প্রতীকী ছবি
পুজোর মরসুমে করোনা সংক্রমণ আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সংক্রমিত কিছু রোগীকে আইসিইউ বা ভেন্টিলেটরে দিতে হচ্ছে। যাঁদের কোমর্বিডিটি রয়েছে অর্থাৎ, দীর্ঘদিন ধরে অন্য জটিল রোগে ভুগছেন, মূলত তাঁদেরই এই পরিষেবা দিতে হচ্ছে। এঁদের কারও কারও শারীরিক অবস্থার হঠাৎ করে অবনতিও হচ্ছে। সংক্রমিতদের চিকিৎসায় নজর রাখতে ‘কোভিড পেশেন্টস্ ম্যানেজমেন্ট মেন্টরস্ গ্রুপ' (সিপিএমএমজি) গড়া হল পশ্চিম মেদিনীপুরে। শুক্রবার থেকেই এই গ্রুপ কাজ শুরু করেছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর।
জানা যাচ্ছে, রোজ এই গ্রুপ ভার্চুয়াল বৈঠক করবে। বৈঠকে চিকিৎসাধীনদের শারীরিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হবে। এই বৈঠকের ব্যবস্থা হচ্ছে একটি নির্দিষ্ট অ্যাপে। ওই অ্যাপে ভিডিয়ো কলে যোগ দিতে পারেন দশজনেরও বেশি। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে গ্রুপের সদস্যদের ভার্চুয়াল লিঙ্ক দেওয়া হবে। দুপুর দু'টো থেকে তিনটের মধ্যে বৈঠক হবে। ইতিমধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুরের ডিস্ট্রিক্ট ক্লিনিক্যাল কো-অর্ডিনেটর নিযুক্ত হয়েছেন কৃপাসিন্ধু গাঁতাইত। কৃপাসিন্ধু মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের প্রফেসর, মেডিসিনের চিকিৎসক, ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ) মেদিনীপুর শাখার সম্পাদকও। ভার্চুয়াল বৈঠকে রাজ্যস্তরের বিশেষজ্ঞরাও থাকবেন।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘আরও উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী জানাচ্ছেন, শালবনির কোভিড হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা রয়েছেন। কোভিড পেশেন্টস্ ম্যানেজমেন্ট মেন্টরস্ গ্রুপ গড়ে উঠেছে। ভার্চুয়াল বৈঠক শুরু হয়েছে। প্রথম দিনের ভার্চুয়াল বৈঠকে শালবনির করোনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১২ জন রোগীর অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। অনেকে মনে করছেন, এরফলে ঠিকঠাক চিকিৎসা হবে। মৃত্যুর হার আরও কমবে।
পশ্চিম মেদিনীপুরে করোনায় মৃত্যুর হার নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক প্রশাসনিক বৈঠকে রাজ্যের সতর্কবার্তা শুনেছে জেলা প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে জেলাশাসককে সতর্ক করে রাজ্যের সদ্য প্রাক্তন মুখ্যসচিব তথা রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান রাজীব সিংহকে বলেছেন, ‘‘ডেথ রেট ১.৩৮। গ্রামাঞ্চলে ডেথ রেট ১-এর কম থাকা উচিত। এখন আছে প্রত্যাশিতের চেয়ে খানিকটা বেশি।’’ জানা যাচ্ছে, জেলায় এখন মৃত্যুর হার দেড় শতাংশের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে। শনিবার পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্ত ১৮২ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর হার ১.৪৪ শতাংশ। মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকের সময়ে এই হার ছিল ১.৩৮। অন্যদিকে, জেলায় পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার ৮ শতাংশের কিছু বেশি। অর্থাৎ, প্রতি একশোয় আটজন সংক্রমিত হচ্ছেন।