Coronavirus

পরীক্ষা কেন্দ্রেও করোনায় উদ্বেগ

পরীক্ষার্থীদের অনেকেই মাস্ক পরেছিলেন, অনেকে নাক-মুখ ঢেকেছিলেন রুমালে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২০ ০১:১৬
Share:

হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া কারও মুখেই নেই মাস্ক। খড়্গপুর ইন্দা গার্লস স্কুলে। সোমবার। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

ভিতরে পরীক্ষা দিচ্ছে ছেলেমেয়েরা। বাইরে উদ্বেগে অভিভাবকেরা। প্রশ্ন সহজ না কঠিন তা নিয়ে চিন্তা নয়, দুর্ভাবনার মূলে করোনাভাইরাস।

Advertisement

করোনাভাইরাসের জেরে রাজ্য সরকার ৩১ মার্চ পর্যন্ত সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করেছে। তবে উচ্চ মাধ্যমিক ও একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা সূচি অনুযায়ীই চলবে। এই ঘোষণার পরে সোমবার ছিল উচ্চ মাধ্যমিকের বিজ্ঞান বিভাগে জীববিদ্যা এবং কলাবিভাগের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরীক্ষা। পরীক্ষার্থীদের অনেকেই মাস্ক পরেছিলেন, অনেকে নাক-মুখ ঢেকেছিলেন রুমালে। পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলা জুড়ে পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে দেখা গিয়েছে উদ্বিগ্ন অভিভাবকদের।

গড়বেতা হাইস্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থী অনুপম সিংহ রায়ের পরীক্ষা কেন্দ্র হল ব্যানার্জিডাঙা হাইস্কুল। ছেলেকে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকিয়ে বাইরে বসেছিলেন বাবা অসীম সিংহরায়। গড়বেতা ১ পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ অসীম বললেন, ‘‘প্রশ্নপত্র যাই হোক, করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়েই এখন চিন্তা।’’ গোয়ালতোড় হাইস্কুলে পরীক্ষা দিচ্ছে পিংবনি হাইস্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। এক অভিভাবক মিতা মাহাতোর আবার দুশ্চিন্তা, ‘‘পরীক্ষার হলে হাঁচলে-কাশলে মেয়েকে না অন্যত্র বসিয়ে দেয়!’’

Advertisement

খড়্গপুর শহরের বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেল মাস্কের ব্যবহার প্রায় হচ্ছেই না। নেই স্যানিটাইজার। একই ক্লাসঘরে সামান্য দূরত্বে বসেই পরীক্ষা দিয়েছেন পরীক্ষার্থীরা। হিজলি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রবিশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাজারে স্যানিটাইজার, মাস্ক কিছুই পাওয়া যাচ্ছেনা। যতটা সম্ভব সকল পরীক্ষার্থীকে সচেতন করেছি।” অতুলমণি স্কুলের টিচার ইন-চার্জ মানসকুমার মাইতিও বলেন, “আমরা একজন শিক্ষককে পাঠিয়েছিলাম মাস্ক ও স্যানিটাইজার আনতে। কিন্তু তিনি পাননি।” আর্য বিদ্যাপীঠে পরীক্ষা দিতে আসা ইন্দা কৃষ্ণলাল শিক্ষা নিকেতনের ছাত্রী অন্তরা মান্না, তন্ময় পাত্ররা বলছিলেন, “পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে করোনা সতর্কতায় কিছুই হয়নি।” পরীক্ষা কেন্দ্রের জন্য মাস্ক বা স্যানিটাইজারের কোনও পরিকল্পনা স্বাস্থ্য দফতরের নেই বলেই জানিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা।

ঝাড়গ্রামেও অধিকাংশই মাস্ক ছাড়াই এসেছিলেন। ঝাড়গ্রামের এক অভিভাবক প্রণবানন্দ চন্দ্র বলছিলেন, ‘‘বাজারে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার পাওয়া যাচ্ছে না। পরীক্ষা কেন্দ্রে কয়েকশো পরীক্ষার্থী। এই পরিস্থিতিতে করোনা থেকে কী ভাবে নিরাপদ থাকা যাবে?’’ ঝাড়গ্রাম কুমুদকুমারী ইনস্টিটিউশনে উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষা কেন্দ্র হয়েছে। এই স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিরঞ্জন মান্না বলেন, ‘‘পরীক্ষার্থীদের কেউ সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত কি-না নজর রাখা হচ্ছে। তবে এখনও তেমন কোনও পরীক্ষার্থী নজরে পড়েনি।’’ স্কুল শিক্ষা দফতর থেকে পাঠানো স্বাস্থ্যবিভাগের পোস্টারও এই পরীক্ষাকেন্দ্রের বিভিন্ন জায়গায় সাঁটানো হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement