Coronavirus

লকডাউনে একশো দিনে শীর্ষে পশ্চিম

প্রশাসন সূত্রে খবর, লকডাউন-পর্বে কাজের নিরিখে এই মুহূর্তে  রাজ্যের মধ্যে শীর্ষে উঠে এসেছে পশ্চিম মেদিনীপুর।

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২০ ০০:১৬
Share:

প্রতীকী ছবি

লক্ষ্য লকডাউনের মধ্যে গরিব মানুষের হাতে নগদ অর্থ পৌঁছে দেওয়া। একশো দিনের কাজে তাই ছোট ছোট প্রকল্পে জোর দেওয়া হচ্ছে। সেই লক্ষ্যে এখনও দ্রুতই এগোচ্ছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে খবর, লকডাউন-পর্বে কাজের নিরিখে এই মুহূর্তে রাজ্যের মধ্যে শীর্ষে উঠে এসেছে পশ্চিম মেদিনীপুর। বুধবার পর্যন্ত জেলায় ১৪ লক্ষ ৫৮ হাজার ৩০৮ শ্রমদিবস সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে এপ্রিলে ১১ লক্ষ ২৩ হাজার ২২৬। আর মে মাসের এখনও পর্যন্ত ৩ লক্ষ ৩৫ হাজার ৮২। দ্বিতীয়স্থানে রয়েছে মালদহ, তৃতীয় স্থানে মুর্শিদাবাদ। এই সময়ে মালদহে শ্রমদিবস সৃষ্টি হয়েছে ১৩ লক্ষ ২০ হাজার, মুর্শিদাবাদে ১২ লক্ষ ৪৪ হাজার।

বস্তুত, লকডাউনের মধ্যেই কিছু ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ শিথিল করেছে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার। এর মধ্যে একশো দিনের প্রকল্পও রয়েছে। নিয়ন্ত্রণ শিথিল হওয়ায় গত ২০ এপ্রিল থেকে পশ্চিম মেদিনীপুরেও একশো দিনের প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে জেলায় ১ লক্ষ ৭৩ হাজার ৪৬৪টি পরিবার কাজ চেয়েছে। এর মধ্যে ১ লক্ষ ৭৩ হাজার ১৭১টি পরিবারকে কাজ দেওয়া হয়েছে। মজুরি বাবদ ওই পরিবারগুলি ইতিমধ্যে পেয়েছে প্রায় ৩৬ কোটি টাকা। প্রশাসন সূত্রে খবর, সব দিক দেখে ২০২০-’২১ আর্থিক বছরে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় ১ কোটি ৬০ লক্ষ শ্রমদিবস তৈরির লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে।

Advertisement

জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘জেলায় একশো দিনের কাজ ভালভাবেই এগোচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব বিধি বজায় রেখেই কাজ চলছে।’’ একশো দিনের কাজ প্রকল্পের জেলা নোডাল অফিসার বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্যেরও বক্তব্য, ‘‘কাজের ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব, মাস্ক ব্যবহার সহ প্রয়োজনীয় সমস্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। নজরদারিও চলছে।’’ জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, একশো দিনের কাজের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের নিয়মিত আয় নিশ্চিত করাই কেবল নয়, পরিবেশ রক্ষা, জলসংরক্ষণ, সবই করা হচ্ছে এই জেলায়।

প্রশাসন সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুরে অবশ্য সব ব্লকে কাজের গতি সমান নেই। কয়েকটি ব্লকে কাজের গতি শ্লথ। জানা যাচ্ছে, জেলার ২১টি ব্লকের মধ্যে এগিয়ে থাকা ৫টি ব্লকের মধ্যে রয়েছে চন্দ্রকোনা-১ এবং ২, দাসপুর- ২, কেশপুর, শালবনি। আর পিছিয়ে থাকা ৫টি ব্লকের মধ্যে রয়েছে নারায়ণগড়, গড়বেতা-১ এবং ২, ঘাটাল, পিংলা। কাজের পর্যালোচনায় আজ, শুক্রবার ব্লকগুলির সঙ্গে এক ভিডিয়ো বৈঠকও হয়েছে জেলার। একশো দিনের প্রকল্পে ঢেলে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার জেলাগুলির সঙ্গে ভিডিয়ো বৈঠকে তিনি বলেছেন, ‘‘গ্রামবাংলার অর্থনৈতিক জাগরণ করতে হবে। ঢেলে কাজ করুন।’’ ভিন্ রাজ্য ফেরত ইচ্ছুকদের এই প্রকল্পের কাজ দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।

ব্লক, গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি নিজেদের মধ্যে সংযোগ রক্ষা করে কাজ করে চলেছে জেলায়। সমস্ত কাজ জেলার পর্যবেক্ষণে রয়েছে। এতেই সাফল্য মিলছে। লকডাউন চলাকালীন শুধু রেশন দেওয়াই যথেষ্ট নয়, গরিব মানুষের হাতে নগদ অর্থের জোগান নিশ্চিত করাও জরুরি। সেই জন্যই ছোট ছোট প্রকল্পে কাজ করায় জোর দেওয়া হচ্ছে। ব্লকগুলিকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, ১২- ১৪ দিনের নয়, ৬-৮ দিনের রোস্টারে কাজ করার। সেই মতোই কাজের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। নিয়মানুযায়ী, একশো দিনের প্রকল্পে কাজ শেষের ১৫ দিনের মধ্যে ফান্ড ট্রান্সফার অর্ডার (এফটিও) হওয়ার কথা। প্রশাসন সূত্রে খবর, লকডাউন পরিস্থিতিতে একশো দিনের প্রকল্পে মূলত সেচ ও জল সংরক্ষণের কাজ হচ্ছে। ‘ইন্ডিভিজুয়াল বেনিফিশিয়ারি স্কিম’ বা আইবিএস- এর উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। তফসিলি জাতি, উপজাতি, মহিলা, ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক, গরিব পরিবারগুলিকে কেন্দ্র করে ওই স্কিমে কাজ হচ্ছে। আবাস যোজনার কাজে সহায়তার কাজও হচ্ছে। পাশাপাশি, জমির উন্নয়ন, বৃক্ষরোপণ প্রভৃতি কাজও হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘গরিব মানুষের হাতে নগদ অর্থের জোগান থাকা দরকার। তাই শুরু থেকেই জেলায় ছোট ছোট প্রকল্প রূপায়নে জোর দেওয়া হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement