চলছে হাট তৈরির কাজ। নিজস্ব চিত্র
একাধিক ব্যক্তির শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে হলদিয়ায়। সরকারিভাবে ঘোষিত না হলেও শিল্প শহর 'হটস্পট' হিসাবেই রয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। এমন পরিস্থিতিতে এই মহকুমাতেই লকডাউনের মধ্যে শ্রমিকদের জড়ো করে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে গ্রামীণ হাট নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, সুতাহাটা ব্লকের গুয়াবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের গোড়াদোরো গ্রামে। বৃহস্পতিবার সকালে গ্রামীণ হাট নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। সেখানে ১৩-১৪ জন শ্রমিককে একসঙ্গে কাজ করতে দেখা গিয়েছে। লকডাউন চলাকালীন এভাবে নির্মাণ কাজ এবং জমায়েত করায় শাসকদল পরিচালিত স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এ ব্যাপারে স্থানীয়রা বারবার ব্লক প্রশাসনকে মোবাইল ফোনে জানালেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ এলাকার বাসিন্দাদের।
গুয়াবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, মোহনদাস কর্মচন্দ গাঁধী কর্মসংস্থান সুনিশ্চিত প্রকল্পে গোড়াদোরো গ্রামে একটি গ্রামীণ হাট তৈরি হচ্ছে। এলাকার কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রির জন্য ১২টি ছোট বিপণন কেন্দ্র, শৌচালয়, সাইকেল স্ট্যান্ড সহ একাধিক পরিকাঠামো গড়ে ওঠার কথা। গত ফেব্রুয়ারি মাস কাজ শুরু হলেও মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে সাময়িকভাবে বন্ধ ছিল ওই নির্মাণের কাজ। এরপর বৃহস্পতিবার আচমকা দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থার অধীন বেশ কয়েকজন শ্রমিক সেখানে কাজ করতে যাযন। ঘটনা জানাজানি হতেই ওই নির্মাণ কাজ বন্ধ করার দাবি জানিয়ে এলাকার বাসিন্দারা স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ এবং ব্লক প্রশাসনকে একাধিকবার মোবাইল ফোনে জানান। কিন্তু এ ব্যাপারে কেউ কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। দুপুর ১২টার পর ওই ঠিকা শ্রমিকেরা কাজ ছেড়ে চলে যাযন।
লকডাউন উপেক্ষা করে কীভাবে এক জায়গায় একসঙ্গে এত লোক জমা করে সরকারি উদ্যোগে নির্মাণ কাজ চালিয়ে গেল, সে নিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা। প্রশাসন সূত্রের খবর, একশো দিনের কাজ লকডাউনে ছাড়ের আওতায় নেই ঠিকই। তবে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়নমন্ত্রক এক নির্দেশিকায় রাজ্যগুলিকে জানিয়েছে, যেখানে সম্ভব, সেখানে এই প্রকল্প চালানো যেতে পারে। যদিও গ্রামীণ হাটের কাজ শুরু হওয়া প্রসঙ্গে গুয়াবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শেখ সাবিরউদ্দিন বলেন, ‘‘মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ওই এলাকায় গ্রামীণ হাট নির্মাণের কাজ বন্ধ রাখার জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও এদিন কাজ হয়েছে কিনা ঠিকমতো জানি না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। তবে এমন ঘটনা না হওয়াই উচিত।’’ স্থানীয় পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ যদি গ্রামীণ হাট নির্মাণের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন, তাহলে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার এদিন সেখানে গিয়ে কাজ করলেন কেন? এ প্রসঙ্গে জানতে চেয়ে ঠিকাদার শেখ আখতার আলিকে ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। এ নিয়ে সুতাহাটার বিডিও সঞ্জয় শিকদার বলেন, "পঞ্চায়েতের উদ্যোগে ওখানে গ্রামীণ হাট নির্মাণ হচ্ছিল। তবে এই সময় নির্মাণ কাজ হচ্ছে কি না, তা খোঁজখবর নিয়ে দেখছি।"