প্রতীকী ছবি
করোনা-কালে নতুন উদ্বেগ পশ্চিম মেদিনীপুরে। মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হল জেলার এক শিশু এবং নাবালক পরিযায়ী শ্রমিক। বৃহস্পতিবার জেলায় নতুন করে ১৬ জন আক্রান্তের হদিস মিলেছে। এর মধ্যে ওই দু’জন রয়েছে।
কেশপুরের পঞ্চমীর বছর দুয়েকের ওই শিশু কয়েক দিন আগে তার বাবা- মা’র সঙ্গে মুম্বই থেকে ফিরেছিল। ক’দিন আগে তার বাবার করোনা ধরা পড়েছে। গড়বেতার বাসিন্দা বছর ১৭ এর ওই নাবালক পরিযায়ী শ্রমিক ফিরেছিল গুজরাতের সুরাত থেকে। দু’জনকেই পাঁশকুড়ার বড়মা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শিশুর দেখভাল করার জন্য সঙ্গে তার মা’ও সেখানে গিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে খবর, করোনায় আক্রান্ত শিশুর বাবা পেশায় কাঠমিস্ত্রি। মুম্বইয়ে তাঁর সঙ্গে থাকতেন তাঁর স্ত্রী, পুত্র এবং তাঁর ভাইও। চারজনই গত ২৩ মে মুম্বই থেকে ভাড়া করা বাসে ফিরেছিলেন। ওই বাসে পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকার আরও ৩২ জন ছিলেন। খড়্গপুরের চৌরঙ্গিতে নেমে তাঁরা গাড়ি ভাড়া করে কেশপুরে আসেন। কেশপুরে ওই পরিযায়ী শ্রমিকের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। ২৯ মে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ওই নমুনার পরীক্ষা হয়। রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। দেখা যায়, ওই যুবকের সরাসরি সংস্পর্শে এসেছেন ৭ জন। পরোক্ষ সংস্পর্শে এসেছেন ২ জন। স্বাভাবিকভাবে প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে আসাদের তালিকায় নাম ছিল ওই যুবকের স্ত্রী, পুত্র এবং তাঁর ভাইয়েরও। তিনজনেরই করোনা পরীক্ষা হয়। বৃহস্পতিবার মেডিক্যাল থেকে জেলার স্বাস্থ্যভবনে রিপোর্ট আসে। দেখা যায়, ওই শিশুর রিপোর্ট পজ়িটিভ। কেশপুরের বিডিও দীপক ঘোষের আশ্বাস, ‘‘উদ্বেগের কিছু নেই। যা যা পদক্ষেপ করার, সবই করা হচ্ছে।’’ মুম্বই ফেরত ওই শিশু যে করোনায় আক্রান্ত হতে পারে, সেই আশঙ্কা ছিলই। ক’দিন আগে তাকে মেদিনীপুরের করোনা হাসপাতালে (লেভেল- ১) ভর্তি করা হয়েছিল।
গড়বেতার খড়কুশমা অঞ্চলের তালড্যাংরা এলাকার বাসিন্দা ওই নাবালক পরিযায়ী শ্রমিক সুরাতে জরির কাজ করত। গত ১৫ মে গুজরাতের সুরাত থেকে আরও কয়েকজনের সঙ্গে গড়বেতার বাড়িতে ফেরে ওই কিশোর। ১৮ মে তার লালারসের নমুনা সংগ্রহ হয় মেদিনীপুরের আয়ুষ হাসপাতালে। তখন থেকে খড়কুশমায় গৃহ পর্যবেক্ষণেই ছিল। ১৬ দিন পর, বুধবার রাতে তার করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে।
দু’টি ক্ষেত্রেই এলাকা সিল-সহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেছে প্রশাসন। কিন্তু গড়বেতার নাবালক পরিযায়ী শ্রমিকের ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে, কেন পরীক্ষার রিপোর্ট আসতে এত দেরি?জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, ‘‘মেদিনীপুরে বহু জমে আছে, তাই একটু দেরি হচ্ছে।’’ কেশপুরের শিশুর ক্ষেত্রে জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলছেন, ‘‘শিশুর শরীরে করোনা সংক্রমণ নতুন নয়। দেশে- বিদেশেও অনেক শিশুর শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা গিয়েছে। আক্রান্ত শিশুদের ইনটেনসিভ কেয়ার বা নিবিড় পরিচর্যায় রাখতে হয়েছে।’’ ওই শিশুর মায়ের শরীরে সংক্রমণ না মেলায় অবশ্য খানিক স্বস্তিতে অনেকে।