শালবনির করোনা হাসপাতাল (লেভেল- ৪)।
করোনা আক্রান্তের ‘চাপ’ বাড়তে পারে। সেই মতোই নানা পরিকাঠামোয় ঢেলে সাজা হচ্ছে শালবনির করোনা হাসপাতাল (লেভেল- ৪)। শালবনি সুপার স্পেশালিটিকেই করোনা হাসপাতালে রূপান্তরিত হয়েছে। পাঁচতলা ভবনের প্রতিটি তলাতেই করোনা চিকিৎসার পরিকাঠামো থাকবে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক রশ্মি কমল মানছেন, ‘‘শালবনির ওই হাসপাতালে কোভিড চিকিৎসার সব রকমের ব্যবস্থাই থাকবে। প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে।’’ জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘ওখানে আপৎকালীন পরিস্থিতি সামলানোর ব্যবস্থা থাকবে।’’
এক সময় মেদিনীপুরে দু’টি করোনা হাসপাতাল গড়া হয়েছিল। লেভেল-১ এবং ২। তবে এই দুই হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত নয়, শুধু সন্দেহভাজনদেরই চিকিৎসার সিদ্ধান্ত হয়। তখন পশ্চিম মেদিনীপুরের করোনা আক্রান্তদের পাঠানো হত পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় লেভেল-৪ বড়মা করোনা হাসপাতালে। পরে বড়মায় পশ্চিম মেদিনীপুরের রোগী ভর্তি বন্ধ হয়। শালবনি সুপার স্পেশালিটিকে লেভেল-৪ করোনা করোনা হাসপাতালকে রূপান্তরিত করা হয়। প্রথম পর্যায়ে এখানে প্রায় ৫০টি (খাতায় কলমে ৪৭টি) শয্যা চালু হয়েছে। এখন জেলার করোনা আক্রান্তদের এখানেই ভর্তি করা হচ্ছে। ১ জুলাই থেকে মেদিনীপুরের লেভেল-২ হাসপাতালটি বন্ধ হচ্ছে। ফলে, রোগীর ‘চাপ’ বাড়তে পারে শালবনিতে। সব দিক দেখে শয্যা বাড়ানো হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘জেলাস্তরে এক বৈঠকে আলোচনার ভিত্তিতে খসড়া হয়েছে। শালবনির হাসপাতালে ১৪৪টি শয্যার বন্দোবস্ত করা হচ্ছে।’’
উপসর্গহীন ও উপসর্গ যুক্ত করোনা রোগী, সারি রোগীদের জন্য পৃথক শয্যার বন্দোবস্ত হচ্ছে। থাকছে পুরুষ ও মহিলাদের আলাদা বিভাগ। আইসিসিইউ (ইনটেনসিভ ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট), এইচডিইউ (হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট), ডায়ালিসিস ইউনিট— থাকছে। পাইপ লাইনের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, এখানে চারটি ভেন্টিলেটর আনা হচ্ছে। এর মধ্যে দু’টি পোর্টেবল ভেন্টিলেটর। তিনটি ভেন্টিলেটর আসবে লেভেল-২ করোনা হাসপাতাল থেকে। একটি ভেন্টিলেটর আসবে লেভেল-১ হাসপাতাল থেকে।
কোথায়, কী
• একতলা: ২৫ শয্যা করোনা-সন্দেহভাজন এবং সারি রোগীদের জন্য
• দোতলা: পরবর্তী সময়ে কিছু শয্যা রাখা হবে
• তিনতলা: ৫০ শয্যা (পুরুষ ২৫, মহিলা ২৫) উপসর্গহীন এবং সামান্য উপসর্গযুক্ত করোনা আক্রান্তদের জন্য
• চারতলা: ১০ শয্যার আইসিসিইউ, ১০ শয্যার এইচডিইউ, ২ শয্যার ডায়ালিসিস ইউনিট
• পাঁচতলা: ৪৭ শয্যা (পুরুষ ২৫, মহিলা ২২) উপসর্গহীন এবং সামান্য উপসর্গযুক্ত করোনা আক্রান্তদের জন্য
জেলা স্বাস্থ্যভবনের এক সূত্রে খবর, লেভেল-৪ হাসপাতালে অন্তত ২৩ জন চিকিৎসক থাকার কথা। এর মধ্যে মেডিক্যাল অফিসার (ফিজিসিয়ান) বা মেডিক্যাল অফিসার (চেস্ট মেডিসিন) ৫ জন, মেডিক্যাল অফিসার (পেডিয়াট্রিক) ২ জন এবং জেনারেল ডিউটি মেডিক্যাল অফিসার (জিডিএমও) ১৬ জন। পাশাপাশি, ৪ জন সিস্টার ইনচার্জ থাকার কথা। ৩৮ জন স্টাফ নার্স থাকার কথা। প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফার্মাসিস্ট, টেকনিশিয়ান থাকার কথা। মেদিনীপুর মেডিক্যালের যে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা লেভেল-২ তে কর্মরত রয়েছেন, তাঁদের শালবনিতে পাঠানো হচ্ছে। এখন শালবনিতে ৫৪ জন চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন। এখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও আসার কথা।