অবাধ: আরপিএফ ব্যারাকের পাঁচিল ঘেঁষেই ইডলি-বড়ার দোকান। নিজস্ব চিত্র
করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে গণ্ডিবদ্ধ এলাকা চিহ্নিত করেছে সরকার। জেলায় চিহ্নিত পাঁচটি এলাকার মধ্যে দু’টিই পড়ে রেলশহরে। অথচ ওই দুই এলাকাতেও শিকেয় লকডাউন বিধি!
খড়্গপুর শহরের ১৮ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ড গণ্ডিবদ্ধ এলাকার তালিকায় রয়েছে। শহরের ৭জন আরপিএফ করোনা আক্রান্ত হওয়ার পরেই ওই দুই ওয়ার্ডকে গণ্ডিবদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের ডেভেলপমেন্ট এলাকায় আরপিএফ ব্যারাকেই ছিলেন আক্রান্ত ওই রেলরক্ষীরা। পরে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের নিউ সেটলমেন্টে রেলের নিভৃতবাস কেন্দ্রে। এর জেরে সোমবার ওই দুই এলাকাকে গণ্ডিবদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। অথচ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এলাকার চেহারায় কোনও বদল আসেনি বলেই স্থানীয়রা জানাচ্ছেন। বিধি ভেঙেই চলছে, খুলছে ছোট দোকানপাট। অভিযোগ, পুলিশের নজরদারির অভাবেই এ সব হচ্ছে। ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর সরব হলেও পরিস্থিতি বদলায়নি। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “কন্টেনমেন্ট জ়োনে সকলে নিয়ম মানছে বলেই জানি। যদি দোকানপাট খোলে বা বিধি ভঙ্গ হয় তবে নিশ্চয়ই কঠোর ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন পর্যন্ত ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে একেবারে আরপিএফ ব্যারাকের পাঁচিল ঘেঁষে ইডলি-বড়ার দোকান খুলেছে। সেখানে ভিড়ও জমেছে। পাঁচিল টপকে আরপিএফ ব্যারাকেও প্লেট ভর্তি ইডলি পৌঁছে গিয়েছে। পরে ওই প্লেটেই ইডলি খেয়েছে স্থানীয়রা। আরপিএফ ব্যারাকের একশো মিটারের মধ্যে গাড্ডা বস্তিতেও অবাধে ঘোরাফেরা করেছে লোকজন। চলেছে আড্ডা। মাস্কের বালাই ছিল না। স্থানীয় বিজেপি কাউন্সিলর অনুশ্রী বেহেরা বলেন, “দশদিন আগেও যা চলছিল, এখনও তাই চলছে। ইডলির খোলা দোকানে ভিড় হচ্ছে, বস্তিগুলিতে জটলা হচ্ছে, অনেকের মাস্ক নেই। পুলিশকে ফোন করেও সুফল পাচ্ছি না। এলাকা জীবাণুমুক্ত করার আবেদন করেও সুফল পাইনি।”
একই ছবি দেখা গিয়েছে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডেও। এই ওয়ার্ডের পুরনো টিবি হাসপাতালে রয়েছে রেলের নিভৃতবাস কেন্দ্র। সেখানে জনবসতি কম। অবশ্য একশো মিটারের মধ্যে লঙ্ঘিত হচ্ছে গণ্ডিবদ্ধ এলাকার বিধি। খুলছে ছোট দোকানও। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ‘হোম ডেলিভারি’র কথা বলা হলেও তা চালু হয়নি। ফলে বাজারে চলছে যাতায়াত। স্থানীয় বাসিন্দা কে তারকেশ্বর রাও বলেন, “শহর অরেঞ্জ থাকার সময়ে যা ছিল এখন কন্টেনমেন্ট জ়োন ঘোষণার পরেও চেহারা বদলায়নি। হোড ডেলিভারি চালু না হওয়ায় মানুষ তো বাজারে যাবেই!” স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর পূজা নায়ডু বলেন, “নিয়ম তো সকলেই মানছেন। তবে হোম ডেলিভারি এখনও চালু না হওয়ায় মানুষ বাজারে যাচ্ছে। আর সামনে একটি মুদি দোকান খুলেছে এটা ঠিক। আমি বন্ধ করতে বলছি।”