Coronavirus in Midnapore

পরিযায়ীদের যোগে বাড়ছে করোনা রোগী

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, পাঁশকুড়ার মাইশোরা এলাকার এক প্রৌঢ় গত ১৭ মে মুম্বই থেকে বাড়ি ফেরেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাঁশকুড়া ও ভগবানপুর শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২০ ০৪:১৫
Share:

প্রতীকী ছবি

কিছুতেই রাশ নেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যায়। রবিবার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জেলার ছ’টি ভিন্ন এলাকায় ছ’জন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছিল। আর সোমবার পাঁশকুড়া এবং ভগবানপুর-১ নন্দকুমার এবং ময়নারর আরও চারজনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি মিলেছে। এঁরা দু’জন জনই ভিন্ রাজ্যে ফেরত পরিযায়ী শ্রমিক।

Advertisement

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, পাঁশকুড়ার মাইশোরা এলাকার এক প্রৌঢ় গত ১৭ মে মুম্বই থেকে বাড়ি ফেরেন। নিয়ম অনুযায়ী স্বাস্থ্য দফতর তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে। এ দিন ওই প্রৌঢ়ের করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে। খবর পেয়ে তাঁর বাড়িতে যান পাঁশকুড়ার বিডিও ধেন্দুপ ভুটিয়া-সহ স্বাস্থ্য কর্মীরা। প্রৌঢ়কে মেচগ্রামের বড়মা করোনা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাঁর বাড়ির এলাকাটি সিল করে পুলিশ।

ভগবানপুর-১ ব্লকের সিমুলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার এক বাসিন্দাও করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি মহারাষ্ট্রে কাজ করতেন। ১৭ মে ওই ব্যক্তি এগরায় আসেন। সেখানে একটি কোয়রান্টিন সেন্টারে তিনি ছিলেন। ১৮ মে এগরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সেখান থেকে ভগবানপুরে ফিরে ওই ব্যক্তি একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিভৃতাবাসে থাকছিলেন। সোমবার তাঁর করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে। তাঁকে বড়মা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা পাঁচ যুববকে চণ্ডীপুর করোনা হাসপাতালে আইসোলেশন সেন্টারে পাঠানো হয়েছে। যেখানে তিনি নিভৃতাবাসে ছিলেন, সেই প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্বাস্থ্য দফতর সিল করেছে।

Advertisement

নন্দকুমার ব্লকের এক যুবকও মহারাষ্ট্রে থাকতেন। সম্প্রতি বাড়ি ফিরেছেন তিনি। ফেরার পথে তাঁর করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এ দিন তাঁর করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছে। ময়না ব্লকের ময়না-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার আরেক মহারাষ্ট্রে ফেরতেরও এ দিন করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছে। এ ব্যাপারে পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘জেলায় আরও চারজন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এরা সকলেই ভিন্ রাজ্য থেকে ফিরেছিলেন। আক্রান্তদের পাঁশকুড়া করোনা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।’’

পরিযায়ী শ্রমিকেরা জেলায় ফেরার পর থেকেই লাফিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। কিন্তু তাঁদের এলাকায় এই শ্রমিকদের একাংশ করোনা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন বলে অভিযোগ করেছেন পাঁশকুড়াবাসী। আবার অনেকে, নিয়ম না মেনে প্রাথমিক, হাইস্কুল, এমনকী ক্লাবঘরে দল বেঁধে নিভৃতবাসে থাকছেন। পাঁশকুড়ার বাসিন্দা তথা প্রাক্তন সিপিআই বিধায়ক চিত্তরঞ্জন দাসঠাকুর বলেন, ‘‘যেসব পরিযায়ী শ্রমিকরা বাড়িতে ফিরেছেন তাঁদের উপরে স্বাস্থ্যকর্মীদের নজর নেই। ওঁরা যেখানে ইচ্ছে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এরকম চলতে থাকলে এবার তো গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়ে যাবে।’’

স্কুলগুলিতে নিভৃতাবাসে থাকা প্রসঙ্গে মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘আমরা বাড়িতে নিভৃতবাসে থাকার উপরে জোর দিচ্ছি। তবে অনেকে স্কুল-ক্লাবে থাকছেন। এতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা বাড়ছে।’’

অন্যদিকে, এগরা মহকুমায় নতুন করে আক্রান্তের খোঁজ মিললেও আমজনতার হুঁশ নেই। এ দিন সকালেও খাস পটাশপুর থানার সামনে ঝালমুড়ি দোকানে ভিড় জমাতে দেখা গিয়েছে খুদেরা। তাদের মধ্যে নেই মাস্ক এবং ন্যূনতম সামাজিক দূরত্বের বিধিনিষেধ। ভিড় সামাল দিতে প্রশাসনের উদাসীনতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন পটাশপুরবাসী। এ ব্যাপারে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার ইন্দিরা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দোকান খোলা নিয়ে কোনও বিধিনিষেধ নেই। সবাইকে সামাজিক দূরত্ব মানতে এবং মাস্ক পরতে বলা হয়েছে। যেখানে লকডাউন অমান্য করার অভিযোগ উঠেছে, সেখানে দ্রুত পদক্ষেপ করা হবে নেওয়া হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement