Coronavirus

দাসপুর-দাঁতনের দু’টি গ্রামকে ‘সিল’ করে নজরদারি চলছে ড্রোন উড়িয়ে

জেলার পুলিশ সুপার দীনেশ কুমারের স্বীকারোক্তি, ‘‘দু’টি গ্রামকে সম্পূর্ণ লকডাউনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২০ ০৩:৫৮
Share:

প্রতীকী ছবি

করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে পশ্চিম মেদিনীপুরের দু’টি গ্রামে বাড়তি নজরদারির বন্দোবস্ত করল পুলিশ- প্রশাসন। দাসপুর ও দাঁতনের ওই দু’টি গ্রামকে ‘সিল’ করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, গ্রাম দু’টিতে ড্রোনের মাধ্যমেও নজরদারি চালানো হচ্ছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, রবিবার পর্যন্ত ওই গ্রাম দু’টিকে সরকারিভাবে ‘স্পর্শকাতর’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়নি। তবে আগাম সতর্কতা হিসেবেই বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হচ্ছে। স্থানীয়দের বাড়িতে রাখতে ‘হোম ডেলিভারি’রও বন্দোবস্ত করেছে পুলিশ।

Advertisement

জেলার পুলিশ সুপার দীনেশ কুমারের স্বীকারোক্তি, ‘‘দু’টি গ্রামকে সম্পূর্ণ লকডাউনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। দু’টো ড্রোন দু’টো জায়গার জন্য আমরা রেখেছি। দাসপুরের একটি গ্রামের জন্য এবং দাঁতনের একটি গ্রামের জন্য। গ্রাম দু’টিতে সম্পূর্ণ লকডাউন যাতে ঠিকঠাকভাবে কার্যকর হয় সেই জন্যই আমাদের এই পদক্ষেপ।’’

কী ভাবে কাজ করছে ড্রোন? পুলিশের এক সূত্র জানাচ্ছে, ড্রোনে ভিডিয়ো ক্যামেরা লাগানো থাকে। যেখান থেকে খানিক জমায়েতের খবর আসছে, সেখানে পাঠানো হচ্ছে ওই উড়ান। ড্রোনের ক্যামেরা ছবি তুলে পাঠিয়ে দিচ্ছে কন্ট্রোল রুমে। ছবি দেখে তখন দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

জেলার এই দু’টি গ্রামে বাড়তি নজরদারির বন্দোবস্ত কেন? প্রশাসনের এক সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, দাসপুরের গ্রামটিতে এক পরিবারের তিনজনের করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। আক্রান্ত তিনজনই বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অন্য দিকে, দাঁতনের গ্রামটির এক বৃদ্ধ করোনা আক্রান্ত হয়ে ওড়িশায় চিকিৎসাধীন। তাঁর স্ত্রীর প্রাথমিক পরীক্ষার রিপোর্টও পজ়িটিভ এসেছে। তিনিও ভুবনেশ্বরের করোনা হাসপাতালে ভর্তি।

প্রশাসনের ওই সূত্র জানাচ্ছে, এ জন্যই সংক্রমণ ঠেকাতে ওই দুই এলাকায় বাড়তি নজরদারির বন্দোবস্ত করা হয়েছে। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, ওই গ্রাম দু’টির সব বাড়িতে হোম ডেলিভারি চালু করা হয়েছে। গ্রামের সকলে বাড়িতেই থাকছেন। গ্রামবাসী সব রকম সহযোগিতাও করছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, আরও কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে, পুলিশি ভাষায় যাকে বলে ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর’ (এসওপি)। ড্রোনের নজরদারি এই সূত্রেই।

জেলার পুলিশ সুপার মানছেন, ‘‘দু’টি গ্রামে এসওপি ফলো করা হচ্ছে।’’ স্থানীয়স্তরে টাস্ক ফোর্স তৈরি করা হয়েছে। টাস্ক ফোর্সে রয়েছেন বিডিও, ওসি, বিএমওএইচ প্রমুখ। পুলিশ সুপারের আশ্বাস, ‘‘এখনও পর্যন্ত আমাদের জেলায় করোনা নিয়ে চিন্তার কোনও ব্যাপার নেই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’’

প্রশাসন সূত্রে খবর, করোনা মোকাবিলায় শনিবার জেলাস্তরে এক বৈঠক হয়েছে। ছিলেন জেলাশাসক রশ্মি কমল, জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার, জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা প্রমুখ। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, ওই দু’টি গ্রামের বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বাড়ি থেকে বেরোতে দেওয়া হবে না। জরুরি প্রয়োজনে যিনি বেরোবেন তাঁকে মাস্ক পরতেই হবে। গ্রামে পুলিশের মোবাইল মোটরবাইক রয়েছে। নাকা চলছে।

জেলা পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘আমরা ওখানকার লোকজনকে অনুরোধ করছি। দরকার পড়লে ভাল করে বোঝাচ্ছি। এখনও পর্যন্ত অসুবিধের কোনও ব্যাপার নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement