Coronavirus

আক্রান্তের গোটা গ্রাম যেন গৃহবন্দি

দাসপুরের ওই গ্রামের এক যুবক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তারপরই যেন আমূল বদল। গ্রামটি সিল করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ঘাটাল শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২০ ০৩:০২
Share:

দাসপুরের গ্রামে ছড়ানো হচ্ছে জীবাণুনাশক। নিজস্ব চিত্র

রাতারাতি পাল্টে গিয়েছে গ্রাম। চারদিক সুনসান। সংক্রমণের আশঙ্কায় তটস্থ হয়ে রয়েছেন গ্রামবাসীরা।

Advertisement

দাসপুরের ওই গ্রামের এক যুবক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তারপরই যেন আমূল বদল। গ্রামটি সিল করা হয়েছে। গ্রামের চারপাশে বসানো হয়েছে পুলিশি পাহারা। গোটা গ্রামই যেন কার্যত গৃহবন্দি। নিজেদের এই অবস্থার কথা জানিয়ে ভুক্তভোগীদের আর্জি, তাঁদের দেখে শিক্ষা নিক অন্য সমস্ত গ্রাম। অনেকে আবার বলছেন, ভিন রাজ্য থেকে ফেরা যুবকেরা যাতে বাইরে ঘুরে বেড়ানোর সাহস না পায়,তার দায়িত্ব নিক এলাকার মানুষই। এর অন্যথা হলে ঘরে বসে মৃত্যুর দিন গোনা ছাড়া বিকল্প পথ নেই। গ্রামের বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক শান্তনু বর বলেন, ‘‘পাখির ডাক ছাড়া কিছুই শুনতে পাচ্ছি না। মনে হচ্ছে পরাধীন। ভিন রাজ্য থেকে যাঁরা ফিরেছেন তাঁদের আরও সংযত হওয়া উচিত। তা না হলেও আরও খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হতে পারে।’’

কৃষি প্রধান গ্রামটিতে ১৫৫টি পরিবার রয়েছে। বাসিন্দার সংখ্যা হাজার তিনেক। গোষ্ঠী সংক্রমণ ঠেকাতে মঙ্গলবার গ্রামের বাসিন্দারা যে যেখানে ছিলেন, সেই অবস্থাতেই ঘরবন্দি করা হয় তাঁদের। সেই থেকে অধিকাংশ ঘরের দরজাও বন্ধ। আতঙ্কে কেউ কারও সঙ্গে কথা পর্যন্ত বলছেন না। পরিস্থিতি দেখে, বাইরে বেরোনোর ভয়ে গ্রামের অনেকেই পানীয় জলেও রাশ টেনেছে। গ্রামের পুকুরের জলে স্নান করতেও ভয় পাচ্ছেন অনেকে। বুধবার গ্রামে গিয়ে জীবাণুনাশক স্প্রে করেন দমকলকর্মীরা। ঘাটালের মহকুমা পুলিশ অফিসার অগ্নিশ্বর চৌধুরী বলেন, “গ্রামের কারও কিছু প্রয়োজন হলে পুলিশ তা পৌঁছে দিচ্ছে। গ্রামে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তাঁদের ফোন নম্বর প্রতি বাড়িতে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।” অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দুর্গাপদ রাউত বলেন, “স্বাস্থ্যকর্মীরা থার্মাল স্ক্যানার নিয়ে এলাকায় ঘুরছেন। প্রয়োজনে তাপমাত্র মাপা হচ্ছে। নতুন করে কারও কোনও উপসর্গ ধরা পড়েনি।’’

Advertisement

মঙ্গলবার দাসপুরের যুবকের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ার পর অবশ্য গোটা দাসপুর-ঘাটাল জুড়ে মিশ্র ছবি সামনে এসেছে। ভিড় এড়াতে দাসপুরের লঙ্কাগড় সহ একাধিক বাজার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিক্ষিপ্ত ভাবে বেশ কিছু এলাকায় রাস্তায় পাহারা দিচ্ছেন স্থানীয় যুবকেরা। যাতায়াত কমাতে কংসাবতী, শিলাবতী নদী সহ খাল গুলিতে স্থানীয় ভাবে অস্থায়ী বাঁশের সাঁকো খুলে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে আবার মাচায় বসে তাস, জুয়ার আসরও সমানে চলছে। মদ কিনতে ঘাটালের রাস্তায় বাইক নিয়ে ছুটছে ভিন রাজ্য থেকে ফিরে আসা যুবকদের একাংশ। কোথাও কোথাও ফাঁকা মাঠ কিম্বা গ্রামীণ ঝোপ জঙ্গলে বাঁশের কাঠামো করে আড্ডা মারার জায়গা গড়ে তোলা হয়েছে। হুঁশ ফেরা দূর, পিকনিক মুডেই রয়েছেন অনেকেই। শিকেয় উঠেছে লকডাউন-সচেতনতা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement