প্রতীকী ছবি
সামনের সপ্তাহ থেকে রাজ্যজুড়ে পুরোদমে চালু হচ্ছে বেসরকারি বাস ও মিনিবাস পরিষেবা। কুড়ি জনের বেশি যাত্রী নেওয়া যাবে না বাসগুলিতে, আগেই জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। সে কথা ভেবে এ বার বাসভাড়া এক লাফে দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাসমালিক সংগঠনগুলি। এই অবস্থায় যাত্রীদের ওপর অতিরিক্ত বোঝা না চাপিয়ে বেসরকারি বাস চলাচলে ভর্তুকি দেওয়ার দাবিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও পরিবহণ মন্ত্রীকে চিঠি দিল পরিবহণ যাত্রীকমিটি।
করোনা সংক্রমণের জেরে ২৪ মার্চ থেকে দেশজুড়ে চলেছে লকডাউন। গণ পরিবহণ বন্ধ থাকায় মুখ থুবড়ে পড়েছে রাজ্যের অর্থনীতি। কয়েক দিন আগে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নেয় গ্রিন জোনগুলিতে কুড়ি জন যাত্রী নিয়ে চলবে বাস। মাত্র কুড়ি জন যাত্রী নিয়ে বাস চালালে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে এই আশঙ্কায় রাস্তায় বাস নামাননি বেসরকারি বাস ও মিনিবাস মালিকেরা। অতঃপর রাজ্য সিদ্ধান্ত নেয় বাসভাড়ার বিষয়ে বাস মালিক সংগঠনগুলি সিদ্ধান্ত নেবে। আগামী সপ্তাহ থেকে পথে নামবে বেসরকারি বাস ও মিনিবাস। এই বিষয়ে বুধবার বেসরকারি বাসমালিক সংগঠনগুলির প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে বসেন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। জানা গিয়েছে, বৈঠকে পরিবহণমন্ত্রী বাসমালিক সংগঠনগুলিকে জানিয়ে দেন, এই পরিস্থিতিতে বাসের ভাড়া ঠিক করবে বাসমালিক সংগঠনগুলিই।
পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, রাজ্যে এই মুহূর্তে বেসরকারি বাসের সংখ্যা ৪৩ হাজার। এর মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরে বেসরকারি বাসের সংখ্যা প্রায় ১৪০০। যার মধ্যে ১২০০ বাস নিয়মিত রাস্তায় নামে। আগামী সপ্তাহ থেকে ধাপে ধাপে পথে নামবে বেসরকারি বাস। বাসমালিক সংগঠনগুলি ঠিক করেছে জেলায় বেসরকারি বাসে উঠলেই এবার দিতে হবে ন্যূনতম ১৪ টাকা। যা আগে ছিল ৭ টাকা।মকিলোমিটার পিছু বাস ভাড়া বেড়ে হচ্ছে দেড় টাকা। যা আগে ছিল ৭০ পয়সা।
জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেট কার্যকরী সভাপতি তথা পূর্ব মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়শনের সম্পাদক সুকুমার বেরা বলেন, ‘‘যাত্রীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। বেশি ভাড়া নিয়েও কুড়ি জন করে যাত্রী নিয়ে বাস চালাতে আমাদের ক্ষতিই হবে। তবুও আমরা বাস চালাব। বাসের কর্মীদের মাস্ক, স্যানিটাইজার ইত্যাদি দিতে হবে। এর জন্যও একটা খরচ আছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফের আগের ভাড়াই নেওয়া হবে।’’ পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বাস ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সম্পাদক মহম্মদ বুলবুল বলেন, ‘‘আমরাও বাসভাড়া দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ ছাড়া কুড়িজন যাত্রী নিয়ে বাস চালানো যাবে না।’’
বেসরকারি বাস চালাতে অতিরিক্ত ভাড়া না চাপিয়ে ভর্তুকির দাবিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও পরিবহণ মন্ত্রীকে চিঠি দিল পরিবহণ যাত্রী কমিটি। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সদানন্দ বাগাল বলেন, ‘‘লকডাউন পরিস্থিতিতে মানুষের হাতে টাকা নেই। তাই বাড়তি ভাড়া গোনা সাধারণ মানুষের কাছে কষ্টের। তাই রাজ্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি বেসরকারি বাস চলাচলের ওপর ভর্তুকি দিতে।’’
পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘সরকারি বাস চলাচলের ক্ষেত্রে সরকার ভর্তুকি দিচ্ছে। এই মুহূর্তে কুড়ি জনের বেশি যাত্রী নিয়ে বাস চালানো যাবে না। ফলে ক্ষতির মুখে পড়বেন বাস মালিকেরা। তাই এই পরিস্থিতিতে বাসের ভাড়া ঠিক করবে বাসমালিক সংগঠনগুলি। সরকার এই বিষয়ে কোনও হস্তক্ষেপ করবে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফের পুরনো ভাড়াই নেবেন বাস মালিকরা।’’