ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীদের লালারস নেওয়া হল রবিবার। নিজস্ব চিত্র
করোনা সংক্রমণের ধারাবাহিকতায় ছেদ নেই খড়্গপুর ও ঘাটালে। শনিবার রাতে আসা রিপোর্ট অনুযায়ী নতুন করে আক্রান্ত হলেন খড়্গপুর শহরের ৬জন। খড়্গপুর মহকুমার তিনটি ব্লকে একদিনে ১৩জন আক্রান্ত হয়েছেন। ঘাটাল মহকুমার দাসপুরে নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ১২ জন।
রেলশহরে নতুন করে যে ৬জন আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের ৫জনই রেলকর্মী। অন্যজন রেলের পেনশনভোগী এক বৃদ্ধা। আক্রান্ত রেলকর্মীদের মধ্যে ১জন রেল হাসপাতালের মহিলা কর্মী রয়েছেন। ওল্ড সেটলমেন্টের চারতলা রেল আবাসনের বাসিন্দা বছর বাহান্নর ওই মহিলা কর্মস্থল রেল হাসপাতাল থেকেই সংক্রমিত হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। বাকি চারজন রেলকর্মীই কর্মাশিয়াল কন্ট্রোলে আগেই আক্রান্ত হওয়া বেশ কয়েকজনের সংস্পর্শে এসেছিলেন। তাঁদের মধ্যে দু’জন রেলগার্ড। তাঁরা শহরের চাঁদমারি রেল আবাসনে একটি কোয়ার্টার্সে মেস করে থাকেন। ওই মেসেই থাকা এক রেলকর্মী আগেই আক্রান্ত হয়েছিলেন। আর সাউথসাইড রেল আবাসনের বাসিন্দা বাকি দু’জন রেলকর্মী কমার্শিয়াল কন্ট্রোলের কর্মী হওয়ায় তাঁদের নমুনা সংগ্রহ হয়েছিল। রেলের পেনশনভোগী গোলবাজারের যে বছর সত্তরের বৃদ্ধা আক্রান্ত হয়েছেন তিনি গত কয়েকদিন আগে অসুস্থ হয়ে রেল হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
মহকুমার সবং ও ডেবরায় আক্রান্তের সংখ্যাও স্নায়ুচাপ বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্যকর্তাদের। ডেবরার গোলগ্রামে এক পরিবারে তিনজন আক্রান্ত হয়েছিলেন। গত বুধবার ওই পরিবারের একজন অজানা জ্বরে মারা যান। তবে কলকাতায় আসবাব মিস্ত্রির কাজ করা ওই ব্যক্তি দিন সাতেক আগে বাড়িতে এসেছিলেন। তাই গ্রামবাসীদের চাপে মৃতের স্ত্রী, সন্তান-সহ কয়েকজনের নমুনা সংগ্রহ হয়েছিল। তাতেই মৃতের স্ত্রী ও দুই সন্তান করোনা পজ়িটিভ বলে জানা গিয়েছে। সবংয়েও প্রতিদিনই দু’-তিন জন করে আক্রান্ত হচ্ছেন। আক্রান্তের মধ্যে নারায়ণবাড়ের এক হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক ও দেভোগের জুলকাপুরের এক ফেরিওয়ালা রয়েছেন। এছাড়াও বড়সাহারা ও বিষ্ণুপুরের বাসিন্দা দু’জন কর্নাটকের মেঙ্গালুরু থেকে এসেছিলেন।
দাসপুরে ১২ জন আক্রান্তের মধ্যে ছ’জনকে শালবনি করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি আক্রান্তদের অবশ্য বাড়িতেই চিকিৎসা চলছে। এ দিন ঘাটাল মহকুমায় সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ১১৭। মোট গণ্ডিবদ্ধ এলাকা ৯৯। শনিবারের পর এ দিনও ঘাটাল শহর সহ মহকুমার একটা বড় অংশে লকডাউন চলছে। তবে দুপুর একটা পর্যন্ত নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দোকান খোলা ছিল। এ দিন সকালে ঘাটালের বাজার প্রচুর ভিড় হয়। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ভিড় পাতলা করে। দুপুরের পর কড়া লকডাউন কার্যকর হয়।