প্রতীকী ছবি
সপ্তাহ তিনেক আগেও এখানে দিনে নমুনা পরীক্ষা হত সাকুল্যে গড়ে ৫৫- ৬০টি। এখন সেখানে প্রায় দিনে ১ হাজারেরও বেশি নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। করোনা নমুনা পরীক্ষার হার বেশ কয়েকগুণ বেড়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যালে। মেডিক্যালের এক সূত্রের খবর, শনিবার পর্যন্ত এখানে ১২,৭৫৫টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘মেদিনীপুর মেডিক্যালে নমুনা পরীক্ষা দ্রুত হারে বেড়েছে। আরও বাড়বে।’’ তবে জেলায় ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ায় চাপও বাড়ছে। জেলা স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিস্থিতি সামলাতে কলকাতার দু’টি ল্যাবরেটরির সঙ্গে যোগাযোগ করে সেখানেও জেলার নমুনা পাঠানো হচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের তরফে পশ্চিম মেদিনীপুরে করোনা পরীক্ষা ব্যবস্থার দেখভালের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক সৌর মণ্ডল। সৌরও বলেন, ‘‘নমুনা পরীক্ষার হার এখন অনেকই বেড়েছে।’’ মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডুর কথায়, ‘‘নতুন কিছু যন্ত্রপাতি এসেছে। তারপরে নমুনা পরীক্ষার হার অনেক বেড়েছে।’’ সূত্রের খবর, এই সময়ের মধ্যে মেডিক্যালে এসেছে অটোমেটেড আরএনএ এক্সট্রাকশন মেশিন, মিনিস্পিন (৮ টিউব সেন্ট্রিফিউজ), হাইস্পিড সেন্ট্রিফিউজ (রেফ্রিজারেশন ছাড়া), ফ্রিজ (২৭৬ লিটার)। এসেছে অটোমেটেড ভাইরাল আরএনএ এক্সট্রাকটর কিটও, এক হাজারটি। জেলা প্রশাসনের তরফে এ সব কিনে মেডিক্যালকে দেওয়া হয়েছে।
মেদিনীপুর মেডিক্যালে শুধু পশ্চিম মেদিনীপুরেরই নয়, এ জেলার পাশাপাশি বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রামের মতো কিছু জেলার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সপ্তাহ তিনেক আগে রাজ্যের স্বাস্থ্যভবন এক নির্দেশে জানিয়েছিল, মেদিনীপুর মেডিক্যালে দিনের ৬০টি নমুনা পরীক্ষার সীমা অতিক্রান্ত হলে বাড়তি নমুনা নাইসেডে পাঠানো যেতে পারে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অবশ্য এখন আর খুব বেশি নমুনা বাইরে পাঠাতে হয় না। পশ্চিম মেদিনীপুরে এখন দিনে ৬০০টি নমুনা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে। লক্ষ্যপূরণে দিনরাত এক করে কাজ করে চলেছেন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টরা (এমটি)। ওয়েস্টবেঙ্গল প্রোগ্রেসিভ মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা শাখার সম্পাদক সৌরভ পাণ্ডা বলেন, ‘‘জেলা লক্ষ্যমাত্রা নির্দিষ্ট করেছে। আমাদের সহকর্মীরা সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণে দিনরাত কাজ করে চলেছেন।’’
বেশ কয়েকগুণ নমুনা পরীক্ষা বাড়ল কী ভাবে?
সূত্রের খবর, নতুন যন্ত্রপাতি আসাটা একটা কারণ। অন্য আরেকটি কারণ হল পুল টেস্ট। সম্প্রতি মেদিনীপুর মেডিক্যালে করোনা নমুনা পরীক্ষায় পুল টেস্টও শুরু হয়েছে। এতেই নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা অনেকটা বাড়ানো সম্ভব হয়েছে। অবশ্য পুল টেস্ট সব ক্ষেত্রে বা সব জায়গা থেকে করা সম্ভব নয়। সাধারণত, যেখানে পজ়িটিভ রোগীর সংখ্যা কম হয়, সেখান থেকে পুল টেস্ট করা হয়। এই সময়ের মধ্যে গত ১৬ মে মেডিক্যালে ১,৫৫৫টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। যা রেকর্ডই। গত শনিবার ১,৫৪০টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘‘নতুন আক্রান্তের খোঁজ মিলছে। তবে শতাংশের বিচারে নতুন করোনা রোগীর হার তুলনামূলকভাবে অনেকই কমেছে। এটা আশাপ্রদই।’’