প্রতীকী ছবি।
রাজ্যে ক্রমশ বসছে করোনা সংক্রমণের থাবা। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। তাই রাজ্য সরকারের নির্দেশমত পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় করোনা চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল গড়ে তোলার প্রক্রিয়া শুরু করে দিল স্বাস্থ্য দফতর।
জেলা পরিষদ ও জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনার চিকিৎসার জন্য আপাতত জেলার দুটি হাসপাতালে ১০০ শয্যার ব্যবস্থা প্রায় পাকা হয়ে গিয়েছে। চণ্ডীপুরে একটি নবনির্মিত নার্সিংহোম এবং পাঁশকুড়ার একটি নার্সিংহোম ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য আধিকারিকরা পরিদর্শন করে সংশ্লিষ্ট নাসিংহোমের মালিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছেন।
প্রসঙ্গত, দেশে যে ভাবে করোনা সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছ তাতে পূর্ব মেদিনীপুর সহ এ রাজ্যে যে কোনও মুহূর্তে করোনা সংক্রমণের প্রভাব অনেক বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের। সে কথা মাথায় রেখে জেলায় এক হাজার শয্যার করোনা হাসপাতাল তৈরির পরিকল্পনা করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। এ ক্ষেত্রে আগের মতোই তমলুক জেলা সদর হাসপাতাল সহ কাঁথি, এগরা, এবং হলদিয়া মহকুমা হাসপাতাল ও সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালগুলিতে অন্যান্য অসুখে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা হবে। ফলে করোনার চিকিৎসায় প্রতিটি মহকুমায় পৃথক বড় ভবন খোঁজার চেষ্টা চলছে।
হলদিয়া শিল্পাঞ্চল এলাকায় করোনা চিকিৎসার জন্য ৫০০ শয্যার হাসপাতাল গড়ে তোলার ব্যাপারে আগ্রহী জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও জেলা পরিষদ। সে ক্ষেত্রে হলদিয়া শহরের একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে প্রাথমিকভাবে করোনো চিকিৎসার জন্য ভাবা হয়েছিল। কিন্তু ওই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ক্ষেত্রে আইনগত কিছু বাধা থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। বিকল্প হিসেবে কাঁথিতে রাজ্য সরকারের আয়ুর্বেদ কলেজ হাসপাতাল কিংবা দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালকে বেছে নেওয়া হতে পারে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
এখনও পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য কলকাতায় পাঠানো হচ্ছে। জেলায় জেলায় করোনা চিকিৎসার জন্য পৃথক হাসপাতাল গড়ে উঠলে কী ভাবে সেখানে রোগীদের চিকিৎসা হবে! এ প্রসঙ্গে জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য বিভাগ জানাচ্ছে, মূলত বড় বড় নার্সিংহোমগুলিতে বিপুল সংখ্যক শয্যা এবং শ্বাসকষ্ট রোধের জন্য অক্সিজেনের জোগান পাওয়া যাবে। তবে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় ভেন্টিলেশন এবং পর্যাপ্ত চিকিৎসক জোগান দেবে স্বাস্থ্য দফতর।
জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ পার্থপ্রতিম দাস বলেন, ‘‘চণ্ডীপুরে একটি নার্সিংহোম পরিদর্শন করা হয়েছে। পাঁশকুড়াতেও একটি নার্সিংহোমের মালিকের সঙ্গে কথাবার্তা অনেকটাই হয়ে গিয়েছে। তবে কাঁথিতে আয়ুর্বেদ কলেজ কিংবা দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা হবে কিনা তা বিবেচনা করা হচ্ছে। আর হলদিয়ায় করোনা চিকিৎসা কেন্দ্র গড়ে তোলার ব্যাপারে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।’’
পূর্ব মেদিনীপুরে করোনা চিকিৎসার পরিষেবা কবে থেকে পাওয়া যাবে সে ব্যাপারে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাক্তার নিতাই চন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘আপাতত দু’টি নার্সিংহোমে করোনা চিকিৎসার হাসপাতাল তৈরি করা হবে। এ ব্যাপারে যে সব পরিকাঠামো এবং চিকিৎসকের ঘাটতি রয়েছে সে ব্যাপারে রাজ্য সরকারকে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারাই এ বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবে।’’