আহত দুই ছাত্রী। নিজস্ব চিত্র
একবার নয়, দু’বার নয়, তিন-তিন বার! কাঁথি-১ ব্লকের নয়াপুটের একটি স্কুলে এই নিয়ে তৃতীয় বারের মতো ক্লাস চলাকালীন ছাত্রীদের মাথায় ভেঙে পড়ল ছাদের চাঙড়। তাতে গুরুতর আহত হল দশম শ্রেণির দুই পড়ুয়া। মঙ্গলবার নয়াপুট সুধীরকুমার হাইস্কুলে ওই ঘটনা ঘটেছে।
স্কুল সূত্রের খবর, এ দিন স্কুলের গুরুভবনের দোতালার একটি অংশে দশম শ্রেণির ক্লাস চলছিল। সে সময় সুদীপা প্রামাণিক এবং আশা জানা নামে দুই পড়ুয়ার মাথায় হঠাৎ করে ভেঙে পড়ে চাঙড়। আহত দুই ছাত্রীকে নয়াপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সুদীপার কানে দু’টি সেলাই পড়েছে। আশার কাঁধে গুরুতর আঘাত লাগে। ঘটনার খবর পেয়ে বিদ্যালয় পরিদর্শনে আসেন স্থানীয় নয়াপুট-৭ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান অসিত গিরি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই স্কুলের ওই ভবনটি সবচেয়ে পুরনো। সেটি ১৯৪৭ সালে তৈরি হয়েছিল। এর আগেও ওই ভবনে চাঙড় ভেঙে পড়েছে। গত বছর জুলাইয়ে একই রকম ভাবে চাঙড় খসে পড়ায় ষষ্ঠ শ্রেণির দুই ছাত্র আহত হয়েছিল। ২০১২ সালের অক্টোবরেও স্কুলের টিফিনের বিরতিতে এমন ঘটনা ঘটে। একাধিকবার এমন ঘটনা ঘটায় স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং পরিচালন কমিটি ওই ভবনটিকে ‘ড্যামেজ বিল্ডিং’ হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন।
মঙ্গলবারের ঘটনার পর, প্রশ্ন উঠেছে, ‘ড্যামেজ বিল্ডিং’ ঘোষণার পরেও সেখানে কেন ক্লাস নেওয়া হচ্ছিল? এ ব্যাপারে স্কুলের তরফে স্থানাভাবকেই দায়ী করা হয়েছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক বসন্ত ঘোড়ই বলেন, “বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে, ওই ভবনে ক্লাস করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। আমরা ইতিমধ্যে পুরো বিষয় জানিয়ে জেলাশাসক থেকে বিডিও, সবাইকে চিঠি দিয়েছিলাম। মঙ্গলবারের ঘটনার পরেও, ফের বিডিও, এডিআই এবং ডিআই-কে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।’’
ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, আজ, বুধবার ইঞ্জিনিয়ার ও ব্লকের আধিকারিকদের এক প্রতিনিধি দল এই বিদ্যালয় পরিদর্শনে যাবেন। তারা সেই পুরনো ভবন পরিদর্শনের পর বিডিও’কে রিপোর্ট দেবেন। তাদের মতে ওই বিল্ডিং ব্যবহার অযোগ্য হলে সেখানে ক্লাস নেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে।
স্কুলের বেহাল দশা নিয়ে কাঁথি-১ এর বিডিও লিপন তালুকদার বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে ব্লক প্রশাসন থেকে স্কুল শিক্ষা দফতরকে আমরা এই স্কুলের অনুমাদের ব্যাপারে জানিয়েছিলাম। অ দিনের ঘটনার পর ফের শিক্ষা দফতর এবং জেলাশাসককে জানান হল। গত এক মাসে এই ব্লকের ১৪টি স্কুলের জন্য অনুদান এসেছে। আশা করছি এরপর ওই বিদ্যালয়ের জন্য অনুদান আসতে পারে।’’