স্ত্রী মুনমুন সেনের সঙ্গে ভরত দেববর্মা। —ফাইল চিত্র।
ছোটবেলায় কোচবিহার রাজবাড়িতে দিন কাটিয়েছেন। কয়েক বছর আগেও জন্মদিনে মদনমোহন মন্দিরের প্রসাদ পৌঁছেছিল দিল্লির বাড়িতে। কোচবিহারের সঙ্গে ছিল তাঁর নাড়ির যোগ। সেই ভরত দেববর্মার প্রয়াণে শোকের আবহ উত্তরের শহরে। সুচিত্রা সেনের কন্যা, মুনমুনের স্বামী ভরতের কোচবিহারে আসার ইচ্ছেপূরণ না হওয়ার আক্ষেপও ঘুরছে অনেকের কথাতে। কোচবিহার ‘রয়্যাল ফ্যামিলি ওয়েলফেয়ার সাকসের্সস ট্রাষ্ট’ সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহারের মহারাজা জগদ্দীপেন্দ্র নারায়ণ ভূপবাহাদুরের দিদি, জ্যেষ্ঠ রাজকন্যা ইলাদেবী ও ত্রিপুরার রাজকুমার রমেন্দ্র কিশোর দেববর্মার কনিষ্ঠ পুত্র ছিলেন ভরত। ১৯৪৪ সালে ত্রিপুরায় রানি ইলাদেবীর প্রয়াণের পরে ভরত কোচবিহার রাজপ্রাসাদে তাঁর দিদিমা রাজমাতা ইন্দিরা দেবীর কাছে পালিত হন। ট্রাষ্টের মুখপাত্র কুমার মৃদুল নারায়ণ বলেন, “রাজকন্যা ইলাদেবীর সূত্রে ভরত দেববর্মা হলেন কোচবিহার রাজ পরিবারের ভাগ্নে। ছোটবেলার অনেকগুলি দিন কোচবিহার রাজবাড়িতে কাটিয়েছেন।” ইতিহাস গবেষকেরা জানান, ইলাদেবীর বাবা ছিলেন মহারাজা জিতেন্দ্র নারায়ণ , মা ইন্দিরা দেবী। তাঁদের বড় মেয়ে ছিলেন ইলাদেবী। ইলাদেবীর মৃত্যুর পরে ইন্দিরা দেবী নাবালক ভরতের সঙ্গে তাঁর বোন দেবিকাকে কোচবিহার রাজবাড়িতে নিয়ে আসেন। কোচবিহার আর্কাইভের সভাপতি ঋষিকল্প পাল জানান, ইন্দিরাদেবী কমলাদেবীকে ভরত, দেববিকাকে দেখভালের দায়িত্ব দেন। প্রাবন্ধিক দেবব্রত চাকি বলেছেন, ‘‘কোচবিহার রাজপরিবারের সঙ্গে ভরত দেববর্মাদের আত্মীয়তাও ছিল। তাঁর প্রয়াণে আমরা শোকস্তব্ধ।”
কোচবিহারের প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “আমি সাংসদ থাকার সময়ে (সম্ভবত ২০১৮ সাল) ওঁর জন্মদিনে মুনমুনদি মদনমোহন মন্দিরে পুজো দিতে বলেছিলেন। পুজোর প্রসাদও দিয়ে এসেছিলাম। স্বামীর ইচ্ছায় তুফানগঞ্জের ইলাদেবী গার্লস হাইস্কুলের জন্য আর্থিক সাহায্যও করেছিলেন দিদি।” পার্থপ্রতিমের সংযোজন, “দিল্লির বাড়িতে বসে বহু বার কোচবিহারে আসার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। সেই আক্ষেপটা থেকেই যাচ্ছে।”