সমুদ্র দেখা, স্নান করার ছাড়পত্র পেলেও পিকনিক করা কিংবা দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখার অনুমতি এখনও দূরঅস্ত—ফাইল চিত্র
উঠে গিয়েছে সমুদ্র স্নানের নিষেধাজ্ঞা। তারও আগে পর্যটকদের জন্য খুলে গিয়েছে সৈকত সুন্দরীর দরজা। এতেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে পর্যটকদের। কারণ করোনা পরিস্থিতিতে সতর্কতা।
সমুদ্র দেখা, স্নান করার ছাড়পত্র পেলেও পিকনিক করা কিংবা দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখার অনুমতি এখনও দূরঅস্ত। শুধুমাত্র দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্যদের অধীনে চলা অমরাবতী পার্ক খুলে গিয়েছে। বিজ্ঞান কেন্দ্র, মেরিন অ্যাকোয়ারিয়াম কিংবা সেভেন-ডি সিনেমার মতো জনপ্রিয় বিনোদনগুলিও আপাতত বন্ধ। সরকারি নির্দেশ মেনে গত ৮ জুন থেকে খুলে গিয়েছে সৈকত শহর। চলতি মাসের শুরু থেকে ওল্ড ও নিউ দিঘার সমস্ত হোটেল কমবেশি খুলে গিয়েছে। ইতিমধ্যে বাসে চেপে কিংবা ব্যক্তিগত গাড়িতে রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে পর্যটকেরা আসতেও শুরু করেছেন। কিন্তু সমুদ্রস্নান ছাড়া আর কোনও আনন্দে ভাগ বসানোর উপায় নেই। যার ফলে পর্যটকরা বিশেষ করে কচিকাঁচারা হতাশ।
নিউ দিঘায় বাইপাসের কাছেই অমরাবতী পাঈকে বছরভর পর্যটকদের থিকথিকে ভিড় থাকে। সেখানে এখন মাছি তাড়ানোর উপক্রম। পার্কের মূল গেট খোলা। মুখে মাস্ক বেঁধে পর্যটকদের ভিতরে ঢোকার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু ভিতরে ঢুকে পার্কে একজনেরও দেখা মিলল না। বোটিংয়ের জন্য রাখা নৌকোগুলি জলাশয়ের একপ্রান্তে বাঁধা অবস্থায় পড়ে থেকে গায়ে শ্যাওলা জমেছে। রোপওয়েটিও বন্ধ। পার্কের কর্মীরা জানালেন, গত চার মাস ধরে রোপওয়ে বন্ধ ছিল। তাই তা চালুর আগে খুঁটিনাটি সারিয়ে নেওয়া হচ্ছে। দেখা গেল মুখে মাস্ক বেঁধে বান্ধবীকে নিয়ে পার্কে ঢুকছেন এক যুবক। তাঁদের দাবি, ‘‘দিঘায় বেড়াতে এলে অমরাবতী পার্ক আসা তাঁদের নেশা। কিন্তু এরকম সুনসান পার্ক আগে দেখেননি। দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সূত্রে খবর, অন্য বছর এই সময়ে দিনে হাজার হাজার টাকা উপার্জন হত। কিন্তু এখনও তার ছিটেফোঁটাও হচ্ছে না।
অমরাবতী পার্ক-এর মতোই পর্যটকদের অপেক্ষায় সেভেন-ডি সিনেমা। ডিএসডিএ-র প্রশাসনিক ভবনের একটি ঘরে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে পর্যটকদের ওই সিনেমা দেখানো হচ্ছে। সমুদ্রের তলদেশের বিভিন্ন চিত্র সেখানে দেখানো হয়। তেমন পর্যটক না থাকায় আর্থিক লোকসানের জন্য তা শুরু হয়নি বলে জানান এক কর্মী। দিঘা বিজ্ঞান কেন্দ্র এবং মেরিন অ্যাকোয়ারিয়ামের হাল একই। দিঘার মেরিন অ্যাকোয়ারিয়ামের দায়িত্বপ্রাপ্ত সুব্রহ্মনিয়াম বালাকৃষ্ণন বলেন, ‘‘উৎসাহীদের নিয়ে ভার্চুয়াল সেমিনার এবং প্রাতিষ্ঠানিক কাজকর্ম চলছে। তবে পর্যটকদের জন্য কবে থেকে খোলা হবে তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।’’ পর্যটক না থাকায় বিনোদন কেন্দ্রগুলির লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন কমে গিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দাবি।
ডিএসডিএ-র আধিকারিক সুজন দত্ত বলেন, ‘‘অমরাবতী পার্ক শুরু থেকেই খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে সেভেন ডি সিনেমা শো খোলার ক্ষেত্রে সরকারি অনুমোদন রয়েছে কিনা খোঁজ নিয়ে পদক্ষেপ করা হবে। আর কেন্দ্র সরকারের অধীনস্থ বাকি দুটি সংস্থা পর্যটকদের জন্য যাতে খুলে দেওয়া হয় সে জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা হবে।’’ (শেষ)