প্রতীকী ছবি।
একে গণ পরিবহণ বন্ধ, সঙ্গে লকডাউন—জোড়া ফলায় চিন্তায় হলদিয়া মহকুমার স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ। প্রশ্ন একটাই, হাসপাতালে পৌঁছব কী করে!
দেশে লাফিয়ে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। এ রাজ্যে এক আক্রান্তের মৃত্যুও হয়েছে সোমবার। পরিস্থিতি সামাল দিতে এ দিন বিকেল থেকে লকডাউনের কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। কিন্তু এই সময় স্বাস্থ্য পরিষেবাকে কোনওরকম ব্যাহত করা যাবে না বলে সাফ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে স্বাস্থ্য দফতরের কাজকর্ম চলবে যথারীতি। স্বাস্থ্যকর্মীদের যোগ দিতে হবে কাজে, তাতেই আতান্তরে পড়েছেন তাঁদের একাংশ। গণ পরিবহণ বন্ধ থাকার জন্য চরম অসুবিধায় পড়তে হবে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। চিন্তায় স্বাস্থ্যকর্মীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হলদিয়ার এক স্বাস্থ্যকর্মী বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরে কাজ করলেও আমরা তো আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতোই। যেতে আসতে ভরসা পাবলিক ট্রান্সপোর্ট। আমাদেরও পরিবার রয়েছে। এই চরম সঙ্কটে পরিবারের কাছে থাকতে পারছি না, এটা যেমন দুঃখের, তেমনই হাসপাতালে যাতায়াত করব কী ভাবে, কোথায় থাকব সেটাও ভাবাচ্ছে।’’
সম্প্রতি হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে করোনা উপসর্গ নিয়ে আইসোলেশনে রয়েছেন এক ব্যক্তি। লকডাউন পরিস্থিতিতে কর্মীদের যাতায়াতের কথা ভেবে পদক্ষেপ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল সূত্রে খবর, স্বাস্থ্যকর্মীদের কথা মাথায় রেখে এই ক’দিন তাঁদের থাকার জন্য হাসপাতালে আবাসনের তিনটি কোয়ার্টার ঠিক করা হয়েছে। যাঁরা দূর থেকে আসেন, তাঁরা লকডাউনের কটা দিন এই কোয়ার্টারেই থেকে যেতে পারবেন। অন্যদিকে মধ্যে যে সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের বাস মহকুমার মধ্যেই, তাঁদের জন্য আলাদা গাড়ির ব্যবস্থা হয়েছে। হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার সুমনা দাসগুপ্ত বলেন, ‘‘এমনিতেই জ্বর-কাশি হলেই মানুষ আমাদের কাছে এই সময় আতঙ্কিত হয়ে ছুটে আসছেন। তাই স্বাস্থ্যকর্মীরা যদি ঠিক সময়ে কাজে না আসতে পারেন, তা হলে রোগীদের পরিষেবা দেওয়া মুশকিল হয়ে দাঁড়াবে। স্বাস্থ্যকর্মীদের কথা ভেবেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের হাসপাতলে আসতে যাতে অসুবিধা না হয়, সেদিকে নজর রাখা হচ্ছে।’’
মহকুমার অন্য গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্র নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের তরফে অবশ্য স্বাস্থ্যকর্মীদের আসার জন্য সে রকম কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল সূত্রে খবর, পরিবহণে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে ঠিকই। তবে বেশিরভাগ স্বাস্থ্যকর্মী আশপাশেই থাকেন। তাঁরা নিজেরাই ব্যবস্থা করে চলে আসতে পারবেন।
স্বাস্থ্যকর্মীদের যাতায়াত নিয়ে পরিকল্পনার ব্যাপারে হলদিয়ার মহকুমা শাসক অবনীত পুনিয়া বলেন, ‘‘প্রতিটি দফতর তাঁদের কর্মীদের আনার ব্যবস্থা করবে। এ নিয়ে রাজ্যের তরফে নির্দেশিকাও এসেছে। মহকুমায় করোনা নিয়ে বাসিন্দাদের সাহায্য করতে হেল্পলাইন খোলা হয়েছে। ০৩২২৪২৭৮১১০ নম্বরে ফোন করে মানুষ করোনা সম্পর্কিত সব তথ্য জানতে পারবেন।’’