত টিকাও মজুত নেই। কিছু কোভ্যাক্সিন রয়েছে। কোভিশিল্ড একেবারেই নেই। তবে ঝাড়গ্রাম জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দাবি, ‘‘প্রতিষেধক মজুত রয়েছে।’’

প্রতিষেধকে অনীহার পাশাপাশি রয়েছে পরীক্ষাকেন্দ্রের অপ্রতুলতা। একে একে করোনা পরীক্ষা কেন্দ্রগুলিও বন্ধ হয়ে গিয়েছে দুই জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এখন শুধুমাত্র নমুনা সংগ্রহ হয়। দুই জেলায় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ছাড়াও আর কোথাও করোনো পরীক্ষা হয় না এখন। তবে সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী দুই জেলার ‘পজিটিভ’ রোগীদের করোনার ধরন জানার জন্য ‘জিনম সিকোয়েন্স’ পরীক্ষা হচ্ছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে। এ জন্য ঝাড়গ্রাম জেলার পজ়িটিভ রোগীদের ‘জিনম সিকোয়েন্স’ পরীক্ষা হবে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে।

ঝাড়গ্রাম জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘জেলায় কম সংখ্যায় হলেও নিয়মিত করোনার পরীক্ষা হচ্ছে। তবে পজ়িটিভ একেবারেই নেই। তাছাড়া সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ‘জিনম সিকোয়েন্স’ জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে পাঠাতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement