মারমুখী পর্যটক। নিজস্ব চিত্র।
একদিন আগেই সৈকত শহর পরিদর্শনে এসেছিলেন রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। তিনি দাবি করেছিলেন, কোভিড বিধি মেনেই সবকটি পর্যটনকেন্দ্র চলবে। কিন্তু, মন্ত্রী যাওয়ার পরদিন মঙ্গলবারই উল্টো ছবি ধরা পড়ল দিঘায়। শারীরিক দূরত্ব বিধি দূর অস্ত, মাস্ক ছাড়াই রাস্তায় ঘুরছেন অধিকাংশ পর্যটক। স্থানীয়েরা এর প্রতিবাদ করলে পর্যটকদের কাছ থেকে জুটছে শাসানি এবং হুমকি। কেউ কেউ আবার তেড়ে আসছেন আক্রমনাত্মক ভাবে।
করোনা সংক্রমণ রোখার কড়া নির্দেশিকা কিছুটা শিথিল করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই ঘোষণার পর দিনই সৈকত শহরে পর্যটকদের আগমণ ঘটতে শুরু করেছে। ‘ইয়াস’ ঝড় এবং সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল উপকূলের তিনটি পর্যটন কেন্দ্র। ক্ষত সারিয়ে স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার আগেই রবিবার থেকে দিঘায় তুলণামূলক ভাবে ভিড় বেড়েছে।
এ দিন ওল্ড দিঘার বিভিন্ন জায়গাতে মাস্ক ছাড়া বহু পর্যটক ঘোরাঘুরি করতে দেখা গিয়েছে। তাঁদের অনেককেই মাস্ক পরার কথা বলাতে স্থানীয়দের সঙ্গে বচসা বাধে। যাঁরা প্রতিবাদ করেছিলেন তাঁদের দিকে পর্যটকরা তেড়ে যায় বলে অভিযোগ। আবার কোথাও সমুদ্র সৈকতের ধারে মাস্ক ছাড়া সপরিবারে বসে থাকা পর্যটকেরা বলে দিচ্ছেন, ‘‘কখন মাস্ক পরব, সেটা নিশ্চয়ই অন্য কেউ আমাদের জানাবেন না!’’
এ দিন সমুদ্র সৈকতের ধারে পুলিশ এবং সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা প্রচুর সংখ্যায় মোতায়েন ছিলেন। কিন্তু মাস্কবিহীন পর্যটকদের সতর্ক করার ব্যাপারে তাঁদের ভূমিকা ছিল ঠুঁটো। তাতে ক্ষুব্ধ স্থানীয় দোকানদারেরা। এ রাজ্যে করোনা সংক্রমণে তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। দিঘা- সহ উপকূলের সবকটি পর্যটনকেন্দ্র ধীরে ধীরে খুলছে। সংক্রমণ বাড়লে ফের লকডাউন চালু হলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন। তাই পর্যটকদের খামখেয়ালিপনায় চিন্তিত তাঁরা। পুলিশ কেন এই সব পর্যটকদের জরিমানা করছে না, সে নিয়েও
প্রশ্ন উঠেছে।
পুলিশের অবশ্য দাবি, কলকাতা থেকে আসার পথে কোলাঘাট, নন্দকুমার-সহ একাধিক জায়গায় পর্যটকদের গাড়ি দাঁড় করিয়ে মাস্ক ব্যবহার করা এবং শারীরিক দূরত্ব বিধি মেনে চলার জন্য সচেতন করা হচ্ছে। গত ২৫ জুন সবকটি পর্যটন কেন্দ্রের হোটেল মালিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে এ ব্যাপারে একটি বৈঠক করেছেন জেলা প্রশাসন। কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি বলে অভিযোগ। এ ব্যাপারে জেলার পুলিশ সুপার অমরনাথ কে বলেন, ‘‘শুধু মাস্ক ব্যবহার করা নয়, করোনার যা যা বিধি রয়েছে, তা যাতে পর্যটকেরা মেনে চলেন, তার জন্য পুলিশ তাদেরকে সচেতন করার উদ্যোগ আরও বেশি করে নিচ্ছে।’’