প্রতীকী ছবিc
তিন মেদিনীপুরেরই করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা এ বার থেকে হবে পূর্ব মেদিনীপুরে। এ জন্য পূর্ব মেদিনীপুরের একটি করোনা হাসপাতালকে চিহ্নিতও করা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে যদি কেউ করোনা পজ়িটিভ হন, তাঁকে দ্রুত পাশের জেলার ওই হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে।
সূত্রের খবর, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পরামর্শে ইতিমধ্যে জেলাস্তরে এ ব্যাপারে নির্দেশিকা জারি হয়েছে। নির্দেশিকা পৌঁছেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের দুই করোনা হাসপাতালে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরার স্বীকারোক্তি, ‘‘মেদিনীপুরে দু’টি করোনা হাসপাতাল চালু হয়েছে। ওই দুই হাসপাতালে কয়েকজন ভর্তিও রয়েছেন। তাঁদের চিকিৎসা চলছে। যাঁর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ আসবে, তাঁকে পূর্ব মেদিনীপুরের একটি করোনা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হবে। ওই হাসপাতালেই তাঁর চিকিৎসা হবে।’’
বস্তুত, ঝাড়গ্রামের জন্য পৃথক কোনও করোনা হাসপাতাল আপাতত হচ্ছে না। পশ্চিম মেদিনীপুরের করোনা হাসপাতালেই ঝাড়গ্রামের সন্দেহভাজন রোগীদের চিকিৎসা হবে। ফলে, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম— দুই জেলার করোনা আক্রান্তদেরই চিকিৎসা হবে পূর্ব মেদিনীপুরের ওই হাসপাতালে। এতদিন জেলার করোনা আক্রান্তদের বেলেঘাটা আইডি বা কলকাতার অন্য কোনও করোনা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হচ্ছিল। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের তিনজন করোনা আক্রান্তও বেলেঘাটা আইডি-তে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মেদিনীপুর থেকেই তাঁদের বেলেঘাটা পাঠানো হয়েছে। সূত্রের খবর, আগামীতে আর মেদিনীপুর থেকে কাউকে বেলেঘাটায় পাঠানো হবে না। পাঠানো হবে পূর্ব মেদিনীপুরে। পরিবর্তিত এই সিদ্ধান্ত জেলার ব্লকগুলিকেও জানানো হয়েছে।
করোনা হাসপাতালগুলিকে চারটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে— লেভেল ১, ২, ৩ এবং ৪। মেদিনীপুরে দু’টি করোনা হাসপাতাল হয়েছে। এর মধ্যে খাসজঙ্গলের আয়ুষ হাসপাতালটি লেভেল-১, মোহনপুরের গ্লোকাল হাসপাতালটি লেভেল- ২ শ্রেণিভুক্ত। লেভেল ১ এবং ২-তে সন্দেহভাজনেরা ভর্তি থাকবেন। আর করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা হবে লেভেল-৩ এবং ৪-এ।
জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার মেচগ্রামের বড়মা হাসপাতালকে লেভেল-৩ এবং ৪ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। করোনা পজ়িটিভ কিন্তু উপসর্গ তুলনায় কম, এমন রোগীদের লেভেল-৩-তে রাখার কথা। আর করোনা পজ়িটিভ কিন্তু উপসর্গ তুলনায় বেশি, এমন রোগীদের লেভেল-৪-এ রাখার কথা। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক মানছেন, ‘‘পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার ওই হাসপাতাল লেভেল-৩ এবং ৪, দু’টি শ্রেণিভুক্ত হিসেবেই চিহ্নিত হয়েছে।’’ করোনা পজ়িটিভ রোগীর যে কোনও সময় ভেন্টিলেশন প্রয়োজন হতে পারে। ওই হাসপাতালে আইসিসিইউ, ভেন্টিলেটর, ডায়ালিসিস সব পরিষেবাই রয়েছে। পাঁশকুড়ার ওই হাসপাতালে ১৮০টি শয্যার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। জেলাস্তরে জারি হওয়া নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, মেদিনীপুর থেকে করোনা আক্রান্তদের স্থানান্তরের সময়ে স্থানান্তর করার বিষয়টি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং বড়মা হাসপাতালের সুপারকে জানাতে হবে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এই কঠিন সময়ে তিন জেলা (দুই মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম) একযোগে কাজ করছে। পারস্পরিক যোগাযোগ রেখেই যাবতীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’