জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে ঘাটাল থানা। নিজস্ব চিত্র
ঘাটাল থানায় সংক্রমণ বেড়েই চলছে। শনিবার রাতে আসা রিপোর্টে সেখানে নতুন করে পাঁচ পুলিশ কর্মী সংক্রমিত হয়েছেন। ওই থানার এক গাড়ির চালকও আক্রান্ত হয়েছেন।
মহকুমা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ঘাটাল থানায় এখনও পর্যন্ত ২৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন। পুরো ঘাটাল মহকুমায় সংক্রমিত পুলিশ কর্মীর সংখ্যা ৪৩। সংক্রমণ বাড়তে থাকায় রবিবার থেকে দাসপুর শহরের আনাজ বাজার সাতদিনের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক জানান, শনিবার ঘাটাল-দাসপুরে নতুন করে ১০ জনের করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ ও ২০ জনের অমীমাংসিত এসেছে। এই নিয়ে মহকুমায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭১৫। তার মধ্যে এখন সক্রিয় রোগীর সংখ্যা হল ১৮৫।
সংক্রমণ ছড়াচ্ছে চন্দ্রকোনাতেও। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এখন সেখানে ২২ জন সক্রিয় করোনা রোগী রয়েছেন। তিন জন কর্মী আক্রান্ত হওয়ায় চন্দ্রকোনা-১ ব্লকের জাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি দাসপুর শহর ও বাজার লাগোয়া এলাকায় অনেকে আক্রান্ত হয়েছেন। দাসপুর শহর-সহ লাগোয়া এলাকায় আংশিক লকডাউন চলছে। শনিবার রাতের রিপোর্টে চন্দ্রকোনা রোডেও নতুন করে এক নাবালিকা-সহ তিন জন পজ়িটিভ হয়েছেন।
রেলশহর খড়্গপুরেও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। সংক্রমণ মোকাবিলায় এলাকা ভিত্তিক র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষার কথা জানিয়েছে প্রশাসন। তবে বাস্তবে শহরের বিক্ষিপ্ত এক-দু’টি ওয়ার্ড ছাড়া গণ্ডিবদ্ধ এলাকাতেও র্যাপিড পরীক্ষা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার ও শনিবার রাতে আসা রিপোর্ট মিলিয়ে খড্গপুর শহরের ২৭ জন নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তারমধ্যে শুক্রবার রাতে ১৩ জন ও শনিবার রাতে ১৪জনের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। খড়্গপুর শহর-সহ মহকুমায় দু’দিনে নতুন করে সংক্রমিতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬০ জন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, দিন কুড়ি আগেও শহরে দিনে গড়ে ২-৩ জন করে আক্রান্ত হচ্ছিলেন। এখন সেই গড় ১০ জনে পৌঁছেছে। মাঝে বন্ধ থাকার পরে রেল যোগে আক্রান্তের খোঁজও ফের মিলতেশুরু করেছে। গত দু’দিনের আক্রান্তের মধ্যে ১১ জন রেল যোগে আক্রান্ত হয়েছেন। গত কয়েকদিন ধরে সুভাষপল্লি, শ্রীকৃষ্ণপুর, খরিদা, ইন্দা, সাউথসাইড, মালঞ্চ, ঝাপেটাপুর এলাকায় সংক্রমণ বেড়েছে।
পুরসভা সূত্রে খবর, গত শুক্রবার রাতের রিপোর্টে দেবলপুরে ২ জন ও সুভাষপল্লি, খরিদা, শ্রীকৃষ্ণপুর, রেল কলোনি, মালঞ্চ, সোনামুখি, ইন্দা, গাটারপাড়া, বারবেটিয়া, ঝাপেটাপুর, পুরীগেটে ১ জন করে আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। শনিবার রাতের রিপোর্টে খরিদায় ৩ জন, মালঞ্চে ২ জন ও সুভাষপল্লি, ছোটট্যাংরা, সারদাপল্লি, নিমপুরা রেলকলোনি, সাউথসাইড, রাখাজঙ্গলের ১ জন করে আক্রান্ত হয়েছেন।
ওই এলাকাগুলিতে র্যাপিড পরীক্ষা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। চাপের মুখে পড়ে রবিবার শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করে পুরসভা। পুরপ্রশাসক প্রদীপ সরকার বলেন, “মানুষ সচেতন হচ্ছেন না। তাই শহরে সংক্রমণ বাড়়ছে। এর জেরে আমরা উদ্বিগ্ন সংক্রমণ মোকাবিলায় আমরা বোর্ড মিটিং ডেকে র্যাপিড পরীক্ষার কথা বলেছিলাম। সেই কাজ শুরু হল। প্রতিটি ওয়ার্ডে এই পরীক্ষা হবে।”