প্রতীকী ছবি।
কেন্দ্র সরকারের নির্দেশ মেনে আন্তঃজেলা বাস পরিষেবা চালু হল পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়। গত বুধবার থেকে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার পক্ষ থেকে বাস পরিষেবা চালু করা হয়েছে। কিন্তু শুক্রবার পর্যন্ত রাস্তায় নামেনি কোনও বেসরকারি বাস। রাজ্য সরকারের আহবানে সাড়া দিয়েও পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর জেলাতেই ভাড়া বৃদ্ধি না হওয়া পর্যন্ত বাস চালাতে রাজি হলেন না বেসরকারি বাস মালিকেরা।
আপাতত পূর্ব মেদিনীপুর এবং উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গড়িয়া ও বারাসতের মধ্যে চলাচল করছে সরকারি বাস। এ ছাড়া দিঘা থেকে নন্দীগ্রাম পর্যন্ত একটি বাস চালাচ্ছে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা (এসবিএসটিসি)। ওই সংস্থা সূত্রে খবর, বুধবার থেকে প্রতিদিন নির্দিষ্ট কয়েকটি রুটে বাস চালানো হচ্ছে। দিঘা থেকে এগরা হয়ে ধর্মতলা হয়ে একটি বাস গড়িয়া পর্যন্ত যাচ্ছে। আরেকটি বাস কাঁথি হয়ে গড়িয়ায় পৌঁছচ্ছে। দিঘা থেকে ডানলপ হয়ে বারাসত পর্যন্ত একটি বাস চালাচ্ছে এই সংস্থা। এছাড়াও দিঘা থেকে মেদিনীপুর পর্যন্ত একটি এবং দিঘা থেকে নন্দীগ্রাম পর্যন্ত একটি বাস চালাচ্ছে তারা। যদিও গত দু’দিনে এই পাঁচটি বাসে যাত্রীসংখ্যা তেমন ভাল হচ্ছে না বলে এসবিএসটিসি সূত্রে জানা গিয়েছে। এর ফলে ওই চারটি রুটে সংস্থার আয়ও অনেকটাই কমেছে।
উল্লেখ্য, লকডাউন চলাকালীন মানুষের অসুবিধার কথা ভেবে কিছুদিন আগেই রাজ্যজুড়ে পরিবহণ ব্যবস্থা সচল করার আবেদন জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। তবে করোনা সংক্রমণের বিষয়টি মাথায় রেখে সরকারি এবং বেসরকারি বাসে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছিল রাজ্য সরকার। সেই মত সরকারি বাসগুলিতে দু’জনের আসনে একজন এবং তিনজনের আসনে সর্বাধিক দুজন যাত্রী যাতায়াত করতে পারছেন। বাসে ওঠার সময় এবং যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া নেওয়ার আগে তাঁদের হাত জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। পরিবহণ কর্মীদের মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আপাতত সরকারি বাসগুলিতে অনলাইনে অগ্রিম টিকিট কাটা বন্ধ রাখা হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার দিঘা ডিপোর দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক বলেন, ‘‘বুধবার থেকে তিনটি পৃথক আন্তঃজেলা রুটে পাঁচটি বাস চালানো হচ্ছে। তবে গত দু’দিনে যাত্রীসংখ্যা তুলনায় অনেক কম ছিল। রাজ্য সরকারের নির্দেশ মতো আগের হারেই ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।’’
কিন্তু রাস্তায় সরকারি বাসের দেখা মিললেও শুক্রবার দিঘা, কাঁথি, হেঁড়িয়া, নন্দকুমার কোথাও দেখা মেলেনি বেসরকারি বাসের। আদৌ বেসরকারি বাস নামবে কিনা তা নিয়েও ধন্দে যাত্রীরা। বৃহস্পতিবার কলকাতায় সব জেলার বাস মালিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। কিন্তু তারপরেও এ দিন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোথাও বেসরকারি বাস চলতে দেখা যায়নি। এর আগেই অবশ্য জেলা বাস মলিক সংগঠন আর্থিক লোকসানের কথা মাথায় রেখে ন্যূনতম ভাড়া ১৫ টাকা করার দাবি জানিয়েছিল। কিন্তু সেই দাবি রাজ্য সরকার মানেনি।
এই বিষয়ে জেলা বাস মালিক সংগঠনের সম্পাদক সুকুমার বেরার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। জেলার পরিবহণ যাত্রী কমিটির তরফে নারায়ণ চন্দ্র নায়েক বলেন, ‘‘কয়েকটি রুটে সরকারি বাস চালানো হচ্ছে শুনেছি। তবে বেসরকারি বাস নিয়ে এখনও জেলা প্রশাসন স্পষ্ট কিছু জানায়নি। ফলে বহু নিত্যযাত্রী ফাঁপরে পড়েছেন।’’