ভার্চুয়াল ভাবে ভাইফোঁটা। নিজস্ব চিত্র।
দিদির বয়স ৭০। ভাই তিন বছরের ছোট। দিদি থাকেন হলদিয়া। ভাই কাঁথি।
করোনায় দু’জনেরই বাইরে যাওয়া নিষেধ। তা হল কি এ বার ভাইফোঁটা হবে না! হলদিয়ার আজাদহিন্দ নগরের বাসিন্দা গায়ত্রী শাসমল সোমবার স্মার্ট ফোনে ভিডিয়ো কল করলেন ভাইকে। কাঁথির নিগমশঙ্কর মিশ্র ফোন ধরে প্রণাম করলেন দিদিকে। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা গায়ত্রী ফোনেই ভাইয়ের মঙ্গলকামনায় মন্ত্র আওড়ালেন। দীর্ঘায়ু কামনা করলেন। ভাইও দিদির সু্স্থতা প্রার্থনা করেন। এ ভাবেই দূরত্ব মিটল কাঁথি-হলদিয়ার। ভার্চুয়াল ভাইফোঁটায় আক্ষেপ মিটল দিদি-ভাইয়ের।
পরিবারের অনেকেই বিদেশে থাকেন। ফলে প্রায়ই আত্মীয়দের সঙ্গে ভিডিয়ো কলে কথা বলেন গায়ত্রী। ভিডিয়ো কলে কথা হয় ভাইয়ের সঙ্গেও। বিশেষ করে লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যমই তো ছিল স্মার্টফোন। তাই স্মার্ট দিদি-ভাই মিলে এ বারে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, ভাইফোঁটা হবে ভার্চুয়ালই। গায়ত্রী বললেন, ‘‘প্রতিবছরই সামনাসামনি গিয়ে ভাইফোঁটা হয়। কোনও বছর ভাই আসে। আর না হলে আমি যাই। দু’জনেরই বয়স বেড়েছে। চিকিৎসকেরা বলছেন বয়স্ক মানুষদের বাইরে বেরোলে ঝুঁকি আছে। তাই ভার্চুয়াল ভাইফোঁটা দিলাম এবার।’’
শুধু কি ভাইফোঁটা অনলাইনে! ফোঁটার উপহার বিনিময়ও তো তাই। গায়ত্রীর কথায়, ‘‘ভাই অনলাইনে শাড়ি পাঠিয়েছে। আমি ভাইকে অনলাইনে ঘড়ি পাঠিয়েছি। এটা ভেবে ভাল লাগছে বিজ্ঞানের যুগে মহামারী করোনা ভাইফোঁটায় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারল না।’’
এ দিন হলদিয়া পুরসভার পক্ষ থেকেও ভাইফোঁটা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। সমস্ত কাউন্সিলররা এই উৎসবে উপস্থিত থাকলেও অনুপস্থিত ছিলেন পুরপ্রধান এবং উপপুরপ্রধান।