কেনার লোক নেই। মুড়ে রাখা হয়েছে প্রতিমা। কাঁথিতে। নিজস্ব চিত্র
ক্যালেন্ডারে আগামী ৩১ মার্চ ও ১ এপ্রিল বাসন্তী ও অন্নপূর্ণা পুজো। কিন্তু করোনা আবহে পুজো নিয়ে সংশয়ে বহু উদ্যোক্তা এবং গৃহস্থ। লকডাউনের কারণে ইতিমধ্যেই অনেকে পুজো বাতিল করেছেন। হতাশায় জেলার মৃৎশিল্পীরা।
রাজ্যে প্রায় সর্বত্র বাসন্তী পুজো হয়। পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন ব্লকে ধুমধাম করে এই পুজো হয়। এ বার করোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে সামাজিক মেলামেশা বন্ধ করেছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার। ফলে পুজোতেও তার ছায়া পড়েছে। শুধু বাসন্তী পুজোই নয়। সামনেই নববর্ষ ও হালখাতা। জেলার বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনও তাই চিন্তিত। সুভাষ পাল নামে কাঁথি-৩ ব্লকের পিঠুলিয়া গ্রামের প্রতিমাশিল্পী জয়দেব বর বলেন, ‘‘পাঁচটি বাসন্তী প্রতিমা তৈরির বায়না পেয়েছিলাম। প্রতিমার মাটির কাজ প্রায় শেষ। এখন একের পর এক বায়না বাতিল হচ্ছে। যা অবস্থা তাতে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে।’’
মৃৎশিল্পীদের দাবি, কাঁথি মহকুমায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে ৫০টি বাসন্তী পুজো হয়। এ ছাড়া বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে গণেশ প্রতিমা, শিব ও মঙ্গলচণ্ডী প্রতিমার অর্ডার বাতিল হয়েছে। কাঁথির দূরমুঠের বাসিন্দা মৃৎশিল্পী চতুর্ভুজ বারিক বলেন, ‘‘এক একটি বাসন্তী বা গণেশ প্রতিমার দাম ১০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ২৫ হাজার টাকা। ছোট প্রতিমাগুলি ৫০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকা। মাঝারি আকৃতির প্রতিমা বানাতে দেড় হাজার টাকা থেকে সাত হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। সব অর্ডার বাতিল হলে কয়েক লক্ষ টাকার আর্থিক ক্ষতি হতে পারে।’’ করোনার ফলে এই আর্থিক ক্ষতি কীভাবে সামাল দেবেন তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় মৃৎশিল্পীরা।
গত কয়েক বছরে কাঁথি-৩ ব্লকের দইসাইতে একটি ক্লাবের উদ্যোগে সর্বজনীন বাসন্তী পুজো নজর কেড়েছে। কয়েক লক্ষ টাকার বাজেটের ওই পুজো এ বার বন্ধ। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারি বিধিনিষেধ থাকায় পুজো বন্ধের কথা জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা। পূজো কমিটির পক্ষে সুতনু মণ্ডল বলেন, ‘‘লকডাউন পরিস্থিতিতে পূজোও।
করোনা মোকাবিলায় সচেতনতায় পুজোর আয়োজনে কাটছাঁটের পাশাপাশিএ একাধিক পুজো বন্ধের পথে হেঁটেছে এগরাও।এগরা মহকুমায় প্রায় ৪০ থেকে ৫০টি নামী পুজো কমিটি তাদের পুজো বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কয়েকটা পুজো কমিটি শুধু প্রতিমা গড়ে নামমাত্র পুজো করার কথা ভাবছে। স্থানীয় একটি পুজো কমিটির কর্তা জানান, এমন মহামারি পরিস্থিতিতে আমরা কঠিন লড়াইয়ের মুখে। মানুষের সুরক্ষার্থে পুজোয় জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাই পুজোর বাজেট কাটছাঁট করে নিয়মরক্ষার্থে পুজো করছি।’’ আর একটি পূজো কমিটির কর্মকর্তা সুতনু মণ্ডল বলেন, ‘‘এখন লকডাউন পরিস্থিতিতে নানা সরকারি বিধিনিষেধ থাকায় পুজো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।’’