প্রতীকী ছবি।
করোনা নেগেটিভ হওয়ায় শালবনি হাসপাতাল ছুটি দিয়েছিল। তবে বাড়ি ফিরে অসুস্থতা বাড়তে থাকে। ফের তাঁকে ভর্তি করা হয় রেল হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার ‘রেফার’ করা হয়েছিল কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে করোনা পরীক্ষায় ফের পজ়িটিভ হয়েছেন খড়্গপুরের প্রবীণ সাহিত্যিক নন্দদুলাল রায়চৌধুরী।
শালবনির করোনা হাসপাতালে প্রবীণ সাহিত্যিকের ন্যূনতম দেখাশোনাও করা হয়নি বলে অভিযোগ। বেসরকারি হাসপাতালে গিয়ে পজ়িটিভ হওয়ার পরে শালবনি হাসপাতালের চিকিৎসা নিয়েও প্রশ্ন উঠে গেল। সাহিত্যিকের পরিজনেরা জানান, গত ১৩ সেপ্টেম্বর শালবনি হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয় নন্দদুলালকে। তার আগে তিনি করোনা নেগেটিভ হয়েছিলেন বলে হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল। ছুটির সময় ওই রিপোর্টও দেওয়া হয়। তবে ওই হাসপাতালে সাহিত্যিককে মেঝেতে অবহেলায় ফেলে রাখার হয়েছিল বলে দাবি তাঁর স্ত্রী ও ছেলের। মেঝেতে পড়ে থাকার দৃশ্য তাঁর ছেলে মোবাইলে ক্যামেরাবন্দিও করেন। সেই ছবি (আনন্দবাজার সত্যতা যাচাই করেনি)সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এর পরে সাহিত্যিককে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু ফের তাঁর অসুস্থতা বাড়ে।
নন্দদুলালের পরিজনেদের অভিযোগ, ঠিকমতো পরীক্ষা না করেই তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাই ফের পরীক্ষা করতেই পজ়িটিভ হয়েছেন। নন্দদুলালের পুত্র সৌগত রায়চৌধুরী বলেন, “রেল হাসপাতালে ভাল চিকিৎসা হচ্ছিল। কিন্তু বাবার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় কলকাতায় রেফার করা হয়। সেখানে ফের বাবা পজ়িটিভ হয়েছেন। তাহলে শালবনিতে কী ভাবে বাবাকে নেগেটিভ বলে ছুটি দেওয়া হল? আগে মনে হচ্ছিল অবহেলা হলেও চিকিৎসা হয়েছে। এখন তো মনে হচ্ছে কোনও চিকিৎসাই হয়নি।”
অভিযোগ উড়িয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাই মণ্ডল বলেন, ‘‘ওই সাহিত্যিক শালবনি হাসপাতালে আইসিইউতে ছিলেন। হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়ার কথা অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বাড়িতে জানালেও বাড়ির লোক আসেনি। দু’দিন পরে বাড়ি নিয়ে গিয়ে এ সব কথা বলছে!” যদিও সৌগত বলেন, “ছুটি দেওয়ার কথা স্থানীয় কাউন্সিলরের মাধ্যমে জানানো হয়েছিল। তার পরে শালবনি যেতে যেটুকু সময় লাগে লেগেছিল। তাই বলে কোনও রোগীকে কি মেঝেতে ফেলে রাখা যায়?’’ তাঁর আরও প্রশ্ন, ‘‘শালবনি হাসপাতাল থেকে ছুটির চারদিন পরেই বাবা ফের পজ়িটিভ হলেন কীভাবে?” জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের জবাব, “শালবনি হাসপাতালে কী হয়েছিল খোঁজ চলছে। তবে বয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবডি দুর্বল হলে তিনি কম সময়ের মধ্যে ফের সংক্রমিত হতেই পারেন।”
সাহিত্যিকের এই অবস্থায় সাংস্কৃতিক মহল অবশ্য চুপ নেই। শুক্রবার ‘খড়্গপুর শঙ্খমালা’র প্রতিনিধিরা মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে যায়। সংস্থার সম্পাদক কৃশানু আচার্য বলেন, “একজন প্রবীণ সাহিত্যিকের এই অবস্থায় আমরা উদ্বিগ্ন। উপযুক্ত পদক্ষেপের দাবিতেই মহকুমাশাসকের কাছে গিয়েছিলাম। কিন্তু উনি না থাকায় পরে আসতে বলেছেন। আমাদের প্রতিবাদ চলবে।”