ফাইল চিত্র
পুরসভার সাফাইকর্মীদের দেওয়া হয়নি উন্নত মাস্ক ও গ্লাভস এবং গামবুট। এর প্রতিবাদ করায় সাফাই কর্মীদের গালিগালাজ এবং কাজ কেড়ে নেওয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল পুরসভার সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল থেকে কাজ বন্ধ রাখে বিক্ষোভ দেখালেন পুরসভার সাফাই কর্মীরা। শেষ পর্যন্ত পুরপ্রধানের হস্তক্ষেপে কাজ শুরু করেন সাফাই কর্মীরা। ঘটনাটি এগরা পুরসভার।
এগরা পুরসভার অস্থায়ী সাফাইকর্মী হিসেবে নিয়োগ হয় ২০০৭ সাল থেকে। ধাপে ধাপে মোট ৭২ জন অস্থায়ী সাফাইকর্মী নিয়োগ হয়। পুরসভার ১৪টি ওয়ার্ডে এই সাফাই কর্মীরা প্রতিদিন দিনে দুবেলা সাফাইয়ের কাজ করেন। কিন্তু অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে কাজ করলেও তাঁদের নানা ভাবে বঞ্চিত করা হচ্ছে। সারা বছর তাঁদের কাজ করতে হয়। শরীর অসুস্থ হলেও ছুটি দেওয়া হয় না। অসুস্থতার কারণে কোনও কর্মী অনুপস্থিত থাকলে তাঁর সে দিনের মজুরি কেটে নেওয়া হয়। তা ছাড়া নেই কোনও সুরক্ষা ব্যবস্থা। খালি হাতেই নর্দমায় নেমে আবর্জচনা পরিষ্কার করতে হয় তুলতে হয়। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় ওই সাফাইকর্মীদের দামী মাস্ক, গ্লাভস এবং গামবুট পুরসভাগুলিকে দেওয়ার কথা জানানো হয় সরকারের তরফে। কিন্তু এতদিনেও সফাইকর্মীদের সেইসব সামগ্রী সরবরাহ করেনি পুরসভা। অভিযোগ সোমবার দুপুরে পুরসভার সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার চন্দন দাস সকল সাফাই কর্মীদের মাস্ক এবং স্যানিটাইজার দেওয়ার জন্য নিজের বাড়িতে ডাকেন। সাফাইকর্মীদের অভিযোগ, যে গুণমানের মাস্ক দেওয়া কথা তা না দিয়ে সার্জিক্যাল মাস্ক এবং একটি করে সাবান দেওয়া হবে বলে জানান ইঞ্জিনিয়ার। তাঁরা এর প্রতিবাদ করলে।, তাঁদের গালিগালাজ করেন ওই ইঞ্জিনিয়ার ও তাঁর পরিবারের লোকজন। এমনকী তাঁদের কাজ কেড় নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। ঘটনার পরে মাস্ক না নিয়েই ফিরে যান সাফাই কর্মীরা।
প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল থেকে সাফাইকর্মীরা কাজ বন্ধ রাখেন। দুপুরে পুরপ্রধানের হস্তক্ষেপে সাফাইকর্মীদের মাস্ক, গ্লাভস এবং গামবুট ও সাবান দেওয়া হয়। কী কারণে সাফাইকর্মীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হল তা খতিয়ে দেখা হবে বলে সাফাইকর্মীদের র আশ্বস্ত করেন পুরপ্রধান। পুর প্রধানের আশ্বাস পেয়ে ফেরে কাজে নামেন সাফাই কর্মীরা।
পুরসভার এক সাফাইকর্মী মিন্টু ধাড়া বলেন, ‘‘পুর কর্তৃপক্ষ আমাদের সঙ্গে বার বারই অবিচার করছে। আমাদের প্রাপ্য মজুরি, ছুটি দেওয়া হয়না। এ দিন মাস্ক দেওয়ার নামে আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে কাজ কেড়ে নেওয়া হুমকি দেন অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার ও তাঁর পরিবারের লোকেরা। পুরপ্রধানের আশ্বাসে আমরা কাজে যোগ দিলেও এর বিচার চাই।’’
পুরপ্রধান শঙ্কর বেরা বলেন, ‘‘সাফাইকর্মীদের দাবি মেনে তাঁদের মাস্ক-সহ যাবতীয় সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। তাঁরা ফের কাজ শুরু করেছেন। কেন তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’