সিপিএমের সভায় উদয় মণ্ডল (চিহ্নিত)। নিজস্ব চিত্র।
ভর দুপুরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিধানসভা এলাকায় কর্মসূচি বাম নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের। নন্দীগ্রামের সেই সভায় দেখা গেল তৃণমূলের ব্লক কমিটির নেতাকে! সেই ঘটনা নিয়ে সমাজ মাধ্যমে শুরু হয়েছে শোরগোল।
মঙ্গলবার নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের ঘোলপুকুরে সিপিএমের তরফে একটি সভার আয়োজন করা হয়। পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে ওই সভায় মীনাক্ষী ছাড়াও সিপিএমের স্থানীয় নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন। সিপিএম নেতাকর্মীদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতির মধ্যেই দর্শকদের জন্য বরাদ্দ একটি চেয়ারে বসে থাকতে দেখা যায় তৃণমূলের সদ্য গঠিত ব্লক কমিটির সদস্য উদয় মণ্ডলকে। বুধবার সমাজ মাধ্যমে তৃণমূল কর্মীদের একাংশ তা পোস্ট করা সমালোচনা শুরু করেছেন। একটি ভিডিয়োতে (যার সত্যতা আনন্দবাজার পত্রিকা যাচাই করেনি) দেখা গিয়েছে, উদয় কখনও চেয়ারে বসে মনযোগ দিয়ে বক্তব্য শুনছেন, কখনও জনসভায় উপস্থিত সিপিএম কর্মীদের সঙ্গে কথা বলছেন। এই ভিডিয়ো সামনে আসার পরে সমাজ মাধ্যমে তৃণমূল কর্মীদের একাংশের প্রশ্ন, দলের নীতি আদর্শ এমন ভাবে জলে দিয়েছেন যাঁরা, তাঁরা কমিটিতে রাখা হয়েছে কেন? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল কর্মীর কথায়, ‘‘২০২১ সাল অবধিও যে সমস্ত মানুষদের দলের ধারে কাছেও দেখা যাননি, এখন তাঁরাই নেতা হয়ে যাচ্ছেন। এই উদয় মণ্ডলকে আমরা কখনও সিপিএম, আবার কখনও বিজেপি করতে দেখেছি। তাঁরাই রাতারাতি আমাদের নেতা হয়ে বসছেন! ওঁর বাবা কিছুদিন আগে একটি সমবায় নির্বাচনে আমাদের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সিপিএমের হয়ে।"
উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগেই তৃণমূলের নন্দীগ্রাম-১ ব্লক অফিস থেকে নন্দীগ্রামের দু’টি ব্লকের কমিটি ঘোষণা করা হয়। নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের নব্য গঠিত কমিটিতে এগজ়িকিউটিভ মেম্বার হিসাবে উদয়ের নাম ঘোষণা করা হয়। তাঁকে বাম নেত্রীর সভায় দেখা যাওয়া প্রসঙ্গে নন্দীগ্রাম-২ পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ পরিতোষ জানা বলেন, ‘‘কর্মীদের ক্ষোভকে অন্যায্য বলা যায় না। এতদিন দল করছি, ওই ব্যক্তিকে দলের কোনও কর্মসূচিতে দেখেছি বলে তো মনে করতে পারছি না। নেতা হতে গেলে দলের জন্য কিছু তো অবদান থাকতে হবে। দলে কোনও উল্লেখ যোগ্য ভূমিকাও ওঁর নেই।’’
কিন্তু কেন তিনি গিয়েছিলেন মীনাক্ষীর সভায়? এ ব্যাপারে জানতে উদয়কে ফোন করা হয়। তবে বিতর্ক সামনে আসতেই দিনভর তাঁর মোবাইল বন্ধ ছিল। নন্দীগ্রাম-২ ব্লক সভাপতি অরুনাভ ভুঁইয়া বলেন, "ওই সভায় উপস্থিত থাকা নিয়ে উদয়ের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। উদয় আমাকে জানিয়েছেন, তাঁর এক শিক্ষক ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন। তাঁর সঙ্গে দেখা করার বিশেষ প্রয়োজন ছিল বলেই ওখানে গিয়েছিলেন।’’