ফাইল চিত্র
ভয় বড় বালাই! পর্যটকদের চেনা ছবিটা নেই দিঘার সৈকতে।
করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে ভিড়ভাট্টা জায়গা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। যার জেরে এবারের সপ্তাহান্তে দিঘার সৈকতে পর্যটকদের তেমন ভিড় নজরে পড়েনি। অন্য দিকে, কাঁথিতে করোনা-আতঙ্কে জাপান ফেরত এক ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন স্থানীয়েরা।
গত শনিবার এবং রবিবার দেখায় পর্যটকের ভিড় ছিল না বলে জানাচ্ছেন হোটেল ব্যবসায়ীরা। অনেকেই আবার দ্রুত দিঘা ছাড়ছেন। দিঘা হোটেল মালিক সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘করোনাভাইরাসের কোনও প্রভাব দিঘায় নেই। তা সত্ত্বেও পর্যটকদের একাংশ ভয়ে এখান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।’’ মন্দারমণিতে পর্যটকরা আসতে চাইছেন না বলে দাবি করেছেন সেখানকার হোটেল মালিকদের একাংশ। তাঁদের দাবি, গত সপ্তাহের শেষে দু’দিন ছুটি থাকলেও পর্যটকদের আনাগোনা একেবারেই ছিল না। চলতি সপ্তাহের ছুটিতে এখনও পর্যন্ত হোটেল সেরকম বুকিং হয়নি।
এরই মধ্যে কাঁথি-১ ব্লকের মাজনা পায়ারদ্বীপ এলাকার এক বাসিন্দা গত ১১ মার্চ জাপান থেকে বাড়ি ফিরে এসেছেন। তাঁর শরীরে করোনাভাইরাস রয়েছে, এই সন্দেহ করে রবিবার ওই ব্যক্তির বাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়েরা। কাঁথি থানার পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর ওই ব্যক্তির শরীরে ভাইরাসের লক্ষণ পাওয়া যায়নি। কাঁথি মহকুমা হাসপাতালের সুপার সব্যসাচী চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিদেশ থেকে আসার কারণে ওই ব্যক্তিকে ১৪ দিনের জন্য হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই।’’
করোনা ভাইরাসকে মহামারী হিসাবে ঘোষণা করার পরেই রেলের তরফে দিঘায় সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করা হয়েছে। গত রবিবার থেকে এক্সপ্রেস এবং লোকাল ট্রেনে যে সব পর্যটক দিঘা আসছেন, তাঁদের প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পাশাপাশি, করোনা নিয়ে সচেতনতা বার্তা দেওয়া দিচ্ছে। সড়কপথে বাংলা এবং ওড়িশা সীমানায় উদয়পুরের চেকপোস্ট এবং রামনগরের সন্তোষপুরের কাছে পর্যটকদের স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিচ্ছে। কাঁথির মহকুমাশাসক শুভময় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আন্তঃরাজ্য এলাকায় নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির চলছে। এখনও জেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে কোনও ভাইরাসের হদিস মেলেনি।’’
দিঘায় বেশ কয়েকটি হোটেলের বিদেশি পর্যটক রয়েছেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর। কলকাতা বিমানবন্দরে তাঁদের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত যে তথ্য পাওয়া গিয়েছিল, তা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে পৌঁছেছে। জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘দিঘায় সমস্ত হোটেল মালিকদের নিয়ে এই মুহূর্তে পর্যটকদের নিয়ে কী করণীয়, সে ব্যাপারে জানাতে একটি সভা ডাকা হচ্ছে। এছাড়া, এখনও পর্যন্ত উপকূলবর্তী এলাকায় চিন্তার কিছু ঘটেনি।’’