বীরসিংহ গ্রামীণ হাসপাতালে স্প্রে করা হচ্ছে জীবাণুনাশক। নিজস্ব চিত্র
ফের চিকিৎসাধীন এক রোগী আক্রান্ত হলেন বীরসিংহ গ্রামীণ হাসপাতালে। দু’দিন আগেই ওই হাসপাতালের আরেক রোগী করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন। আশঙ্কা বাড়িয়ে ওই হাসপাতালের আট জন স্বাস্থ্যকর্মীর করোনা রিপোর্ট অমীমাংসিত এসেছে। নতুন করে রোগী আক্রান্তের জেরে মঙ্গলবার ফের ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগ-সহ অনান্য পরিষেবা বন্ধ হলেও প্রসূতিদের ফেরানো হয়নি। তবে ঘাটাল সুপার স্পেশালিটিতে প্রসূতি ফেরানোর অভিযোগ এসেছে।
করোনা কালে কোনও সরকারি হাসপাতালে প্রসূতি মহিলাদের ফেরানো যাবে না বলে স্বাস্থ্য ভবনের তরফে নির্দেশ জারি করা হয়েছে। তারপরেও মঙ্গলবার ঘাটাল সুপার স্পেশালিটির প্রসূতি বিভাগে ভর্তি হতে আসা রোগী ফেরানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। চালু হয়নি প্রসূতি বিভাগের অপারেশন থিয়েটারও। ক’দিন আগে ওই হাসপাতালে এক চিকিৎসক আক্রান্ত হওয়ায় স্ত্রী ও প্রসূতি বিভাগে রোগী ভর্তিতে রাশ টানা হয়। সেটাই এখনও চলছে।
মঙ্গলবার ঘাটাল সুপার স্পেশালিটিতে এসেও ভর্তি হতে না পারা কয়েকজনের ক্ষোভ, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী টিভিতে বারবার ঘোষণা করছেন যে প্রসূতিদের ফেরানো যাবে না। কিন্তু তারপরেও এখানে সেটা হচ্ছে। ভারপ্রাপ্ত সুপারকে তো হাসপাতালে পাওয়াই যায় না। কোথায় অভিযোগ করব?” ভারপ্রাপ্ত সুপার দুর্গাপদ রাউতকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাইচন্দ্র মণ্ডলের অবশ্য দাবি, “প্রসূতি মহিলাদের কোথাও ফেরানো হয়নি। ঘাটাল সুপার স্পেশালিটিতেও প্রসূতি বিভাগে ভর্তি স্বাভাবিক করা হয়েছে।”
অন্যদিকে, সোমবার চালুর পরে ফের পরিষেবায় রাশ টানা হল বীরসিংহ হাসপাতালে। শনিবার সেখানে রাধানগর গ্রামের এক রোগী আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেই সূত্রে ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগ-সহ যাবতীয় পরিষেবা বন্ধই ছিল। সোমবার থেকে জরুরি বিভাগে রোগী ভর্তি শুরু হয়। কিন্ত ওই রাতেই এক মহিলা রোগীর করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। রবিবার তাঁর লালারস নেওয়া হয়েছিল। বীরসিংহ গ্রামীণ হাসপাতাল সূত্রের খবর, নতুন করে যিনি আক্রান্ত হয়েছেন তিনি ঘাটালের মূলগ্রামের বাসিন্দা। দিন দুই আগে জ্বর-শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। করোনাকালে একটি গ্রামীণ হাসপাতালের পরিষেবা প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আতান্তরে পড়েছেন ঘাটালের সাধারণ মানুষ।
ঘাটালের বিএমওএইচ মনোজিৎ বিশ্বাস বলেন, “বীরসিংহ হাসপাতালের আসা প্রসূতিদের করোনা পরিস্থিতির কথা জানিয়ে ভর্তি নেওয়া হচ্ছে। বাদবাকি পরিষেবা আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। হাসপাতালে জীবাণুমুক্ত করার কাজ চলছে।’’ তিনি জানান, হাসপাতালে ভর্তি থাকা সমস্ত রোগীর করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে।
বীরসিংহের ওই রোগী-সহ ঘাটাল মহকুমায় নতুন করে ন’জন আক্রান্ত হয়েছেন। সোমবার রাতেই সবকটি রিপোর্ট আসে। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে দাসপুরে সাত জন, ঘাটাল ও চন্দ্রকোনায় একজন করে আছেন। তাঁদের মেদিনীপুরের আয়ুস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)