Cyclone Amphan

জোড়া বিপদে ইদের খুশি ফিকে, আজ নমাজ বাড়িতেই

আজ ইদ। কিন্তু লকডাউন একটু শিথিল হওয়ায় মেদিনীপুরে কিছু দোকান খুললেও ভিড় চোখে পড়েনি। ফলের দোকানগুলিতেও ভিড় নেই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২০ ০৪:৩৮
Share:

ইদের আগের দিনও ফাঁকাই থাকল বাজার। মেদিনীপুরের নিমতলাচকে। রবিবার দুপুরে। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

করোনার পর আমপান। জোড়া ফলায় এ বার ফিকে হয়ে গিয়েছে ইদের আনন্দ। বাজার ম্যাড়মেড়ে। প্রস্তুতিতেও নেই কোনও আড়ম্বর। বসছে না ইদের মেলাও।

Advertisement

আজ ইদ। কিন্তু লকডাউন একটু শিথিল হওয়ায় মেদিনীপুরে কিছু দোকান খুললেও ভিড় চোখে পড়েনি। ফলের দোকানগুলিতেও ভিড় নেই। মেদিনীপুর ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক মলয় রায় বলেন, ‘‘প্রতি বছর ইদের কেনাকাটায় রেডিমেড পোশাকের দোকানগুলিতে ভিড় জমে। এ বার ফাঁকা।’’ তাঁর আক্ষেপ, ‘‘ইদের বাজারের এত খারাপ অবস্থা আগে কখনও দেখিনি।’’ মসজিদগুলিতে খোঁজ নিয়ে জানা যাচ্ছে, করোনা সতর্কতা মেনে কোথাও জমায়েত করে নমাজ হবে না। মেদিনীপুর টাউন মুসলিম কমিটিও লকডাউন চলায় জমায়েত এড়ানোর আর্জি জানিয়েছে। সকল মহল্লা, মসজিদ কমিটি, ইদগাহ কমিটির কাছে সহযোগিতার আর্জি জানিয়েছে তারা। ওই সংগঠনের পক্ষে আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। ইদের নমাজ বাড়িতে পড়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। জমায়েত করা যাবে না।’’ মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা, পেশায় টোটো চালক শেখ সাবিরের আক্ষেপ, ‘‘আর ইদের কেনাকাটা! সংসার চালানোই সমস্যার।’’

একই ছবি ঘাটাল মহকুমাতেও। দীর্ঘ লকডাউনে বন্ধ থাকার পর দোকান-বাজার খুললেও ইদের কেনাকাটায় ভিড় নেই। দাসপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান তথা দাসপুর ১ ব্লকের তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি সেখ গোলাম মোর্তাজা জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই নমাজ পরা হবে। গড়বেতার তিনটি ব্লক, নারায়ণগড়, বেলদা, দাঁতন, মোহনপুরেও সরকারি নির্দেশ মেনে বাড়িতেই নমাজ পড়া হবে বলে মসজিদ কমিটিগুলি জানিয়েছে। নারায়ণগড় মুসলিম কমিটির সম্পাদক সেখ মোজাফ্ফর আলি বলেন, ‘‘ইদ মানে খুশি। কিন্তু এ বার করোনা, আমপানের পর মানুষের মনে আর খুশি নেই।’’ রবিবার গড়বেতার বিধায়ক আশিস চক্রবর্তী তাঁর বিধানসভা কেন্দ্রের ৫৩টি মসজিদে গিয়ে ইমামদের ইদের শুভেচ্ছা জানিয়ে আসেন। মেদিনীপুর শহরের মসজিদগুলিতে গিয়ে ইদের আগাম শুভেচ্ছা জানিয়েছে পুরসভার প্রতিনিধি দল। এক পুর- আধিকারিক বলেন, ‘‘করোনা থেকে বাঁচতে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি। তাই বাড়িতে নমাজ পড়ার আবেদন জানানো হয়েছে।’’

Advertisement

খড়্গপুরের গোলবাজারে অবশ্য ভিন্ন চিত্র। কেনাকাটার জন্য ভিড় উপচে পড়ছে। গোলবাজার বাজার কমিটির সম্পাদক টিঙ্কু ভৌমিক বলেন, ‘‘দোকান খোলার পরে ইদের জন্য ক্রেতাদের ভিড় হওয়ায় ভালো বিক্রি হচ্ছে।’’ তবে কেনাকাটায় ভিড় হলেও নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে যাতে না ভিড় হয় তা দেখছে মসজিদ কমিটিগুলি। রেলশহরের জামা, ইদগা, পুরাতন বাজার মসজিদ কমিটি জানিয়েছে ৫-১০ জনকে নিয়ে মসজিদে নামাজ পড়া হবে। বাকিরা বাড়িতেই পড়বেন। পুরাতন বাজার মসজিদ কমিটির উপদেষ্টা মহম্মদ বিলাল বলেন, ‘‘করোনার সতর্কতা মেনে মসজিদে না এসে সকলকে নিজেদের বাড়িতেই নমাজ পড়তে বলেছি।’’ খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজি সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘মসজিদে জন্য ভিড় করা যাবে না বলে সকলকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’

ঝাড়গ্রাম জেলাতেও ইদের বিক্রিবাটা কম। জুবিলি বাজার খুললেও খদ্দের নেই। স্থানীয় পোশাক ব্যবসায়ী দেবাশিস ঘোষ বলেন, ‘‘এ বার চৈত্র সেল, পয়লা বৈশাখ, অক্ষয় তৃতীয়ায় বিক্রিবাটার সুযোগ ছিল না। ইদের আগে যদিও বা দোকান খুলল, খদ্দেরই তো নেই।’’ সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বিনপুরের দহিজুড়ি বাজারের বস্ত্র ব্যবসায়ী মহম্মদ শামিমের দাবি, ‘‘গত বছরের তুলনায় ৫ শতাংশও বিক্রি হয়নি এবার।’’ বিনপুরের বাসিন্দা আফজল খানের আক্ষেপ, অন্যান্য বছর ইদের আগে ভালো ব্যবসা হয়। এ বার কিছুই হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement