প্রতীকী ছবি।
আশঙ্কাই সত্যি হল। ৭২ জন কনস্টেবলের রিপোর্ট ছিল অমীমাংসিত। মঙ্গলবার রাতে জানা গেল, তাঁদের মধ্যে ৪০ জনই করোনা আক্রান্ত। সবমিলিয়ে সালুয়ায় আক্রান্ত কনস্টেবলের সংখ্যা পৌঁছল ৮৬-তে।
রেলশহরে আরও ৮ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। বেলদায় এক পুলিশ আধিকারিকের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। সবং ব্লকে আবার একসঙ্গে তিনজন আক্রান্ত হয়েছেন।
রবিবার থেকে সোমবারের মধ্যে খড়্গপুর শহরের উপকন্ঠে সালুয়া ইএফআর ক্যাম্পের প্রশিক্ষণ শিবিরে রাজ্য পুলিশের প্রশিক্ষণরত ৪৫জন আক্রান্ত হয়েছেন। বন্ধ হয়ে গিয়েছে প্রশিক্ষণ। ইতিমধ্যে নেগেটিভদের ফেরত তাঁদের জেলায় পাঠানো শুরু হয়েছে। সোমবার রাতে নতুন করে ৭২ জন কনস্টেবলের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট অমীমাংসিত আসে। এতেই দেখা দেয় আশঙ্কা। কারণ, এর আগে পুল টেস্টে ৬৩ জনের অমীমাংসিত রিপোর্টের পরে পৃথক পরীক্ষায় ৪৫ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। আশঙ্কা সত্যি করে ৭২ জনের মধ্যে ৪০ জন করোনা আক্রান্ত হলেন।
সংক্রমণ ঊর্ধবগতি নিয়েছে খড়্গপুর শহর ও সংলগ্ন এলাকায়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, এ দিন রাতে আসা রিপোর্ট অনুযায়ী শহরের আরপিএফ ব্যারাকের সাতজন ও সুভাষপল্লি এলাকার একজন করোনা পজ়িটিভ হয়েছে। আগেই আক্রান্ত আরপিএফ জওয়ানদের সরাসরি সংস্পর্শে এসেছিলেন ব্যারাকের ওই সাতজন। ওড়িশা ফেরত সুভাষপল্লির এক যুবক দিন দুয়েক আগে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাঁর পরিবারের এক তরুণী এ দিন পজ়িটিভ হয়েছেন। অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস পাল বলেন, “সালুয়া এবং খড়্গপুর শহর মিলিয়ে ৪৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন।’’
অবশ্য এখন হুঁশ ফিরছে না রেলশহরে। অভিযোগ, পুর-প্রশাসক তথা বিধায়ক প্রদীপ সরকারের নিজের ২০নম্বর ওয়ার্ডের সুভাষপল্লিতে গণ্ডিবদ্ধ এলাকার মধ্যে চলছে মদের ঠেক। যদিও পুলিশের দাবি, সোমবার রাতেই ৭জনকে ওই মদের ঠেক থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বেলদা থানার জোড়াগেড়িয়া ফাঁড়ির এক এসআই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ওই পুলিশ আধিকারিকের গত ৯জুলাই করোনা উপসর্গ দেখা যায়। গত ১১ জুলাই দাঁতন ২ ব্লকের খণ্ডরুই গ্রামীণ হাসপাতালে নমুনা সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য দফতর। সোমবার সন্ধ্যায় আধিকারিকের রিপোর্ট 'পজ়িটিভ' আসে। পুলিশ আধিকারিক করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর জোড়াগেড়িয়া ফাঁড়ি সিল করেছে পুলিশ। ওই পুলিশ আধিকারিকের সংস্পর্শে আসা চল্লিশজন পুলিশকর্মীকে নিভৃতাবাসে পাঠানো হয়েছে। ফাঁড়ির পাশে থাকা কয়েকটি পরিবারকে সতর্ক করা হয়েছে। চালু হয়েছে হোম ডেলিভারি। ফাঁড়িতে ঢোকা, বেরানো নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশের নজরদারি চলছে। পুলিশ জানিয়েছে, ফাঁড়ির যাবতীয় কাজ এখন বেলদা থানা থেকেই হবে।
সবংয়ে একদিনে তিনজন আক্রান্ত হয়েছে। গণ্ডিবদ্ধ হয়েছে চাউলকুড়ি, গৌরবাড় ও দেভোগ এলাকা। বাণিজ্যিক জাহাজে কর্মরত চাউলকুড়ির এক যুবক লকডাউনের আগে বাড়িতে ফিরেছিলেন। সম্প্রতি কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার আগে করোনা পরীক্ষা করিয়েছিলেন। তাতেই তিনি করোনা পজেটিভ বলে জানা গিয়েছে। আবার দেভোগে যিনি আক্রান্ত হয়েছেন তিনি বাগনানে ফুচকা বিক্রি করেন। দিন দশেক আগে বাড়িতে ফিরেছিলেন। সম্প্রতি উপসর্গ দেখা যাওয়ায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তার পরেই এ দিন তিনি করোনা আক্রান্ত বলে জানা যায়। অন্যদিকে গৌরবাড়ের যুবক বাড়িতেই ছিলেন। সম্প্রতি তাঁর উপসর্গ দেখা যাওয়ায় করোনা পরীক্ষা হতে তিনিও সোমবার রাতে করোনা আক্রান্ত বলে রিপোর্ট আসে।