প্রতীকী ছবি।
ওড়িশায় গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হলেন দাঁতনের এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। সেই সূত্রে বৃহস্পতিবার দাঁতন-২ ব্লকের সাউরির বাসিন্দা বছর সত্তরের ওই বৃদ্ধের পরিবারকে কোয়রান্টিনে রাখার ব্যবস্থা হয়েছে। রাতের মধ্যেই তাঁদের নারায়ণগড়ের মকরামপুরে কোয়রান্টিন কেন্দ্রে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় স্বাস্থ্য দফতর।
বুধবার চিকিৎসার জন্য ওড়িশার ভুবেনেশ্বরে গিয়েছিলেন মাস কয়েক আগে ব্রেন টিউমার অপারেশন হওয়া ওই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। সেখানেই তাঁর করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে বলে এ দিন জানতে পারে প্রশাসন। এর পরেই তাঁর নিকট আত্মীয় ও যে অ্যাম্বুল্যান্সে তিনি ওড়িশায় গিয়েছিলেন, তার চালককে কোয়রান্টিনে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে ওই বৃদ্ধ কী সূত্রে আক্রান্ত হয়েছেন তা নিয়ে শোরগোল পড়েছে জেলায়। খড়্গপুরের অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস পাল বলেন, “আমরা সরকারিভাবে এখনও ওই বৃদ্ধ করোনা আক্রান্ত বলে জানতে পারিনি। তবে ওড়িশার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সূত্রে জানতে পেরেছি দাঁতন-২ ব্লকের ওই বৃদ্ধের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ হয়েছে। ওঁর মেয়ে তা স্বীকারও করেছেন। তাই আমরা ওই বৃদ্ধের পরিজন ও এক অ্যাম্বুল্যান্স চালককে কোয়রান্টিনে রাখার ব্যবস্থা করছি।”
গত জানুয়ারিতে দাঁতন-২ ব্লকের সাউরির বাসিন্দা ওই বৃদ্ধের ব্রেন টিউমার অপারেশন হয়। তারপর নিয়মিত ওড়িশার ভুবনেশ্বরে ওই বেসরকারি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসার জন্য যেতেন। দিন কয়েক আগে অসুস্থ হয়ে মেদিনীপুরের নার্সিংহোমে ভর্তি হন ওই বৃদ্ধ। কিছুটা সুস্থ হয়ে দিন দু’য়েক আগে বাড়ি ফিরলেও ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন। বুধবার ভোরে তাঁকে ভুবনেশ্বরে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পরেই এ দিন শোনা যায় তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।
আপাতত তাঁর বাড়ির নিকট আত্মীয়দের নারায়ণগড়ের মকরামপুর কোয়রান্টিন কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। এ ছাড়াও সাউরি বাজারের কাছে থাকা মেজো মেয়ে-জামাই, নারায়ণগড়ের বাসিন্দা ছোট মেয়ে-জামাই এবং বৃদ্ধকে ওড়িশায় নিয়ে যাওয়া অ্যাম্বুল্যান্সের চালক ও চালকের পরিবারকেও কোয়রান্টিন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে ২৪জনকে কোয়রান্টিন কেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। মেদিনীপুরে ওই বৃদ্ধের যে দুই বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা হয়েছিল, সেখানকার ৪০ জনকেও কোয়রান্টিনে পাঠানো হচ্ছে। জেলার স্বাস্থ্য কর্তারা জানতে পেরেছেন, মেদিনীপুরে চিকিৎসার আগে মার্চের শেষে বৃদ্ধ পটাশপুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে কয়েকদিন ছিলেন। এ ক্ষেত্রে এগরার আক্রান্তের সূত্র রয়েছে কিনা, চর্চা চলছে। অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস বলেন, “মেদিনীপুরে নার্সিংহোমে ভর্তির আগে বৃদ্ধ পটাশপুরে গিয়েছিলেন। কীভাবে উনি সংক্রমিত হয়েছেন সেই সূত্র খোঁজার চেষ্টা চলছে।”