প্রতীকী ছবি।
করোনা আক্রান্তের প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে আসায় আগেই তাঁকে করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। একাধিক উপসর্গ থাকায় তাঁর করোনা পরীক্ষাও হয়েছিল। রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। তার পরে সব দিক খতিয়ে দেখে তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়েছিল। এক মাসের মাথায় ফের সেই মহিলাই ভর্তি হয়েছেন করোনা হাসপাতালে। এ বার তাঁর উপসর্গ খানিক বেশিই। আগে ওই মহিলাকে ভর্তি করা হয়েছিল লেভেল-১ করোনা হাসপাতালে। উপসর্গ খানিক বেশি থাকায় এ বার তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে লেভেল-২ করোনা হাসপাতালে।
ঘটনার সত্যতা মানছেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা। তবে তাঁর দাবি, ‘‘এ ক্ষেত্রে উদ্বেগের কিছু নেই। শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে ওই মহিলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার করা হচ্ছে।’’ জানা যাচ্ছে, বছর পঞ্চাশের ওই মহিলা গত শুক্রবার রাতে মেদিনীপুরের লেভেল- ২ করোনা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। জানা গিয়েছে, ওই মহিলা দাসপুরের নিজামপুরের বাসিন্দা। মাস দেড়েক আগে তাঁর ছেলে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। ওই যুবকই ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রথম করোনা আক্রান্ত। পরে পরে করোনায় আক্রান্ত হন ওই যুবকের স্ত্রী এবং বাবাও। আক্রান্তের প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে আসায় ওই যুবকের মা-কে মেদিনীপুরের লেভেল- ১ করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় পরে তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়েছিল।
গত শুক্রবার সকাল থেকে ফের তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। কাশিও হচ্ছিল। সেই রাতেই তাঁকে মেদিনীপুরের লেভেল-২ করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রবিবার পর্যন্ত তিনি এখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হাসপাতালের এক সূত্রের দাবি, ওই মহিলার ‘অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ডিসট্রেস সিনড্রোম’ বা এআরডিএস-এর উপসর্গ রয়েছে। এটি ফুসফুসের জটিলতম সমস্যা। পেশী ও গাঁটের ব্যথার প্রকোপ যত মারাত্মক হয়, তত আশঙ্কা বাড়ে ফুসফুসের জটিলতম সমস্যার। জেলা স্বাস্থ্যভবনের এক সূত্রের পর্যবেক্ষণ, ওই মহিলা ‘ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ’ বা সিওপিডি-র প্রথম পর্যায়ে রয়েছেন। এই পর্যায়ে শ্বাসকষ্ট হয়। কাশিও হয়। ওই সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, আমেরিকার ‘সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল ও প্রিভেনশন’-এর অভিমত অনুসারে, কোভিড- ১৯ এর উপসর্গের তালিকায় ঢুকে গিয়েছে পেশী ও গাঁটের ব্যথাও। কোনও ঝুঁকি না নিয়ে শনিবারই মহিলার লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে মেদিনীপুর মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে।
ওই মহিলার লেভেল-১ হাসপাতাল থেকে ‘ডিসচার্জের’ প্রক্রিয়াও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হাসপাতালের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এলে ওই মহিলাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হবে। তাঁকে বাড়িতেই পর্যবেক্ষণে থাকার পরামর্শ দেওয়া হবে।’’ তবে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার এক মাসের মাথায় অসুস্থ হয়ে ফের হাসপাতালে ভর্তি হওয়াকে অনেকেই হালকাভাবে দেখতে রাজি নন। জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের দাবি, ‘‘এ ক্ষেত্রে সব দিক গুরুত্ব দিয়েই দেখা হচ্ছে।’’