এগরা হাসপাতাল।
করোনায় এগরা যোগ আগেই সামনে এসেছিল। এবার এই মারণ রোগে আক্রান্ত হলেন এগরার বাসিন্দা এক প্রৌঢ়া-সহ আরও দু’জন। দু’জনই এগরাবাসী চিকিৎসকের ছেলের বিয়েতে এসে করোনা আক্রান্ত কলকাতার বৃদ্ধের সংস্পর্শেই মারণ এই রোগের কবলে পড়েছেন বলে স্বাস্থ্য দফতরের অনুমান।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, আক্রান্ত নতুন দু’জনই মহিলা। একজন এগরার ওই চিকিৎসকের স্ত্রী এবং অন্য জন তাঁর এক বৃদ্ধা আত্মীয়া। তিনি কলকাতার বাসিন্দা। ওই দু’জনই বর্তমানে এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে আইসোলেশনে রয়েছেন। চিকিৎসকের ছেলের বিয়েতে হাজির মোট ১৩ জনের লালারসের নমুনা করোনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। রাজ্য স্বাস্থ্য ভবন শনিবার জানিয়েছে, ওই দুই মহিলার রিপোর্ট পজ়িটিভ। বাকি ১১ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ হলেও তাঁরা এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালেই রয়েছেন।
যদিও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল এ দিন রাতে বলেন, ‘‘১১ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ হয়েছে। বাকি দু’জনের রিপোর্ট পজ়িটিভ বলে এখনও আমাদের কাছে খবর আসেনি।’’
এ দিকে, ওই বিয়েবাড়িতে আমন্ত্রিত এবং হোটেল কর্মীদের আইসোলেশন-কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে। কিন্তু অনুষ্ঠান বাড়ির বহু লোকই কেনাকাটা করতে গিয়েছিলেন শহরের কাপড়, মিষ্টি, মুদি-সহ অন্য দোকানে! তাতে ঘুম উড়েছে ওই সব দোকানের কর্মীদের। পরিস্থিতি এমনই যে, অনেক কাপড় ব্যবসায়ীই নিজেদের সিসিটিভি ক্যামেরা পরীক্ষা করতে শুরু করেছেন। স্থানীয় সূত্রের খবর, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে গত কয়েকদিনের বিভিন্ন ব্যক্তিদের গতিবিধি খতিয়ে দেখছেন বিভিন্ন দোকানের মালিকেরা।
বিয়েতে হাজির ৫৭২ জনের বৃহস্পতিবার এগরা ঝাঁটুলাল হাইস্কুলে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর হোম কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়। এঁদের মধ্যে বেশির ভাগই এগরা পুরসভা এলাকার ১, ২, ৩, ৪ এবং ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। পুরসভা ও পুলিশ সূত্রের খবর, হোম কোয়রান্টিনে থাকা ওই ৫৭২ জনের বাড়ির এলাকায় দিনরাত পুলিশের টহলদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাই বলেন, ‘‘কোয়ারান্টিনে থাকা ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য পরিস্থিতির কোনও অবনতি হয়নি। ওঁদের নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।’’
এদিতে, শনিবার থেকে এগরার সরকারি অফিসগুলিকে স্যানিটাইজ় করার কাজ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি, এ দিন সকাল থেকে প্রশাসনের উদ্যোগে রাস্তা স্যানিটাইজ়ের কাজ শুরু হয়েছে। এগরা মহকুমার দমকল কর্মীরা ব্লিচিং এবং ফিনাইল মিশ্রিত জল দমকলের একটি ইঞ্জিনের মাধ্যমে স্প্রে করে রাস্তা এবং সরকারি অফিস চত্বরে। এ দিনের অভিযান প্রসঙ্গ এগরা মহকুমা দমকলের আধিকারিক নিমাই বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসনের নির্দেশ এগরা শহরের সমস্ত সরকারি দফতরগুলো স্যানিটাইজ় কাজ করা হচ্ছে। দমকলের কর্মীরা যাবতীয় নথি নিরাপত্তা মেনেই ব্লিচিং ও ফিনাইল জল স্প্রে করেছেন।’’ এ দিন পাঁশকুড়ার রাস্তাতেও ব্লিচিং জল স্প্রে করা হয়েছে।
অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।