ছবি রয়টার্স
বাড়ি ফেরার জন্য মুখিয়ে ছিলেন ওঁরা। রবিবার কেন্দ্রীয় সরকার ট্রেন চালানোর কথা ঘোষণা করতেই ধুম পড়ে গেল টিকিট কাটার। শুধু ট্রেন নয়। এখন বাস, ব্যক্তিগত গাড়িতে করেও ঘাটাল-দাসপুরে অনেকে ফিরতে শুরু করেছেন। ট্রেন চালু হলে পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার সংখ্যায় এক ধাক্কায় অনেকটা বাড়বে। ফলে সতর্ক হচ্ছে প্রশাসন।
তৃতীয় দফার লকডাউন ঘোষণার পরই দিল্লি-সহ বিভিন্ন রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরানোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল। সরকারের ওই তৎপরতা দেখে দিল্লির স্বর্ণশিল্পী ও অন্য পরিযায়ী শ্রমিকেরাও বেশ আনন্দেই ছিলেন। স্বস্তিতে ছিল ঘাটাল-দাসপুরের শিল্পীদের পরিবার গুলিও। এরই মধ্যে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, দিল্লি, মুম্বই ও গুজরাত থেকে এখনই কাউকে ফেরানো হবে না। ধাপে ধাপে ফেরানো হবে। তবে অন্য রাজ্য গুলি থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। রাজ্যের ওই সিদ্ধান্ত শুনে প্রাথমিক ভাবে দিল্লিতে কর্মরত শ্রমিকেরা অনেকেই ভেঙে পড়েছিলেন। রবিবার দিল্লি থেকে হাওড়া ট্রেন চালুর খবর শুনে নতুন করে তৎপরতা শুরু হয়।
দিল্লি স্বর্ণশিল্পী সংগঠন গুলির সূত্রে জানানো হয়েছে, ট্রেন চালুর খবর শুনেই বাড়ি ফেরার জন্য মরিয়া উঠেছে সবাই। অনলাইনে টিকিট কাটার হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে দিল্লি জুড়ে। সোমবার বিকাল থেকে অনেকেই নিজেরাই টিকিট কাটছেন। অনেকে সংগঠন গুলির কাছে এসে দরবার করছেন। দিল্লির করোলবাগের স্বর্ণকার সেবা সঙ্ঘের সম্পাদক কার্তিক ভৌমিক বলেন, “এখানে স্বর্ণশিল্পীরা খুব কষ্টে রয়েছেন। মজুত টাকাও শেষ। তাই বাড়ি ফেরার জন্য সবাই মরিয়া। সংগঠন ভাবে টিকিট কাটতে সহায়তা করা হচ্ছে।” দিল্লির স্বর্ণশিল্পীদের আরেক কর্মকর্তা দীপক ভৌমিকের কথায়, “এতদিন ফেরার কোনও উপায় ছিল না। তাই সবাই চুপচাপ ছিলেন। এখন ট্রেনের খবর শুনেই বাড়তি টাকা গুণেই অনেকে আসতে চাইছেন।”
ঘাটাল মহকুমা প্রশাসনের এক সূত্রের খবর, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা, মধ্যপ্রদেশ, কটক, ঝাড়খন্ড-সহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে বাসে করে অনেকেই আসতে শুরু করেছেন। মঙ্গলবার থেকে আবার দিল্লির ট্রেন চালু হচ্ছে। ফলে এক সপ্তাহের মধ্যে ঘাটাল-দাসপুর ও চন্দ্রকোনায় কয়েক হাজার পরিযায়ী শ্রমিক ফিরবেন। বাড়ি ফেরার পর শ্রমিকদের ১৪ দিন হোম কোয়রান্টিনে থাকতে হবে। কিন্তু অনেকের পর্যাপ্ত ঘর, আলাদা বাথরুম নেই। সে ক্ষেত্রে কী হবে, তা নিয়ে অবশ্য প্রশাসনের মধ্যে একটা ধোঁয়াশা রয়েছ।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “বাড়ি ঢোকার আগে সংশ্লিষ্ট সবাইকে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে স্বাস্থ্য পরীক্ষা বাধ্যতামূলক।”