অরণ্যশহরে সাফাই। নিজস্ব চিত্র
সাফাইকর্মীদের কাজে ফেরাতে মাঠে নামতে হল ঝাড়গ্রাম পুরসভার আধিকারিকদের।
বৃহস্পতিবার সাতসকালে শহরের রবীন্দ্রপার্কে সাফাইকর্মীদের ডেকে কথা বলেন পুরসভার নির্বাহী আধিকারিক তুষারকান্তি শতপথী ও জনস্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিক বংশীধর জানা। কিন্তু সাফাইকর্মীরা অভিযোগ করেন, তিন পুরকর্মী করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরেও তাঁদের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হয়নি। ঝুঁকি নিয়েই তাঁরা আবর্জনা পরিষ্কার করেন। এখনও অনেক সাফাইকর্মীর কাছে মাস্ক ও গ্লাভস নেই। নেই সাবান ও স্যানিটাইজ়ারও। মজুরি কাঠামো নিয়েও পুরসভার বিরুদ্ধে বৈষম্যের অভিযোগ তুলেছেন সাফাইকর্মীদের একাংশ। তাঁরা বলছেন, কাউকে দৈনিক ১৩৫ টাকা তো কাউকে দৈনিক ১৭৫ টাকা মজুরি দেওয়া হয়। অথচ পুরসভা ঠিকাদার নিয়োগ করলে শ্রমিকদের দৈনিক দু’শো টাকা মজুরি দেওয়া হয়। ঠিকাদারের অধীনে সব সাফাইকর্মী কাজ করেন না। বেশিরভাগ সাফাই কর্মী পুরসভার অধীনে কাজ করেন।
সোমবার রাতে করোনা আক্রান্ত তিন ঠিকা পুরকর্মীকে পাঁশকুড়ার বড়মা হাসপাতালে পাঠানো হয়। মঙ্গলবার থেকে কাজ বন্ধ করে দেন অধিকাংশ সাফাইকর্মী। এ দিন আসরে নামেন পুর-প্রশাসনিক বোর্ডের অন্যতম সদস্য প্রশান্ত রায়। দুর্ঘটনায় পায়ে চোট পেয়ে প্রশান্ত এখন গৃহবন্দি। তাই রবীন্দ্র পার্কে প্রতিনিধি পাঠিয়ে সাফাইকর্মীদের আশ্বস্ত করেন তিনি। পুর-আধিকারিকেরা সাফাইকর্মীদের সমস্যা নিয়ে উপযুক্ত পদক্ষেপের আশ্বাস দিলে কর্মীরা কাজ শুরু করেন। শহরের বিভিন্ন রাস্তার ধারে ও ভ্যাটে জমে থাকা জঞ্জাল সরানোর কাজ শুরু হয়। জঞ্জালবাহী গাড়ি ও ময়লা তোলার স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের চালকেরাও কাজে যোগ দেন।
পুরসভার নির্বাহী আধিকারিক তুষারকান্তির দাবি, ‘‘সাফাইকর্মীরা কেউ কাজ বন্ধ করেননি।’’ তা হলে একসঙ্গে সাফাইকর্মীদের রবীন্দ্রপার্কে ডেকে কথা বলছেন কেন? তুষারের জবাব, ‘‘কারা কোথায়, কীভাবে শহর পরিষ্কার করবে সেটাই বোঝানো হচ্ছে।’’ সে জন্য নির্বাহী আধিকারিককে আসতে হল? এ বার তুষার গলা চড়িয়ে বলেন, ‘‘আপনাদের অপপ্রচারের জবাব দেব না।’’ তবে সাফাই কর্মীরা জানালেন, পুরসভার জনস্বাস্থ্য বিভাগের তিন অস্থায়ী মশানাশক ‘স্প্রে-ম্যান’ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন জেনে তাঁদের অনেকে সতর্কতা-সরঞ্জাম ছাড়া কাজ করতে রাজি হননি।
পুরসভার ৫ স্থায়ী সাফাই কর্মী, ৭৫ জন অস্থায়ী কর্মী এ দিন কাজে যোগ দেন। প্রশান্ত বলেন, ‘‘সাফাইকর্মীদের দাবি বিবেচনা করা হবে।’’