খড়্গপুর ডিভিশনে তৈরি হওয়া পিপিই স্যুট। নিজস্ব চিত্র
করোনা যুদ্ধে শামিল হয়ে ট্রেনের কামরায় আইসোলেশন ওয়ার্ড গড়া আগেই শুরু করেছিল রেল। এ বার পিপিই কিট (পার্সোনাল প্রোটেকটিভ ইক্যুইপমেন্ট) তৈরির কাজ শুরু করল দক্ষিণ-পূর্ব রেল।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়্গপুর ডিভিশনে চলছে পিপিই তৈরি। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ‘উইমেন্স অর্গানাইজেশন’ নামে রেল আধিকারিকদের পরিবারের মহিলাদের নিয়ে তৈরি সংগঠনও। গত দু’দিন ধরে পরীক্ষামূলক ভাবে কয়েকটি পিপিই কিট বানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে খড়্গপুর শহরের সাউথ ইনস্টিটিউটে মহিলা সংগঠনের অফিসের দোতলায় জোরকদমে চলছে কাজ। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সদর গার্ডেনরিচ ছাড়াও খড়্গপুর, টাটানগর, আদ্রা ও চক্রধরপুর ডিভিশনের রেল হাসপাতালের জন্য কিট তৈরি হচ্ছে।
কিট তৈরির মূল উপকরণ পলি-প্রোপাইল ব্যারিয়র ফ্যাব্রিকের জোগান দিচ্ছে রেল। কাজের নেতৃত্বে রয়েছেন সংগঠনের সভাপতি তথা খড়্গপুরের ডিআরএমের স্ত্রী প্রিয়া প্রধান। তিনি বলেন, “দেশ জুড়ে পিপিই কিটের আকাল দেখা দিয়েছে। তাই রেলের পক্ষ থেকে পিপিই তৈরির কাজে আমরা স্বেচ্ছায় সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি।”
এই কাজে নিযুক্ত রয়েছেন মহিলা সংগঠনের দুই প্রধান দর্জি এবং সাত সহযোগী। প্রাথমিকভাবে এক হাজার পিপিই কিট তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। রেল সূত্রে খবর, সংক্রমণ যাতে ছড়ায় সে জন্য ‘গ্বালিয়র ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’-এর পরীক্ষাগারে উপকরণ যাচাই করা হয়েছে। আপাতত দিনে ২০টি পিপিই কিট তৈরি হচ্ছে। রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার আদিত্য চৌধুরী বলেন, “যেখানে পিপিই কিট তৈরি হচ্ছে সেই জায়গা জীবাণুমুক্ত করা হয়েছে। দু’হাজার কিটের উপকরণ নিয়ে আসা হয়েছে।”
তবে রেলের তৈরি এই কিট পুনর্ব্যবহারযোগ্য নয়। ছ’ঘণ্টা ব্যবহারের পরে নিয়ম মেনে এই কিট ফেলে দিতে হবে। ইতিমধ্যে আইআইটি খড়্গপুরের পরামর্শ মেনে পুনর্ব্যবহারযোগ্য পিপিই কিট তৈরির কাজে নেমেছে খড়্গপুর শহরের প্রেমবাজারের এক দর্জি। তাতে সাড়া মেলায় জেলাশাসক নিজে ওই দর্জিকে এক হাজার কিট তৈরির বরাত দিয়েছেন। পুনর্ব্যবহারযোগ্য কিটের দাম পড়ছে ১৬০০ টাকা। অন্য দিকে, রেলের তৈরি কিটের খরচ মাত্র দু’শো টাকা। এই প্রসঙ্গে রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার আদিত্য চৌধুরী বলেন, “রাজ্য প্রশাসন যদি আমাদের থেকে পিপিই কিট চায়, তবে আমরা নিশ্চয় সাহায্য করব।” বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের পরিকল্পনা আধিকারিক অয়ন নাথ বলেন, “রেল পিপিই কিট তৈরি করছে জানা ছিল না।
যদি দু’শো টাকা দাম হয় তবে অত্যন্ত কম। আমাদের স্বাস্থ্য দফতরে
পিপিই কিটের চাহিদাও রয়েছে। আমরা জেলাশাসকের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলব।’’