প্রতীকী ছবি
সেঞ্চুরির কোটা ছুঁয়েছিল গত মে মাসে। ৫০০-এ গণ্ডি ছাড়িয়েছিল ১২ জুলাই। তার পরে মাত্র ১০ দিন— তাতেই জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়ে গেল।
বুধবার রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুসারে পূর্ব মেদিনীপুরে করোন আক্রান্তের সংখ্যা হয়েছে এক হাজার ৬৩ জন। তার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টাতেই জেলায় সংক্রমিত হয়েছেন ৮৪ জন। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, আক্রান্তেরা হলদিয়া, পাঁশকুড়া, তমলুক, কোলাঘাট এবং শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক এলাকার বাসিন্দা। রোগমুক্ত হয়েছেন ৩৯ জন।
শহিদ মাতঙ্গিনীর এক আক্রান্ত ব্লক অফিসের কর্মী। কয়েকদিন আগেই ওই ব্লকের ভূমি সংস্কার দফতরের এক আধিকারিকও সংক্রমিত হয়েছিলেন। বিডিও অফিস এবং ব্লক ভূমি সংস্কার অফিস একই চত্বরে রয়েছে। ফলে নতুন করে বিডিও অফিসের কর্মী আক্রান্ত হওয়ায় অন্যদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে। শহিদ মাতঙ্গিনীর বিডিও সুমন মণ্ডল বলেন, ‘‘আমার অফিসের এক কর্মী করোনা আক্রান্ত হয়েছে বলে রিপোর্ট এসেছে। তবে কয়েকদিন আগেই ব্লক ভুমি সংস্কার অফিস ও আমার অফিস জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে।’’ হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালের এক চিকিৎসকও করোনা আক্রান্ত। তিনি এইচডিইউ’তে কর্মরত ছিলেন। আপাতত সাতদিন এইচডিইউ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
তমলুক শহরে গত ১৭ জুলাই থেকে পুরোপুরি লকডাউন কার্যকর হয়েছে। পরে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় কাঁথি, এগরা ও পাঁশকুড়া পুরসভা এলাকাতেও সম্পূর্ণ লকডাউন শুরু হয়েছে। পাশাপাশি, বৃদ্ধি পেয়েছে জেলার গণ্ডিবদ্ধ এলাকার সংখ্যা। বুধবার পর্যন্ত জেলার ২৩টি এলাকাকে গণ্ডিবদ্ধ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে জেলার কাঁথিতে নতুন করোনা হাসপাতাল চালু হতে পারে আজ, বৃহস্পতিবার। এ দিন ওই নার্সিংহোমের চিকিৎসক, নার্স ও অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের পাঁশকুড়ার বড়মা করোনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে তাদের করোনা চিকিৎসা সংক্রান্ত বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এদিন কাঁথির নার্সিংহোমটিতে পানীয় জল, শৌচাগার-সহ চিকিৎসা সংক্রান্ত বেশ কিছু পরিষেবার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
কাঁথি শহরের মেচেদা বাইপাস সংলগ্ন একটি নার্সিংহোমে হওয়া করোনা হাসপাতাল প্রসঙ্গে নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুব্রত রায় বলেন, ‘‘আজ, বৃহস্পতিবার থেকে যাঁরা নতুন আক্রান্ত হবেন, তাঁদের ওই হাসপাতালে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই মতো চূড়ান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন। আপাতত সেখানে ৬০ জন রোগীর চিকিৎসা করা হবে।’’ ময়নায় করোনা হাসপাতাল চালু করতে উদ্যোগী হয়েছিল জেলরা স্বাস্থ্য দফতর। তবে হাসপাতালের বদলে বুধবার সেখানে সেফ হোম চালু হয়েছে। এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত ১০ জন সংক্রমিতকে সেখানে রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে, আক্রান্ত বিধায়ক সমরেশ দাসের পরিবারের সদস্য-সহ ৩০ জনের লালারসের নমুনা এ দিন সংগ্রহ করা হয়েছে এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে।