প্রায় এক মাস হতে চলল। এখনও চালু হয়নি হলদিয়া বন্দরের কনভেয়ার বেল্ট। ফলে বন্দরের ‘ইয়ার্ডে’ কয়লা জমে রয়েছে বলে বন্দর সূত্রের খবর। জট কাটাতে বন্দরের কনভেয়ার বেল্টে দায়িত্বপ্রাপ্ত গুজরাতের ঠিকাদার সংস্থা এবং শ্রমিক সংগঠনগুলিকে নিয়ে শনিবার একটি জরুরি বৈঠক হল। সেই বৈঠকে সমস্যা সমাধানের ইঙ্গিত মিলিছে বলে খবর।
বন্দর সূত্রের খবর, চলতি মাসের গোড়া থেকেই বন্দরের কনভেয়ার বেল্ট বন্ধ রয়েছে। কনভেয়ার বেল্ট মেরামতকারী চুক্তি ভিত্তিক ১৪ জন কর্মী বেতন বৃদ্ধির দাবিতে কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এর ফলে রেলের ওয়াগন বোঝাই হয়ে আসা কয়লা জাহাজে তোলা যাচ্ছে না।
উল্লেখ্য, রেলের ওয়াগন থেকে কনভেয়ার বেল্টের মাধ্যমে জাহাজে কয়লা তোলা হয়। ওই বেল্ট প্রতি মুহূর্তে ছিঁড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই তা মেরামতির জন্য ১৪ জন কর্মী রয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে স্থানীয় একটি বেসরকারি সংস্থার অধীনে ওই কর্মীরা কাজ করতেন। কিন্তু গত জুনে ওই সংস্থার চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তারপর দায়িত্ব পায় গুজরাতের একটি সংস্থা। পুরনো ঠিকা কর্মীদের কাজে রেখে দেওয়ায় সিদ্ধান্ত নেয় নতুন ঠিকাদার সংস্থা। কিন্তু শ্রমিকেরা গেট পাস বানাতে রাজি হয়নি। তাঁদের দাবি, ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি না করা পর্যন্ত তাঁরা কাজ করবে না। এ ব্যাপারে শ্রম দফতর এবং বন্দর প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েও সমাধান হচ্ছিল না।
সমস্যা কাটাতে এ দিন হলদিয়া বন্দরের প্রশাসনিক ম্যানেজার অমলকুমার দত্তের নেতৃত্বে বৈঠক হয়। ঠিকাদার সংস্থা সূত্রের খবর, বৈঠকে শ্রমিকেরা পুরানো হারে বেতন নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী হয়েছেন। সে জন্য সব শ্রমিকের গেট পাস তৈরি করতে এ দিনই সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন জানান হয়েছে বলে জানিয়েছেন গুজরাতের ঠিকাদার সংস্থার এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর কে প্রশান্ত।
আন্দোলনকারী তৃণমূল সমর্থিত শ্রমিক সংগঠনের সম্পাদক প্রদীপকুমার চক্রবর্তী এ ব্যাপারে বলেন, ‘‘এখনই বেতন বৃদ্ধি নিয়ে দাবি জোরাল করছি না। খুব তাড়াতাড়ি কাজ শুরু করতে চাই।’’ কনভেয়ার বেল্ট নিয়ে সমস্যা কিছুটা হলেও দূর হওয়ায় খুশি বিজেপি সমর্থিত ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ। সংগঠনের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদীপকুমার বিজলির বক্তব্য, ‘‘ঠিকাদার সংস্থার সঙ্গে বৈঠকে ছিলাম। শ্রমিকেরা কাজে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন। আশা করি রবিবারের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’’
বৈঠকের ব্যাপারে বন্দরের প্রশাসনিক ম্যানেজার অমল দত্ত বলেন, ‘‘ঠিকাদারি সংস্থা ও শ্রমিকদের মধ্যে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। বৈঠকে তার সমাধান হয়েছে।’’