Coronavirus in Midnapore

করোনা-যুদ্ধে আশা সুস্থতায়

সপ্তাহ কয়েক আগেও সুস্থতার হার ৮৫ শতাংশের আশেপাশে ঘোরাফেরা করেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২০ ০২:২০
Share:

প্রতীকী ছবি।

করোনা- যুদ্ধ জয়ের আশা সুস্থতায়।

Advertisement

উৎসবের মরসুম। লোকাল ট্রেন চলাচলও শুরু হয়েছে। এই সময়ে প্রবলভাবে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা ছিল। দেখা যাচ্ছে, জেলায় করোনা সংক্রমণে ছেদ নেই। তবে সে ভাবে সংক্রমণ বৃদ্ধি হয়নি। বরং আশা জাগিয়ে দ্রুত বাড়ছে সুস্থতার হার। এই সুস্থতার হারকে আঁকড়ে ধরেই করোনা- যুদ্ধে জেতার আশায় বুক বাঁধছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, সুস্থতায় নতুন ‘রেকর্ড’ তৈরি হয়েছে জেলায়। এখানে সুস্থতার হার এখন প্রায় ৯৫ শতাংশ। অর্থাৎ, প্রতি ১০০ জন সংক্রমিতের মধ্যে ৯৫ জনই সুস্থ হয়েছেন। সপ্তাহ কয়েক আগেও সুস্থতার হার ৮৫ শতাংশের আশেপাশে ঘোরাফেরা করেছে।

জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা অনেক কমেছে। মৃত্যুর হারও কমেছে। উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে সুস্থতার হার। সবমিলিয়ে জেলায় করোনা পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে।’’ জেলার এক জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের কথায়, ‘‘কতজন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন, সেই সংখ্যাটা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমন কতজন করোনার প্রকোপ কাটিয়ে সুস্থ হয়ে উঠছেন, সেই সংখ্যাটাও গুরুত্বপূর্ণ। মাস খানেকের মধ্যে জেলায় সুস্থতা অনেক বেড়েছে।’’ জেলার উপ- মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গীর কথায়, ‘‘সুস্থতার হার যত বেশি হবে, তত দ্রুত করোনার প্রকোপ হ্রাস পাবে, এ বিষয়ে আমরা নিশ্চিত।’’ জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের একাংশ মনে করছেন, নতুন করে সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী না-হলে শীঘ্রই সুস্থতার হার ৯৭- ৯৮ শতাংশে পৌঁছবে। তবে সংক্রমণের হার এখনও চিন্তায় রেখেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে। এখন জেলায় সংক্রমণের হার প্রায় ৮ শতাংশ। যত সংখ্যক পরীক্ষা করা হয়, তারমধ্যে প্রতি ১০০ জনে যতজনের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে, তাকে ‘পজ়িটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়।

Advertisement

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, গত সোমবার পর্যন্ত পশ্চিম মেদিনীপুরে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১৫,৩২৬ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৪,৫২১ জন। মৃত্যু হয়েছে ২২১ জনের। সক্রিয় করোনা রোগী রয়েছেন ৫৮৪ জন। এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জেলায় সুস্থতার হার ৯৪.৭৫ শতাংশ। মৃত্যুর হার ১.৪৪ শতাংশ এবং সক্রিয় করোনা রোগী রয়েছেন ৩.৮১ শতাংশ। দেখা যাচ্ছে, শেষ চার সপ্তাহের সংক্রমণের হার যথাক্রমে ১১.৩৭, ৯.৯০, ৯.১৮ এবং ৬.৯২ শতাংশ। জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের দাবি, সংক্রমণের হার নিম্নমুখী। অবশ্য এই সময়ের মধ্যে নমুনা পরীক্ষাও কমেছে বলে সূত্রের খবর। হার নিম্নমুখী হওয়ার এটাও একটা কারণ। জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘অনেক কিছুর মধ্যেও সুস্থতার হার বাড়ছে। এটাই আশার কথা।’’

অবশ্য, উদ্বেগও একেবারে কাটেনি। পশ্চিম মেদিনীপুরে করোনা সংক্রমিত মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যে দু’শো ছাড়িয়েছে। সোমবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২২১। দেখা যাচ্ছে, গ্রামাঞ্চলের থেকে শহরাঞ্চলেই মৃত্যুর ঘটনা বেশি। এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের দাবি, মৃতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অন্য রোগভোগ ছিল। কয়েকজন দেরিতে হাসপাতালে গিয়েছেন। উৎসবের মরসুম এখনও ফুরোয়নি। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে চলা, নিয়মিত হাত পরিষ্কার করা এবং মাস্ক পরা নিয়ে আরও সতর্ক হতে হবে মানুষকে। তবেই করোনা পরিস্থিতি আরও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement